শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫, ২৬ আষাঢ় ১৪৩২

শুল্ক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বৈঠকে ‘গুরুত্বপূর্ণ সব বিষয়ে আলোচনা’

শুল্ক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বৈঠকে ‘গুরুত্বপূর্ণ সব বিষয়ে আলোচনা’

সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা ৩৫ শতাংশ শুল্ক কমাতে দেশটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে দ্বিতীয় ধাপের প্রথম দিনের বৈঠকে অংশ নিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। ওয়াশিংটন ডিসিতে বুধবার ওই বৈঠকে ‘দুই দেশের বাণিজ্য সম্পর্কের প্রায় সবগুলো বিষয়ে’ আলোচনা হয়েছে বলে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

সেখানে বলা হয়, “যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে তিন দিনের শুল্ক সংক্রান্ত আলোচনার দ্বিতীয় রাউন্ডের প্রথম দিনের বৈঠক কয়েক ঘণ্টা আগে শেষ হয়েছে। আলোচনাটি ছিল অত্যন্ত বিস্তৃত, যেখানে দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কের প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ দিক উঠে এসেছে।”

ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান এবং প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব ঢাকায় বসে ভার্চুয়ালি আলোচনায় যোগ দেন।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি, জ্বালানি, বাণিজ্য ও কপিরাইট সংক্রান্ত সংস্থাগুলোর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় আবারও বৈঠকে বসবে দুই পক্ষ। শুক্রবারও আলোচনা চলবে।

ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় বসার পর গত ২ এপ্রিল শতাধিক দেশের ওপর চড়া হারে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। বাংলাদেশের ওপর বাড়তি ৩৭ শতাংশ শুল্কের ঘোষণা আসে।

এ নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে সম্পূরক শুল্ক পুনর্বিবেচনা করতে ডনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি পাঠান বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনতে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা তুলে ধরে শুল্কারোপের সিদ্ধান্ত তিন মাস স্থগিত রাখার অনুরোধ করা হয় সেখানে।

বিভিন্ন দেশ থেকে অনুরোধ পেয়ে ট্রাম্প তার বাড়তি শুল্কের সিদ্ধান্ত তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন। এই তিন মাস সময় ট্রাম্প মূলত দিয়েছিলেন আলোচনার জন্য।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে এবং সংলাপের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ৬২৬টি পণ্যে শুল্ক ছাড়ের ঘোষণা দেওয়া হয় বাজেটে। এর মধ্যে ১১০টি পণ্যের আমদানি শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করা হয়।

তখনই দুই দেশের মধ্যে শুল্ক নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। সেই আলোচনার মধ্যেই গত সোমবার বাংলাদেশসহ ১৪টি দেশের ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন ট্রাম্প। প্রধান উপদেষ্টাকে চিঠি দিয়ে সব ধরনের বাংলাদেশি পণ্যে ৩৫ শতাংশ বাড়তি শুল্ক আরোপের কথা বলা হয়, যা কার্যকর হবে ১ অগাস্ট থেকে।

তাতে সবচেয়ে বড় ধাক্কা খাবে বাংলাদেশি তৈরি পোশাক খাত, কারণ যুক্তরাষ্ট্রই বাংলাদেশি পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দর-কষাকষিতে অগ্রগতি না হওয়ায় রপ্তানিকারকরা রয়েছেন উদ্বেগের মধ্যে।

যুক্তরাজ্য ও ভিয়েতনামের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে বাণিজ্য চুক্তি করেছে। ভারতের সঙ্গে চুক্তির বিষয়টিও মোটামুটি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। বাংলাদেশ সরকারকেও যত দ্রুত সম্ভব যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর তাগিদ দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে যে আলোচনা হচ্ছে, সে ব্যাপারে তিনি আশাবাদী।

মঙ্গলবার অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত ও সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, “এখন বৈঠকটা কিন্তু মোটামুটি পজিটিভ হবে। চিঠি একটা প্রেসিডেন্ট দিয়েছে। এখন ওয়ান টু ওয়ান নেগোশিয়েশন হবে।”

সূত্র: বিডি নিউজ ২৪

সর্বশেষ: