বুধবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

বগুড়ায় মা ও দুই সন্তানের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি

বগুড়ায় মা ও দুই সন্তানের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি

সংগৃহীত

বগুড়ার শাজাহানপুরে মা ও দুই সন্তানের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি। নিহত গৃহবধূর পরিবারের সদস্যদের দাবি, স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করতে চাইলেও পুলিশ মামলা নিচ্ছে না।

নিহত সাদিয়া মুস্তারিমের (২৮) বাবা শাজাহানপুরের ভান্ডারপাইকার গ্রামের মোফাজ্জল হোসেন অভিযোগ করেন, তাঁর জামাতা সেনাসদস্য শাহাদত হোসেন বাড়ি কেনার নাম করে দুই দফায় চার লাখ টাকা নিয়েছেন। কয়েক দিন আগে মোটরসাইকেল কেনার পর বাবার বাড়ি থেকে টাকা আনতে সাদিয়াকে চাপ দেন। যৌতুকের টাকা না পেয়ে পরিকল্পিতভাবে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে হত্যা করেছেন বলে বাবার অভিযোগ।

মোফাজ্জলের চাচাতো ভাই জাহাঙ্গীর আলমের ভাষ্য, দাম্পত্য জীবনে সাদিয়া সুখী ছিলেন না। গত সোমবার রাতে কোনো এক সময় সাদিয়া ও দুই শিশুকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়। ঘটনার সময় শাহাদত বাড়িতেই ছিলেন, কিন্তু পরদিন সকাল ১০টা পর্যন্ত তিনি মৃত্যুর ঘটনা গোপন রাখেন।

জাহাঙ্গীর আলমের অভিযোগ, ‘আমরা শুরু থেকেই বলছি, এটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। আমরা হত্যা মামলা করতে চাই, কিন্তু পুলিশ মামলা নিতে গড়িমসি করছে। মঙ্গলবার রাতে ওসি সাদিয়ার বাবাকে থানায় ডেকে নেন। আমরা শাহাদতকে আসামি করে হত্যা মামলা দিতে চাইলে ওসি অপমৃত্যু মামলা দেওয়ার জন্য চাপ দেন। পুলিশ প্রভাবিত হয়েছে বুঝতে পেরে আমরা কৌশলে থানা থেকে বের হয়ে আসি। পারিবারিকভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে—হত্যা মামলা দেওয়া হবে।’

শাজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, দুই শিশুকে গলা কেটে হত্যা এবং গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের ঘটনায় দুটি মামলা হবে—একটি হত্যা, অন্যটি অপমৃত্যু মামলা। গৃহবধূর ফাঁস লাগানো লাশ উদ্ধারের ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা হবে, যার বাদী হবেন তাঁর স্বজনেরা। আর দুই শিশুকে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় আলাদা হত্যা মামলা হবে, যার বাদী হবেন শিশু দুটির বাবার পরিবারের কেউ।

মামলা না নেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে ওসি বলেন, যেহেতু গৃহবধূর লাশ ফাঁস লাগানো অবস্থায় উদ্ধার হয়েছে, সেহেতু প্রথমে অপমৃত্যু মামলা হবে। ময়নাতদন্তে হত্যার আলামত মিললে আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে মামলাটি পরে হত্যা মামলা হিসেবে রূপান্তরিত হবে।

গত মঙ্গলবার সকাল নয়টার দিকে খলিশাকান্দি গ্রামের নিজ বাড়ির শয়নকক্ষ থেকে সাদিয়ার ঝুলন্ত লাশ এবং দুই শিশুর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়। সাদিয়ার তিন বছরের মেয়ে সাইফা ও সাত মাসের ছেলে সাইফের লাশ বিছানায় পড়ে ছিল।

সর্বশেষ: