শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১

সেজদায় হাত থাকবে যেভাবে

সেজদায় হাত থাকবে যেভাবে

সংগৃহীত

নামাজের সেজদায় পুরুষের জন্য উভয় হাতের তালু জমিনে রেখে বাহু জমিন থেকে উঁচু করে রাখা সুন্নত। এছাড়াও হাঁটু ও উরু থেকে কনুই পৃথক রাখা এবং বাহু পার্শ্বদেশ থেকে থেকে আলাদা রাখা সুন্নত। কোনো ওজর ছাড়া এর খেলাফ করা সুন্নত পরিপন্থী।

হাদিস শরিফে এসেছে, আবু হুমাইদ (রা.) বলেন― أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ إِذَا سَجَدَ أَمْكَنَ أَنْفَه وَجَبْهَتَه مِنَ الأَرْضِ، وَنَحَّى يَدَيْهِ عَنْ جَنْبَيْهِ ‘নবী (স.) যখন সেজদা করতেন তখন নাক ও কপাল জমিনের ওপর রাখতেন এবং উভয় পার্শ্বদেশ থেকে দুই হাত পৃথক করে রাখতেন। (জামে তিরমিজি: ২৭০)

অপর একটি হাদিসে আবদুল্লাহ বিন মালিক বিন বুহাইনা (রা.) বলেন― أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ إِذَا صَلَّى فَرَجَ بَيْنَ يَدَيْهِ، حَتَّى يَبْدُوَ بَيَاضُ إِبْطَيْهِ ‘নবী (স.) যখন নামাজ পড়তেন তখন (সেজদার সময়) দুই হাত এমনভাবে পৃথক করে রাখতেন যে, তার বগলের শুভ্রতা স্পষ্ট হয়ে উঠত। (সহিহ বুখারি: ৮০৭)

কোনো ওজর ছাড়া জমিনে হাত বিছিয়ে দেওয়া মাকরুহে তাহরিমি। হাদিসে এ ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা এসেছে। নবী (স.) বলেন― اعْتَدِلُوا فِي السُّجُودِ، وَلاَ يَبْسُطْ أَحَدُكُمْ ذِرَاعَيْهِ انْبِسَاطَ الكَلْبِ ‘তোমরা সেজদায় ‘ইতিদাল’ অবলম্বন করবে। (অর্থাৎ অঙ্গ প্রত্যঙ্গের সামঞ্জস্য রক্ষা করবে) আর কেউ যেন সেজদায় কুকুরের ন্যায় তার উভয় বাহু বিছিয়ে না দেয়। (সহিহ বুখারি: ৮২২)

আরেক হাদিসে এসেছে, নবী (স.) বলেন― إِذَا سَجَدْتَ، فَضَعْ كَفَّيْكَ وَارْفَعْ مِرْفَقَيْكَ ‘যখন তুমি সেজদা করবে তখন তোমার উভয় হাতের তালু জমিনে রাখবে, আর উভয় কনুই (জমিন থেকে) উঠিয়ে রাখবে। (সহিহ মুসলিম: ৪৯৪)

সেজদার পদ্ধতি নারীদের জন্য ভিন্ন। নারীরা কনুইদ্বয় জমিনের সঙ্গে মিশিয়ে রাখবে এবং উরুদ্বয় পেটের সাথে মিলিয়ে খুব জড়সড় হয়ে সেজদা করবে। হাদিসে এসেছে, ইয়াজিদ ইবনে আবি হাবিব (রহ) বলেন― أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَرَّ عَلَى امْرَأَتَيْنِ تُصَلِّيَانِ فَقَالَ:إِذَا سَجَدْتُمَا فَضُمَّا بَعْضَ اللَّحْمِ إِلَى الْأَرْضِ، فَإِنَّ الْمَرْأَةَ لَيْسَتْ فِي ذَلِكَ كَالرَّجُلِ ‘একবার রাসুলুল্লাহ (স.) নামাজরত দুই মহিলার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তাদেরকে বললেন, যখন তোমরা সেজদা করবে তখন শরীর জমিনের সঙ্গে মিলিয়ে দেবে। কেননা মহিলারা এক্ষেত্রে পুরুষের মতো নয়। (মারাসিলে আবু দাউদ: ৮৭)

উল্লেখ্য, সেজদায় যাওয়ার সময় সর্বপ্রথম হাঁটু, এরপর ক্রমান্বয়ে হাত, নাক ও কপাল জমিনে রাখা হবে। সেজদা থেকে উঠার মুহূর্তে সর্বপ্রথম উঠবে কপাল, এরপর উভয় হাত এবং এরপর হাঁটু। ওয়াইল ইবনে হুজর (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (স.) সেজদায় যাওয়ার সময় আমি তাঁকে হাতের পূর্বে হাঁটু রাখতে এবং সেজদা থেকে উঠার সময় হাঁটুর পূর্বে হাত জমিন থেকে উঠাতে দেখেছি। (সুনানে আবু দাউদ: ১/১২২)

(কিতাবুল আছল: ১/৯; বাদায়েউস সানায়ে: ১/৪৯৪; আলমুহিতুল বুরহানি: ২/১৩৮; ফাতহুল কাদির: ১/২৬৬; ফাতোয়ায়ে হিন্দিয়া: ১/৭৫; রদ্দুল মুহতার: ১/৬৪৪)

সূত্র: Dhaka Mail

সর্বশেষ: