শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১

রাজবাড়ীতে লালিম চাষে কৃষক গফুর কাজীর সাফল্য!

রাজবাড়ীতে লালিম চাষে কৃষক গফুর কাজীর সাফল্য!

রাজবাড়ীতে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে লালিম চাষ। ফলটি দেখতে বাঙ্গির মাতো হলেও এর গন্ধ ও স্বাদ বাঙ্গির তুলনায় অনেক বেশি। এই জেলার অধিকাংশ কৃষক এই ফলটির চাষ করছেন। তেমনি লালিম চাষে অভাবনীয় সফলতা পেয়েছেন কৃষক গফুর কাজী। ফলন ভাল পাওয়ায় এলাকায় বেশ সাড়া ফেলেছেন তিনি। বাজারে বিক্রি করেও তিনি লাভবান হতে পারছেন।

জানা যায়, কৃষক গফুর কাজী জেলা সদরের শহীদ ওহাবপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা। তিনি এবছর ১০ শতাংশ জমিতে লালিমের চাষ করে সফলতা পেয়েছেন। চারা রোপনের দেড় মাসেই ফলন পাওয়ায় এলাকায় বেশ সাড়া পড়ে যায়। এখন গফুরের ক্ষেতে এখন শোভা পাচ্ছে কাঁচা-পাকা সবুজ হলুদ রঙের লালিম। এটি দেখতে বাঙ্গির মতো হলেও এর স্বাদ ও রাসালো ভাব বাঙ্গির থেকেই বেশি। ফলে এই জেলার কৃষকরা এর চাষে ঝুঁকছেন। তিনি ইতোমধ্যে ৩০ হাজার টাকার ফল বিক্রিও করেছেন।

জেলা কৃষি অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর রাজবাড়ী জেলায় ৫৮ হেক্টর জমিতে বাঙ্গি ও লালিমের চাষাবাদ করা হয়। এতে কৃষকরা হেক্টরপ্রতি ১৮ মেট্রিক টনের বেশি ফলন পেয়েছেন। এই জেলায় ১ হাজার ৬৭ মেট্রিক টন বাঙ্গি ও লালিমের ফলনের আশা করা যাচ্ছে। বর্তমান বাজারমূল্যে যার দাম প্রায় ৫ কোটি টাকার বেশি।

লালিম চাষি আব্দুল গফুর কাজী বলেন, আমি ছোটবেলা থেকেই কৃষি কাজের সাথে জড়িত। এর আগে আমি ধান,পাট,গম,পেঁয়াজ,রসুন, ড্রাগস ফল,মাল্টাসহ নানা ধরনের শাক-সবজি ও ফসলের চাষাবাদ করছি। চলতি বছর ফরিদপুর কৃষি গবেষণা বিভাগ থেকে লালিমার বীজ এনে আমার ১০ শতাংশ জমিতে চাষ শুরু করি।

তিনি আরো বলেন, বৈশাখ মাসে এর চারা রোপন করেছিলাম। মাত্র দেড় মাসেই গাছে ফল ধরেছে। গাছের একেকটি লালিমের ওজন দেড় থেকে ৩ কেজি পর্যন্ত হয়েছে। স্থানীয় বাজারে আকারভেদে প্রতিটি লালিমা ৩০-১০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা যাচ্ছে।

গফুর কাজী আরো বলেন, লালিমার ফলন খুব অল্প সময়েই পাওয়া যায়। আর বাজারে এর বেশ চাহিদাও রয়েছে। আমার প্রতি শতাংশ জমিতে ৫০টি করে লালিমা ধরেছে। এর চাষে আমার ৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ইতোমধ্যে ৩০ হাজার টাকার লালিমা বিক্রি করেছি। আরো বিক্রি করতে পারবো।

জমিতে লালিম কিনতে আসা মো. রমজান খান বলেন, আমি গফুর কাজীর জমির লালিম খেয়ে দেখেছি। এটি খেতে খুব মিষ্টি ও রসালো। আরো কয়েকটি কিনে বাড়ির জন্য নিয়ে যাচ্ছি।

স্থানীয় আরেক কৃষক আলম শেখ বলেন, কৃষক গফুর কাজী লালিমের চাষ করে বেশি ফলন ও বাজারে ভাল দামে বিক্রি করে লাভ করতে পারছেন। আমরাও আগামীতে এর চাষ করবো।

রাজবাড়ী সদর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. জনি খান বলেন, চলতি বছর রাজবাড়ী জেলা সদর সহ সবগুলো উপজেলা মিলে ৫৮ হেক্টর জমিতে বাঙ্গি ও লালিমের চাষাবাদ হয়েছে। কৃষকরা এর চাষে লাভবান হতে পারছেন বলে দিন দিন এ রচাষ জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। এর চাষ আরো বৃদ্ধি করতে আমরা কৃষকদের সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা করবো।

দৈনিক বগুড়া

সর্বশেষ: