শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সরিষায় তৃপ্তি সারিয়াকান্দির কৃষকদের

সরিষায় তৃপ্তি সারিয়াকান্দির কৃষকদের

বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে এবার সরিষার ফসল ভালো হয়েছে। দামও ভালো বাজারে। আমণ ধান কাটার পর সরিষা লাগিয়ে জমি থেকে ভালো ফলন পাচ্ছেন কৃষকরা। এ অবস্থায় কৃষকরা সরিষার কালো দানাকে কালো মানিক বলেছেন। 

স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, এ এলকায় বন্যার পর চাষীরা ব্যাপক হারে আবাদ করেছেন সরিষার। রবি মৌসুমে এর ফসলে অনেকেই আগাম জাতের আমন ধান টাকার পর উন্নত মানের সরিষার বীজ বপন করেছেন। তবে ধান কাটার পর জমিতে সরিষা লাগিয়ে  ভালো ফলন পাওয়া যাচ্ছে। বপন থেকে মাত্র ৭৫ দিনের এ ফসলটিতে কোন প্রকার সেচ দিতে হয় না। বপনের সময় মাটির নিচে সামন্য পরিমাণ রাসায়নিক সার দেওয়ার পরেই ভালো ফলন পেয়ে থাকেন চাষীরা। এরই মধ্যে জমি থেকে সরিষা তোলা শুরু হয়েছে। তাতে বিঘায় চাষীরা ফলন পাচ্ছে ৪ থেকে ৫ মণ করে। আবহাওয়া ভালো থাকায় আশাজনক ফলন হয়েছে। বাজারে দামও ভালো। নতুন সরিষা প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে ১৮শ থেকে শুরু হয়ে ২১শ টাকা। 

ফুলবাড়ী ইউনিয়নের রামনগর গ্রামের চাষী বেলাল হোসেন বলেন, আমি ৬০ শতাংশ জমিতে বিআর ৪৯ জাতের ধান লাগিয়েছিলাম। ফসলটি কার্তিক মাসের প্রথম দিকে কর্তনের পর জমিতে বারি-১৪ জাতের সরিষা বপন করেছি। কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের পরামর্শক্রমে এ ফসলের ভালো ফলন আশা করছি। 

কামালপুর ইউনিয়নের বিবিরপাড়া গ্রামের চাষী মহসিন আলী বলেন, সরিষার আবাদ যথেষ্ট ভালো হয়েছে। আবহাওয়া ভলো থাকায় এ আবাদের ভালো ফলন আশা করছি। আমার ৪০ শতাংশ জমিতে সরিষার কালো দানা দেখে মনে হচ্ছে কালো মানিক ফলেছে আমার জমিতে। 

উপজেলা কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা কুদরত আলী বলেন, এ এলাকায় সরিষার আবাদের পরিমান বেড়েছে। গত বছর আবাদ হয়েছিল ২ হাজার ৫১০ হেক্টর জমিতে, এবার বেড়ে চাষ হয়েছে ২ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে। সরিষার আবাদে তিন ধরনের লাভ রয়েছে। একদিকে পাতা ও হলুদ ফুল মাটিতে পড়ে জমির উর্বরতা বৃদ্ধি পায় ও সরিষার ফুলের পাপড়ি থেকে মৌমাছি  মধু সংগ্রহ করে এছারাও অল্পপরিশ্রম, খরচ কম ফসলটি ঘরে তুলে কৃষকরা আর্থিকভাবে লাভবান হয়ে থাকেন। 

তিনি আরো বলেন, সবচেয়ে বেশি চাষ হয়েছে কামালপুর, নারচি ও কুতুবপুর ইউনিয়নে। এ ফসল ঘরে তুলে ইরি- ধানের আবাদ করতে পারবেন কৃষকরা। 

উপজেলা কৃষি অফিসার মো: আব্দুল হালিম বলেন,  ভোজ্য তেলের চাহিদা মেটাতে সরিষার আবাদ খুবই গুরুত্বপূর্ণ । আমন ধান কর্তন করে ভালোভাবে সরিষার আবাদ করা যায় তা অনেক কৃষকই জানেন না। তবে আমরা এই রবি ফসলটি বাড়াতে এ বছর প্রণোদনার সার, বীজ দিয়েছি। এ বছর চাষ বেড়েছে, আগামীতে আরো বেড়ে ভোজ্য তেলের চাহিদা মেটাতে এলাকার কৃষকরা  ভূমিকা রাখবেন।  

দৈনিক বগুড়া