শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বগুড়ায় অটিস্টিক তরুণ-তরুণীর বিয়ে সম্পন্ন

বগুড়ায় অটিস্টিক তরুণ-তরুণীর বিয়ে সম্পন্ন

বগুড়ার টিএমএসএস অটিজম ও বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী স্কুল এবং পুনর্বাসন কেন্দ্রে গতকাল সোমবার দুপুরে এক ব্যতিক্রমী বিয়ের আয়োজন করা হয়। বর ইমদাদুল হক আর কনে সুমনা খাতুন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন (অটিস্টিক) তরুণ-তরুণী। তারা দু’জনই ওই পুনর্বাসন কেন্দ্রের বাসিন্দা এদিন বিকেলে জমকালো আয়োজনে তাদের বিয়ের প্রীতিভোজে আমন্ত্রিত ছিলেন ১ হাজারের বেশি অতিথি।

কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালে এই কেন্দ্র যাত্রা শুরু করে। তবে তারও এক বছর আগে এখানে ঠাই হয় অটিস্টিক ইমদাদুল হকের, তখন তার বয়স ১৮। তার বাড়ি বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার রায়নগর ইউনিয়নের পলাশবাড়ি গ্রামে। তার বাবা আবদুল জলিল পেশায় দিনমজুর। অন্যদিকে সুমনা খাতুন বগুড়া সদরের নুনগোলা ইউনিয়নের আশোকোলা গ্রামের দিনমজুর ইসলাম উদ্দিনের মেয়ে। ১৪ বছর বয়সে তার ঠাই হয় এই কেন্দ্রে। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন হওয়ায় হতদরিদ্র পরিবার তাদের একসময় বোঝা মনে করত।

পরে অটিজম স্কুলে পড়াশোনা করে এ দু’জন। কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সাঈদ যুবায়ের বলেন, তিন বছর আগেই এ দু’জনের মধ্যে এক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি নজরে এলে তিনি দু’জনকে বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। কথা বলেন উভয়ের পরিবারের সঙ্গে। কিন্তু সুমনার বয়স কম হওয়ায় বিয়ের জন্য অপেক্ষা করা হয় । এরমধ্যে করোনার সংক্রমণ শুরু হলে বিয়ে পিছিয়ে যায় । শেষে সবার মতামত নিয়ে সোমবার বিয়ের দিনক্ষণ চূড়ান্ত করা হয়। গতকাল উৎসবমুখর পরিবেশে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান হয়। এতে বর-কনে উভয় পরিবারের ২০ জন ছাড়াও ৫শ’ অতিথি উপস্থিত ছিলেন। অতিথিরা বর-কনেকেহলুদ মাখিয়ে দেন। গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানে অতিথিদের মিষ্টি, পিঠা ও পায়েস দিয়ে মিষ্টিমুখ করানো হয়। রাতের নৈশভোজে ছিল বিরিয়ানির আয়োজন। গতকাল দুপুরের দিকে বিয়ের আসরে আনা হয় বর-কনেকে । ১০ হাজার টাকা দেনমোহরে বিয়ে পড়ানো হয়। বিকেলে একই স্থানে বর ও কনের বিবাহোত্তর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সবাই এই নবদম্পত্তিকে দোয়া করেন । সেখানেই হয় প্রীতিভোজ অনুষ্ঠান। সেখানে সবার জন্য ছিল বগুড়ার ঐতিহ্যবাহী আলু ঘাঁটি ও দই। অতিথিদের জন্য ছিল মাংসের রেজালা।

দৈনিক বগুড়া