রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

মিরসরাইয়ে তরমুজ চাষে ৮ কৃষকের সাফল্য

মিরসরাইয়ে তরমুজ চাষে ৮ কৃষকের সাফল্য

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে প্রথমবারের মতো গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষ করা হয়েছে। উপজেলায় পরীক্ষামূলক ৮ ইউনিয়নের ৮ জন কৃষক এ তরমুজ চাষ করেছেন। এরই মধ্যে গাছে ফলন আসতে শুরু করেছে। অনেক কৃষক তরমুজ বিক্রি করছেন ৬০-৮০ টাকা কেজি দরে। তরমুজ চাষে নেওয়া হয়েছে মালচিং ও আর্গানিক পদ্বতি। গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষে সহযোগিতা করছে উপজেলা কৃষি বিভাগ।

উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মিরসরাইয়ে প্রথমবারের মতো ৮ জন কৃষকের মাধ্যমে পরীক্ষামূলক গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষ করা হয়েছে। প্রায় ১ হেক্টর জমিতে আবাদকৃত তরমুজ ক্ষেতে এরই মধ্যে ফলন এসেছে। প্রতি কেজি তরমুজ পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকায়। নিবিড়তা বৃদ্ধিকরণের আওতায় আবাদ করা তরমুজ ক্ষেতগুলোয় নেওয়া হয়েছে আর্গানিক ও মালচিং পদ্বতি। পোকামাড়ক দমনে ব্যবহার করা হচ্ছে ফেরোমন ফাঁদ ও ইয়েলো কার্ড। বর্তমানে ইয়েলো কিং ও ব্ল্যাকবেবি জাতের তরমুজ চাষ করা হলেও আগামীতে অন্য জাত চাষ করা হবে।

উপজেলার জোরারগঞ্জ, হিঙ্গুলী, খৈয়াছড়া ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকায় এ তরমুজ আবাদ করা হয়েছে। খৈয়াছড়া ইউনিয়নের তরমুজ চাষি কৃষক ইকবাল হোসেন বলেন, ‘আমি এবার শখের বশে ৫০ শতক জমিতে ব্ল্যাকবেবি, ইয়োলো কিং জাতের গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষ করেছি। প্রতিটি তরমুজের বর্তমান ওজন দেড় থেকে চার কেজি। প্রতি কেজি তরমুজ পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকায়। কম খরচ ও পরিশ্রমে তরমুজ চাষ করে ভালো লাভ হয়েছে। এটি যেমন রসালো; তেমনই সুমিষ্ট।

জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের উত্তর সোনাপাহাড় গ্রামের তরমুজ চাষি আব্দুল্লাহ আল মামুনের ক্ষেতে গিয়ে দেখা যায়, তিনি ২০ শতক জায়গায় গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষ করেছেন। এতে ব্যয় হয়েছে প্রায় ২৫ হাজার টাকা। সম্পূর্ণ অর্গানিক ও মালচিং পদ্ধতিতে তৈরি করা হয়েছে তরমুজ ক্ষেত। এখানে ইয়েলো কিং ও ব্ল্যাকবেবি জাতের তরমুজ আবাদ করা হয়েছে। পোকামাকড় রোধ করার জন্য তৈরি করা হয়েছে ফেরোমন ফাঁদ ও ইয়েলো কার্ড। তরমুজের গাছের পরিচর্যার জন্য দেওয়া হয়েছে মালচিং পেপার। ওপরে মাচা দিয়ে ফল প্যাকেট জাত করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। এসব জাতের তরমুজের ভেতরের অংশের রং লাল হয় এবং খেতেও বেশ সুস্বাদু।

তিনি বলেন, ‘কৃষি বিভাগ প্রশিক্ষণ দেওয়ার পাশাপাশি উচ্চমূল্যের ফসল হিসেবে তরমুজ চাষের জন্য বিনা মূল্যে বীজ, মালচিং পেপার, ফেরোমন ফাঁদ, জৈব সার দিয়েছে। ভালো ফলন হওয়ায় বেশি লাভের আশায় বুক বেঁধেছি। এক সপ্তাহ পর বিক্রি শুরু করবো।’

শুধু কৃষক মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন নন; খৈয়াছড়ার ইকবাল হোসেন, পূর্ব হিঙ্গুলী গ্রামের মো. আলমগীরসহ ৮ জন চাষি প্রথমবারের মতো চাষ করেছেন গ্রীষ্মকালীন তরমুজ।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় বলেন, ‘এ অঞ্চলের মাটি তরমুজ চাষের জন্য উপযোগী। চলতি বছর প্রথমবারের মতো মিরসরাইয়ে এক হেক্টর জমিতে পরীক্ষামূলক গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষ করা হয়েছে। ৮ জন কৃষকের মাধ্যমে এ তরমুজ আবাদ করা হয়। এছাড়া গ্রীষ্মকালীন তরমুজ উচ্চমূল্যের ফসল হওয়ায় চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন কৃষকেরা।’

দৈনিক বগুড়া