শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

পাওনা টাকার জাকাত দিতে হবে কি?

পাওনা টাকার জাকাত দিতে হবে কি?

সংগৃহীত

জাকাত ফরজ ইবাদত এবং ইসলামের তৃতীয় স্তম্ভ। পবিত্র কোরআনে যেখানে নামাজের কথা এসেছে, সেখানেই দেখা যায় জাকাতের কথা। সুরা বাকারার এক আয়াতে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘নিশ্চয়ই যারা ঈমান এনেছে, সৎকাজ করেছে, সালাত প্রতিষ্ঠা করেছে এবং জাকাত দিয়েছে, তাদের প্রতিদান রয়েছে তাদের রবের নিকট। আর তাদের কোনো ভয় নেই এবং তারা চিন্তিতও হবে না।’ (সুরা বাকারা: ২৭৭)

সব ধরনের সম্পদের ওপর জাকাত ফরজ হয় না। শুধুমাত্র সোনা-রুপা, টাকা-পয়সা, পালিত পশু এবং ব্যবসার পণ্যে জাকাত ফরজ হয়। পাওনা টাকার ওপরও জাকাত আসবে। তবে উসূলের আগে সেই টাকার জাকাত দেওয়া জরুরি নয়। 

অবশ্য কেউ চাইলে পাওনা টাকা হাতে আসার আগে জাকাত আদায় করতে পারেন। আবার পাওনা টাকা হাতে আসতে যদি কয়েক বছর সময় অতিবাহিত হয়ে যায় তাহলে উসুল হওয়ার পর বিগত সব বছরের টাকা হিসাব করে জাকাত আদায় করে দিতে হবে। পাওনা যদি উধাও হয়ে যাওয়ার ভয় থাকে, তাহলে সেই টাকার জাকাত ফরজ নয়। উসূল হওয়ার পরই ওই টাকার জাকাত আদায় করা ফরজ। (মুসান্নাফে আবদুর রাজজাক ৭১৩১)

জাকাত আদায়কারীর জন্য রয়েছে আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে মহাপুরস্কারের ঘোষণা। ইরশাদ হয়েছে, ‘আর যারা সালাত আদায় করে, জাকাত দেয় এবং আল্লাহ ও পরকালে ঈমান রাখে আমি তাদেরকে মহাপুরস্কার দিব।’ (সুরা নিসা: ১৬২)

অন্যদিকে জাকাত আদায় না করলে কঠিন শাস্তির কথা বর্ণিত হয়েছে কোরআন ও হাদিসে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘এবং যারা সোনা ও রুপা জমা করে রাখে, আর তা আল্লাহর রাস্তায় খরচ করে না, আপনি তাদের বেদনাদায়ক আজাবের সুসংবাদ দিন, যেদিন জাহান্নামের আগুনে তা গরম করা হবে, অতঃপর তা দিয়ে তাদের কপালে, পার্শ্বদেশে ও পিঠে সেঁক দেওয়া হবে। (আর বলা হবে) এটা তা-ই, যা তোমরা নিজেদের জন্য জমা করে রেখেছিলে। সুতরাং তোমরা যা জমা করেছিলে তার স্বাদ উপভোগ করো।’ (সুরা তাওবা: ৩৪-৩৫)

জেনে রাখা জরুরি যে, যার কাছে নিসাব পরিমাণ সম্পদ আছে— এমন স্বাধীন ও পূর্ণবয়স্ক মুসলিম নর-নারীর ওপরই জাকাত ফরজ। আবার, নিসাব পরিমাণ সম্পদ পূর্ণ একবছর (চন্দ্রবর্ষ) অতিক্রম করলেই কেবল জাকাত আদায় করতে হবে। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে যথাযথভাবে জাকাত আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

সূত্র: Dhaka Mail