বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পরকালের শাস্তি দুনিয়াতে চাওয়া যাবে কি?

পরকালের শাস্তি দুনিয়াতে চাওয়া যাবে কি?

অনেকে পরকালে শাস্তিমুক্ত ও চিরস্থায়ী জান্নাত পাওয়ার বাসনা থেকে এমন দোয়া করে থাকেন যে, হে আল্লাহ! আপনি আমাকে পরকালের শাস্তি দুনিয়াতেই দিয়ে দিন। এভাবে পরকালের শাস্তি দুনিয়াতে কার্যকরের জন্য দোয়া করা যাবে কি? এ সম্পর্কে নবিজি কী বলেছেন?

না, এভাবে পরকালের শাস্তি দুনিয়াতে কামনা করা যাবে না। কেননা দুনিয়াতে বসে পরকালের শাস্তি বহনের ক্ষমতা বা সামর্থ্য কোনো মানুষের নেই। হাদিসের বর্ণনায় নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন এভাবে-

হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একজন মুসলিম রোগীকে সেবা করতে গেলেন। সে (অসুখে কাতর হয়ে) অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়েছিল। এমনকি সে পাখির ছানার মতো (দুর্বল ও ছোট) হয়ে গেলো। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বললেন-

هَلْ كُنْتَ تَدْعُو بِشَىْءٍ أَوْ تَسْأَلُهُ إِيَّاهُ‏ قَالَ نَعَمْ كُنْتُ أَقُولُ اللَّهُمَّ مَا كُنْتَ مُعَاقِبِي بِهِ فِي الآخِرَةِ فَعَجِّلْهُ لِي فِي الدُّنْيَا ‏.‏ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ سُبْحَانَ اللَّهِ لاَ تُطِيقُهُ - أَوْ لاَ تَسْتَطِيعُهُ

‘তুমি কি কোনো বিষয় (আল্লাহর কাছে) প্রার্থনা করছিলে অথবা আল্লাহর কাছে বিশেষভাবে কিছু চেয়েছিলে? সে বলল, ‘হ্যাঁ’। আমি বলেছিলাম- ‘হে আল্লাহ! আপনি পরকালে আমাকে যে শাস্তি দেবেন; তা এ দুনিয়াতেই দিয়ে দিন। সে সময় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, সুবহানাল্লাহ! তোমার এমন সামর্থ্য নেই যে, (তুমি) তা বহন করবে? অথবা তুমি তা সহ্য করতে পরবে না। (বরং) তুমি এমনটি বললে না কেন?

اللَّهُمَّ آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ

‘আল্লাহুম্মা আতিনা ফিদ দুনইয়া হাসানাতাও ওয়া ফিল আখিরাতি হাসানাতাও ওয়া ক্বিনা আজাবান-নার।’

হে আল্লাহ! আমাদের কল্যাণ দাও পৃথিবীতে এবং কল্যাণ দান করো পরকালেও। আর জাহান্নাম হতে আমাদেরকে রক্ষা করো। তিনি (রাবি) বলেন, তখন তিনি তার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করেন। আর আল্লাহ তাকে সুস্থ করে দেন। (মুসলিম ২৬৮৮, মেশকাত ২৫০২)

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, হাদিসের বিপরীতে দুনিয়াতে বসেই পরকালের শাস্তি ভোগ করার মতো দুঃসাহসিক প্রার্থনা থেকে বিরত থাকা। বরং দুনিয়া ও পরকালের কল্যাণের পাশাপাশি জাহান্নামের আগুণ থেকে ক্ষমা প্রার্থনা করা। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে হাদিসের ওপর আমল করার তাওফিক দান করুন। দুনিয়া ও পরকালের কল্যাণে দোয়া করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

দৈনিক বগুড়া