শুক্রবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৫, ১৭ আশ্বিন ১৪৩২

সৌরজগতের গ্রহাণু বলয় হারিয়ে যাচ্ছে

সৌরজগতের গ্রহাণু বলয় হারিয়ে যাচ্ছে

সংগৃহীত

বৃহস্পতি ও মঙ্গল গ্রহের মাঝখানে থাকা গ্রহাণু বলয় থেকে ধীরে ধীরে বিভিন্ন উপাদান হারিয়ে যাচ্ছে। মহাকর্ষীয় শক্তি ও ঘন ঘন সংঘর্ষের কারণে এই মহাজাগতিক অঞ্চলটি ছোট হয়ে আসছে বলে জানিয়েছেন উরুগুয়ের ইউনিভার্সিড্যাড দে লা রিপাবলিকার জুলিয়ো ফার্নান্দেজের নেতৃত্বে একদল বিজ্ঞানী। এই ক্ষয় পৃথিবীর অতীত ও ভবিষ্যতের উল্কাপিণ্ডের আঘাতের ঝুঁকির ওপর প্রভাব ফেলতে পারে বলে ধারণা করছেন তাঁরা।

নতুন এক গবেষণায় জানা গেছে, মঙ্গল ও বৃহস্পতি গ্রহের মাঝখানের গ্রহাণু বলয় সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তার উপাদান হারাচ্ছে। ৪৬০ কোটি বছর আগে সৌরজগতের জন্মের সময় এই অঞ্চলে একটি গ্রহ তৈরির সম্ভাবনা থাকলেও, তা হয়নি। মূলত বৃহস্পতি গ্রহের শক্তিশালী মাধ্যাকর্ষণের কারণে তা সম্ভব হয়নি। বৃহস্পতি গ্রহ মহাজাগতিক বস্তুকে একত্র হওয়ার সুযোগ না দিয়ে উল্টো সংঘর্ষ ঘটিয়ে সেগুলোকে ভেঙে ফেলে।

বর্তমানে এই গ্রহাণু বলয়ে চাঁদের ভরের মাত্র প্রায় ৩ শতাংশ উপাদান অবশিষ্ট আছে। বিশাল এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে–ছিটিয়ে রয়েছে এসব উপাদান। বৃহস্পতি, শনি ও মঙ্গল গ্রহের মহাকর্ষীয় প্রভাবের কারণে এই মহাজাগতিক শিলার কক্ষপথ ক্রমেই প্রভাবিত হচ্ছে। কিছু শিলা সৌরজগতের ভেতরের দিকে থাকা পৃথিবীর কক্ষপথের কাছে চলে আসছে। আবার কিছু শিলা বৃহস্পতির দিকে ছিটকে যাচ্ছে। কিছু শিলা সংঘর্ষের ফলে ধুলায় পরিণত হচ্ছে।

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, বলয়টি প্রতিবছর প্রায় শূন্য দশমিক শূন্য শূন্য ৮৮ শতাংশ হারে ছোট হচ্ছে। এই হিসাব শুধু বলয়ের সেই অংশের জন্য, যেখানে এখনো সংঘর্ষ ঘটছে। এই হার ছোট মনে হলেও শত শত কোটি বছর ধরে এর বিশাল প্রভাব তৈরি হচ্ছে। হারিয়ে যাওয়া উপাদানের প্রায় ২০ শতাংশ অপেক্ষাকৃত বড় খণ্ড হিসেবে ছিটকে যায়। সেসব বড় খণ্ডকে আমরা কখনো কখনো পৃথিবীর কক্ষপথে প্রবেশ করতে দেখি উল্কাপিণ্ড হিসেবে। অবশিষ্ট ৮০ শতাংশ সূক্ষ্ম ধুলায় পরিণত হয়। সেই ধুলার কারণে সূর্যাস্তের পরে বা সূর্যোদয়ের আগে আমাদের পৃথিবীর আকাশে এক ক্ষীণ আভা সৃষ্টি হয়।

গ্রহাণু বলয়কে আমাদের সৌরজগতের একটি স্থায়ী অংশ মনে হলেও নতুন গবেষণা বলছে, এটি ধীরে ধীরে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এই গবেষণায় সেরেস, ভেস্টা ও প্যালাসের মতো বড় ও স্থিতিশীল গ্রহাণুকে বাদ দেওয়া হয়েছে। বলয় এলাকার চলমান ক্ষয়ের প্রক্রিয়া বোঝার মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা পৃথিবীর অতীত ইতিহাস নিয়ে আরও ভালোভাবে গবেষণা করার সুযোগ পাচ্ছেন।

সূত্র: প্রথম আলো

সর্বশেষ:

শিরোনাম: