সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

সিঙ্গাপুরে শ্রমিকের জায়গা নিচ্ছে রোবট

সিঙ্গাপুরে শ্রমিকের জায়গা নিচ্ছে রোবট

করোনা মহামারির কারণে ‍সৃষ্ট অনেক সংকটের মধ্যে একটি হলো শ্রমিক সংকট। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ মহামারির সময়ে শ্রমিক সংকটে ভুগেছে। সিঙ্গাপুরও তার ব্যতিক্রম নয়। আর এ সমস্যা দূর করতে দেশটি ঝুঁকেছে স্বয়ংক্রিয় শ্রমিক তথা রোবটের দিকে। বর্তমানে দেশটিতে কনস্ট্রাকশন সাইট হোক কিংবা লাইব্রেরি, সেখানে কাজ করছে রোবট শ্রমিক।

সিঙ্গাপুর প্রধানত কাজের জন্য বিদেশি শ্রমিকদের ওপর নির্ভরশীল। তবে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২১-এর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত, অর্থাৎ করোনার সময় দেশটিতে প্রায় ২ লাখ ৩৫ হাজার শ্রমিকের ঘাটতি দেখা দিয়েছিল বলে জানিয়েছে কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। আর এই ঘাটতি পূরণে এবং ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখেই দেশটির কোম্পানিগুলো রোবট শ্রমিকের দিকে ঝুঁকে পড়েছে।

সেখানকার একটি নির্মাণাধীন ভবনের এলাকা বা কনস্ট্রাকশন সাইটে দেখা গেছে, ‘স্পট’ নামে চার পায়ের একটি রোবটকে, যার নির্মাতা বোস্টন ডায়নামিক্স নামে একটি মার্কিন প্রতিষ্ঠান।

রোবটটি মাটি খনন তদারকি করে। সাইট থেকে প্রাপ্ত ডেটা সে সরাসরি পাঠায় ওই কনস্ট্রাকশন কোম্পানি গ্যামনের কন্ট্রোল রুমে। আগে এ কাজ করতে দুজন শ্রমিকের দরকার হতো জানিয়ে গ্যামনের জেনারেল ম্যানেজার বলেন, রোবট দিয়ে কাজ করানোয় শ্রমিক সংখ্যা ও খরচ দুটোই কমেছে।

তিনি জানান, মহামারির সময় যে শ্রমিকের ঘাটতি দেখা দিয়েছিল, তা খুব জলদি পূরণ হবে না। তাই অনেক কোম্পানিই রোবট ব্যবহারের দিকে মনোযোগ দিচ্ছে। আবার সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল লাইব্রেরিতে কাজ করছে দুটি সেলফ রিডিং রোবট, যা দিনে এক লাখ বইয়ের লেবেল স্ক্যান করতে পারে।

ন্যাশনাল লাইব্রেরির সহকারী পরিচালক লি ই ফুয়াং বলছেন, এ রোবটের সাহায্যে কাজ অনেক জলদি হয়ে যাচ্ছে, লাইব্রেরিতে স্টাফও কম লাগছে। ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রোবটিকসের তথ্য অনুসারে, সিঙ্গাপুরের ম্যানুফ্যাকচারিং ইন্ডাস্ট্রিজে প্রতি ১০ হাজার কর্মচারীর বিপরীতে ৬০৫টি রোবট কাজ করে, যা বিশ্বে দ্বিতীয়। এ ক্ষেত্রে বিশ্বে শীর্ষস্থান দখল করে আছে দক্ষিণ কোরিয়া, সেখানে প্রতি ১০ হাজার মানুষের বিপরীতে কাজ করে ৯৩২টি রোবট।

শুধু উৎপাদন শিল্পেই নয়, মানুষের সঙ্গে সামনাসামনি কার্যকলাপেও অংশ নিচ্ছে রোবট। সিঙ্গাপুরের অন্তত ৩০টি মেট্রোস্টেশনে দেখা মিলবে বারিস্তা রোবটের। সেখানে কফি বানানো থেকে বিক্রি—সবই করছে রোবট। বারিস্তা রোবটের কারিগর কিথ ট্যান বলেন, এই রোবট উদ্ভাবনের ফলে খাবার ও পানীয় ব্যবসার ক্ষেত্রে বড় যে সমস্যা ছিল, ভালো কর্মী খুঁজে পাওয়া তার সমধান হয়েছে।

দৈনিক বগুড়া

সর্বশেষ: