
অনেক এলাকায় লাশের খাট বহন করার সময় চল্লিশ কদম গণনা করার প্রথা প্রচলিত আছে। মৃত ব্যক্তির লাশ কবরস্থানে নেওয়ার সময় খাট কাঁধে নিয়ে চল্লিশ কদম গণনা করা, কাঁধ পরিবর্তন করা কি আবশ্যক। এ সম্পর্কে ইসলামের বিধানই বা কী?
হজরত আনাস বিন মালেক রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছে, যে ব্যক্তি মৃতের খাটের চারপাশ বহন করে, এর দ্বারা আল্লাহ তাআলা তার চল্লিশটি কবিরা গুনাহ মাফ করে দেন।' (আলমু’জামুল আওসাত ৫৯২০) যদিও এ হাদিসটি নিয়ে অনেকে মতভেদ করেছেন। তবে এতে যারা খাট বহন করবেন তাদের গুনাহ মাফের কথা বর্ণিত হয়েছে।
ফুক্বাহায়ে কেরাম উক্ত ফজিলত পাবার পদ্ধতি এই বলেছেন যে, মাইয়্যেতের খাটের চারপাশে দশ দশ কদম করে চলা। এর পদ্ধতি হলো-
১. প্রথমে মাইয়্যেতের ডান হাতের দিকের খা্টের পায়া নিজের ডান কাঁধে নিয়ে দশ কদম চলবে।
২. তারপর মাইয়্যেতের ডান পায়ের দিকের খাটের পায়া ডান কাঁধে নিয়ে দশ কদম চলবে।
৩. তারপর মাইয়্যেতের বাম হাতের দিকের খাটের পায়া নিজের বাম কাঁধে নিয়ে দশ কদম চলবে।
৪. তারপর মাইয়্যেতের বাম পায়ের দিকের খাটের পায়া নিজের বাম কাঁধে রেখে দশ কদম চলবে।
একথা মনে রাখতে হবে যে, এভাবে করা মুস্তাহাব। এটি একটি মুস্তাহাব আমল। উপরোক্ত পদ্ধতিতে জানাজার খাট নেওয়া মুস্তাহাব। যদি কোন ব্যক্তি দুর্বলতার কারণে অথবা অন্য কোনো কারণে তা না করে, কিংবা এরচেয়ে বেশি করে ফেলে, তাহলে এতে কোন সমস্যা নেই।
তবে কিছু এলাকার মানুষ এভাবে চল্লিশ কদম উঠানোকে জরুরী মনে করে, আবার অনেকে এর মাধ্যমে মৃতকে সওয়াব পৌঁছানো হয়, মনে করে। এ দু’টি বিষয়ই ভ্রান্ত কথা। তাই এহেন ধারণা থেকে মুক্ত থাকা জরুরী।
এর মাধ্যমে শুধুমাত্র যিনি চল্লিশ কদম যান, কেবল সেই খাট বহনকারী সওয়াবের অধিকারী হয়ে থাকেন। যেমনটি আমরা হাদীসের মাঝে পেয়েছি। দশ দশ করে ৪০ কদম হাটায় জানাজার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোনো নিয়ম নয়। এটি নিয়ে মতবিরোধ, দলাদলি, বাড়াবাড়ি করা মোটেই সমীচীন নয়।
দৈনিক বগুড়া