বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মাটি ছাড়াই চারা উৎপাদনে চমক দেখালেন জিয়াউর!

মাটি ছাড়াই চারা উৎপাদনে চমক দেখালেন জিয়াউর!

মেহেরপুরে কোকোডাস্ট পদ্ধতিতে চারা উৎপাদন করে এলাকায় সাড়া ফেলেছেন কৃষক জিয়াউর রহমান। এই পদ্ধতিতে মাটির ম্পর্শ ছাড়াই উৎপাদিত হচ্ছে ফল-ফুল সহ বিভিন্ন শাক-সবজির চারা। আধুনিক এই পদ্ধতিতে চারা উৎপাদন এলাকায় বেশ সাড়া পড়েছে। উৎসুক অনেকেই দেখতে আসছেন কিভাবে চারা উৎপাদন হয়।

জানা যায়, কৃষক জিয়াউর রহমান মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার সাহারবাটি গ্রামের বাসিন্দা। মেহেরপুরে তিনিই প্রথম যে আধুনিক এই পদ্ধতিতে মাটির স্পর্শ ছাড়া কোকোডাস্ট ও জৈবসার ব্যবহার করে সবজিসহ ফল-ফুলের বীজ বপন করে চারা উৎপাদন শুরু হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, সারি সারিভাবে ট্রে সাজানো রয়েছে। সেই ট্রেতে বিভিন্ন প্রজাতির শাক-সবজির চারা শোভা পাচ্ছে। মাটির স্পর্শ ছাড়া নারকেলের ছোবড়ার মধ্যে বীজ বপন করে চারা উৎপাদন করা হচ্ছে। মাটির সাথে স্পর্শ না থাকায় কোনো রোগবালাই আক্রমণ করছে না। এভাবেই চারা উৎপাদন করে বছরে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা আয় করছেন কৃষক জিয়াউর রহমান।

জিয়াউর রহমান বলেন, পড়াশোনা শেষ করে একটি কৃষি খামারে ৮ বছর চাকরি করি। চাকরি শেষে বাড়ি এসে নার্সারি ব্যবসা শুরু করি। ব্যবসায় লাভবান হওয়ায় ১ বিঘা জমি লিজ নিয়ে আধুনিক পদ্ধতিতে চারা উৎপাদন করে কৃষকদের কাছে বিক্রি করি।

তিনি আরো বলেন, প্রথমে ১০ হাজার প্লাস্টিকের ট্রে সংগ্রহ করি। তারপর খুলনা থেকে কোকোডাস্ট সংগ্রহ করে সাথে জৈব সার মিশ্রন করে বিভিন্ন প্রকারের সবজি ও গাছের চারা উৎপাদন করি। এতে এক সঙ্গে এক লাখ চারা উৎপাদন করা হয়। ট্রেতে বীজ বপন শেষে ঢেকে দেওয়া হয় নেট দিয়ে। ফলে কোনো ধরনের কীটপতঙ্গ চারাগাছকে আক্রমণ করতে পারে না। চারাগুলো বেড়ে উঠে সুস্থ ও সবলভাবে।

জিয়াউর রহমান আরো বলেন, আমি কোকোডাস্ট পদ্ধতির মাধ্যমে ক্যাপসিক্যাম, স্ট্রবেরি, হাইব্রিড মরিচ, লাউ, কুমড়া, তরমুজ, বাঁধাকপি, ফুলকপিসহ বিভিন্ন ধরনের ফল ও ফুলের চারা উৎপাদন করছি এই পদ্ধতিতে। সব খরচ বাদ দিয়ে মোটা অংকের টাকা আয় করতে পারছি।

কৃষক ইমরুল হাসান ও হাবিব বলেন, গত বছর জিয়াউর রহমানের কাছ থেকে বাঁধাকপির চারা সংগ্রহ করে ভালো ফলন পেয়েছি। এবারও চারা সংগ্রহ করতে এসেছি। তার উৎপাদিত চারা খুব ভালো ও রোগবালাই মুক্ত।

গাংনী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লাভলী খাতুন বলেন, আধুনিক এই পদ্ধতিতে জিয়াউর রহমান চারা উৎপাদন করে ভালো আয় করতে পারছেন। কোকোডাস্টে পানি ধারণক্ষমতা অনেক বেশি। তাই দ্রুত চারা গজায়। আর এই চারা জমিতে রোপন করার পর ফলনও ভালো হয়। আমরা কৃষি বিভাগ থেকে তাকে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে সহযোগীতা করছি।

দৈনিক বগুড়া