রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

চোখের ড্রপে গলা তিতা হলে রোজার ক্ষতি হবে?

চোখের ড্রপে গলা তিতা হলে রোজার ক্ষতি হবে?

সংগৃহীত

রোজায় শুধুমাত্র নাকে ড্রপ দেওয়া যায় না। রোজা রেখে নাকে ড্রপ দিলে তা সরাসরি পাকস্থলীতে পৌঁছে যায় বিধায় রোজা ভেঙে যায়। কিন্তু চোখ ও কানে ড্রপ দিলে কোনো অসুবিধা নেই। ড্রপের তিক্ত স্বাদ গলায় গেলেও রোজার ক্ষতি হবে না।

বিন উসাইমিন বলেন, ইবনে তাইমিয়ার অভিমত হচ্ছে—সুরমা লাগানো রোজাকে নষ্ট করে না। এমনকি সুরমার স্বাদ যদি গলায় পৌঁছে যায় তবুও। যেহেতু এটি পানাহারের স্থলাভিষিক্ত নয়। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে, রাসুল (স.) রোজা অবস্থায় চোখে সুরমা ব্যবহার করেছেন। (ইবনে মাজাহ: ১৬৮৭)

তাই কেউ যদি রোজা রেখে তার চোখে ড্রপ দেয় এবং গলার ভেতরে এর স্বাদ পায়, এ কারণে তার রোজা ভাঙ্গবে না। (আল-শারহুল মুমতি: ৬/৩৮২) আন্তর্জাতিক ফিকহ একাডেমি জিদ্দার সিদ্ধান্তও অনুরূপ। (মাজাল্লাতু মাজমাউল ফিকহিল ইসলামি: সংখ্যা ১০)

কানে ড্রপ দিলেও রোজা ভাঙে না। কানের মাধ্যমে কোনোকিছু সাধারণত গলায় পৌঁছে না। পূর্ববর্তী ফকিহদের অভিমত ছিল, কানে কোনোকিছু ব্যবহার করলে রোজা ভেঙে যাবে। এ বিষয়ে চার মাজহাবই একমত। ইমাম কাসানি (রহ.) বলেছেন ‘যদি কানের মাঝে তেল বা ভিন্ন কিছু ব্যবহার করে তারপর তা পেটে বা মাথায় পৌঁছে যায় তার মাধ্যমে রোজা ভেঙে যাবে।’ (বাদায়েউস সানায়ে: ২/৯৩)

তাদের এই ধারণার ভিত্তি ছিল যে, কান ও গলার মাঝে সরাসরি কোনো সংযোগ আছে। কিন্তু আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান প্রমাণ করেছে, কান ও গলার মাঝে এমন সরাসরি কোনো সংযোগ নেই। এ বিষয়ে মুফতি রফি উসমানী (হাফি) তার বিখ্যাত গ্রন্থ, ‘মুফতিরাতুস সাওম ফি মাজালিত তাদাওয়ি’-তে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের অভিমত সবিস্তারে তুলে ধরেছেন। তাই এ কথা বলা যায় যে, রোজা অবস্থায় কানের ড্রপ ব্যবহার করা যাবে। (মুফতিরাতুস সাওম ফি মাজালিত তাদাওয়ি, মুফতিরাতুত তিব্বিয়াহ আল মুআসিরাহ)

তবে, এরপরও রোজায় দিনের বেলা চোখে-কানে ড্রপ ব্যবহার করতে নিরুৎসাহিত করেন ইসলামিক স্কলাররা। সুতরাং যথাসম্ভব ড্রপ এড়িয়ে চলা সাবধানতা হিসেবে উত্তম হবে। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে রমজানের রোজার যাবতীয় হুকুম আহকাম জানার, বুঝার এবং মেনে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন।

সূত্র: Dhaka Mail