মানুষের বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা হওয়া নতুন কিছু নয়। কোনো শারীরিক সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হয়, আবার কোনো সমস্যা ক্ষণিকের জন্য হলেও বেশ কষ্টদায়ক হয়। এর মধ্যে ঘাড়ে ব্যথা অন্যতম। যা বেশ যন্ত্রণাদায়ক।
ঘুম থেকে উঠে হঠাৎ করেই ঘাড়ের একপাশে প্রচণ্ড ব্যথা, কিংবা কাজ করতে করতে হঠাৎই ঘাড়ের একদিকে প্রবল টান, কিছুতেই ঘাড় ঘোরানো যাচ্ছে না ইত্যাদি সমস্যায় অনেকেই পড়েছেন। এর কারণ অনেক কিছুই হতে পারে। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক কী কী কারণে ঘাড়ে ব্যথা হতে পারে-
স্লিপ ডিস্ক হলে
কোনো কারণে স্পাইনাল কর্ডের মধ্যে কোনো টিস্যু ফুলে গেলে স্লিপ ডিস্ক হতে পারে। সেখান থেকে ঘাড়ে ব্যথা হয়।
আঘাত পেলে
কোনো দুর্ঘটনায় ঘাড়ে আঘাত পেলে সেই ব্যথা বহুদিন স্থায়ী হয়। মাঝে মধ্যেই তখন পেশীতে টান গেলে ব্যথা হতে পারে।
পেশী দুর্বল হলে
দীর্ঘক্ষণ একভাবে একজায়গায় বসে থাকলে পেশীতে খিল ধরে এবং ঘাড়ে ও কাঁধে ব্যথা হয়। এই একভাবে বসে থাকতে গিয়ে আচমকা টান লেগেও ব্যথা হতে পারে।
ঘাড়ের টিস্যুর ক্ষয়
বয়স হলে ঘাড়ের টিস্যুর ক্ষয় হয়। এছাড়াও যারা দীর্ঘদিন ধরে ল্যাপটপের সামনে বসে কাজ করছেন তাদেরও এই সমস্যা হতে পারে। এর ফলে ঘাড়ের মধ্যেকার হাড়ে ফাঁক থেকে যায়। যেখান থেকে ব্যথা হতে পারে।
বসায় ত্রুটি হলে
বসার ভঙ্গীতে ত্রুটি থাকলে ঘাড়ে ব্যথা হতে পারে। এছাড়াও বাঁকাভাবে শুয়ে থাকলে ঘাড়ে চাপ পড়ে, সেখান থেকেও ঘাড়ে ব্যথা হতে পারে। সেই ব্যথা হলে অন্যদিকে ঘাড় ঘোরানো অসম্ভব হয়ে পড়ে।
এ সময়ে যা করবেন
>> সেলুনে কখনোই ঘাড় মটকাবেন না।
>> মাথার ওপর কোনো ধরনের ওজন নেবেন না।
>> কম্পিউটারে কাজ করার সময় মনিটর চোখের লেভেলে রাখবেন।
>> ঘাড়ের ব্যথা বেশি থাকলে গাড়ি চালানো, ভারী কাজ করবেন না। হিতে বিপরীত হবে।
>> দীর্ঘক্ষণ কম্পিউটার ও সেলাই মেশিন ব্যবহারে সামনের দিকে ঝুঁকে কাজ করবেন না।
>> তীব্র ব্যথা কমে গেলেও ঘাড় নিচু বা উঁচু করা, মোচড়ানো (টুইস্টিং) এসব অভ্যাস করা যাবে না।
>> শোবার সময় একটা মধ্যম সাইজের বালিশ ব্যবহার করবেন, যার অর্ধেকটুকু মাথা ও অর্ধেকটুকু ঘাড়ের নিচে দেবেন।
>> কাত হয়ে বা অস্বাভাবিক অবস্থানে থেকে দীর্ঘক্ষণ বই পড়বেন না বা টেলিভিশন দেখবেন না বা মোবাইল ফোন ব্যবহার করবেন না।
>> মানসিক অবসাদ, দুশ্চিন্তা থেকেও ঘাড়ের ব্যথা আসে। তাই চাপ বেশি থাকলে আগে তা কমানোর চেষ্টা করুন। সেই সঙ্গে ঘরের বাইরে বেশি সময় কাটিয়ে নিজেকে চিন্তামুক্ত রাখুন।
সবশেষে, একটানা ব্যথা থাকলে চিকিৎসকের কাছে যান। পরামর্শ মতো ওষুধ খান। খুব প্রয়োজন না হলে শিরদাঁড়ায় ইঞ্জেকশন নেবেন না।
দৈনিক বগুড়া