বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫, ১১ আষাঢ় ১৪৩২

একাধিক মসজিদের আজান শুনলে কীভাবে উত্তর দিতে হয়?

একাধিক মসজিদের আজান শুনলে কীভাবে উত্তর দিতে হয়?

সংগৃহীত

মসজিদের শহর ঢাকা। আর এ শহরে এক মসজিদ থেকে অন্য মসজিদের দূরত্ব কম হয়। ফলে একই বাসা থেকে একাধিক মসজিদের আজান শোনা যায়।

এখন প্রশ্ন হলো, যে ব্যক্তি একাধিক মসজিদের আজান শোনেন তিনি কীভাবে আজানের উত্তর দেবেন? ব্যক্তি যেকোনো একটি মসজিদের আজানের উত্তর দেবে, নাকি সে সবগুলো মসজিদের আজানের উত্তর দেবে?

ইসলামি আইনজ্ঞ আলেমরা বলেন, আজানের উত্তর দেওয়া সুন্নতে মুয়াক্কাদা। কেউ কেউ এটাকে ওয়াজিবও বলেছেন।

কেননা রাসূলুল্লাহ সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নির্দেশসূচক বাক্য ব্যবহার করে বলেছেন, ‘যখন তোমরা আজান শুনতে পাও, তখন মুয়াজ্জিন যা বলে তোমরাও তা বলো। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬১১)

আজানের জবাব দেওয়ার পদ্ধতি

আজানের জবাব দেওয়ার পদ্ধতি হলো, মুয়াজ্জিন প্রত্যেকটি বাক্য বলে থামার পর শ্রোতা ওই বাক্যটি নিজেও অনুরূপভাবে বলবে। কিন্তু মুয়াজ্জিন ‘হাইয়্যা আলাস সালাহ’ ও ‘হাইয়্যা আলাল ফালাহ’ বলার সময় শ্রোতা ‘লা হাওলা ওয়া লা কুউওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ বলবে। এটাই বিশুদ্ধ অভিমত। (মুসলিম, হাদিস : ৩৮৫)

তবে কোনো কোনো বর্ণনায় ‘হাইয়্যা আলাস সালাহ’ ও ‘হাইয়্যা আলাল ফালাহ’ বলার সময়ও মুয়াজ্জিনের অনুরূপ বলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। (কিতাবুদ দোয়া, তাবারানি, হাদিস: ৪৫৮)

যদি কেউ একাধিক মসজিদের আজান শোনে যার একটি শেষ হওয়ার পর আরেকটি শুরু হয়, তবে সে প্রথম মসজিদের আজানের উত্তর দিলে দায়মুক্ত হয়ে যাবে। আর যদি সব মসজিদের আজান একই সঙ্গে শুরু হয়, তবে সে নিকটবর্তী মসজিদ বা নিজ মহল্লার মসজিদের আজানের উত্তর দিলে দায়মুক্ত হয়ে যাবে। তবে উভয় অবস্থায় একাধিক মসজিদের আজানের উত্তর দেওয়ার অবকাশ আছে।

ব্যক্তি যতবার আজানের উত্তর দেবে, ততবারই সওয়াব লাভ করবে। এ জন্য আলেমরা একাধিক আজানের উত্তর দেওয়াকে মুস্তাহাব বলেন। শায়খ আলিশ (রহ.) বলেন, যখন একসঙ্গে একদল মুয়াজ্জিন একের পর এক আজান দেয়, তখন প্রথম আজানের উত্তরই ব্যক্তির জন্য যথেষ্ট হবে। (মানহুল জলিল : ১/২০২)

আল্লামা মাওয়ার্দি (রহ.) বলেন, দ্বিতীয় ও তৃতীয় মুয়াজ্জিনের আজানের উত্তর দেওয়া বৈধ; বরং এটা মুস্তাহাব। (আল-ইনসাফ : ১/৪২৬)

আল্লামা ইবনে তাইমিয়া (রহ.) বলেন, ‘ব্যক্তি দ্বিতীয় বা তার পরবর্তী মুয়াজ্জিনের উত্তর দেবে। কেননা তা মুস্তাহাব। নবীজি (সা.) এর যুগের আমলও অনুরূপ ছিল। এ ছাড়া রাসূলুল্লাহ (সা.) নির্দিষ্ট না করেই বলেছেন, যখন তোমরা আজান শুনতে পাও, তখন মুয়াজ্জিন যা বলে তোমরাও তা বলো। (আল-ফাতাওয়া আল-কুবরা : ৫/৩২৪)

সূত্র: ডেইলি বাংলাদেশ

সর্বশেষ: