মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

মোদির পা ছুঁয়ে হইচই ফেলে দিয়েছেন পাপুয়া নিউ গিনির প্রধানমন্ত্রী

মোদির পা ছুঁয়ে হইচই ফেলে দিয়েছেন পাপুয়া নিউ গিনির প্রধানমন্ত্রী

অভাবনীয় সৌজন্যের নজির গড়ে রাতারাতি আলোচনায় উঠে এসেছেন পাপুয়া নিউ গিনির প্রধানমন্ত্রী জেমস মারাপে। আলিঙ্গন, করমর্দনের পর আচমকাই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করেছেন ওই বিদেশি রাষ্ট্রনেতা। রোববার রাতে সেই দৃশ্য প্রকাশ্যে আসতেই নজর কেড়েছে সব মহলে।

পাপুয়া নিউ গিনিতে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্রগুলোর সহযোগিতা সম্মেলনে যোগ দিতে সেখানে গিয়েছেন মোদি। রোববার রাতে সে দেশে নামে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর বিমান। তখন সে দেশের স্থানীয় সময় ছিল রাত ১০টা।

বিমান থেকে মোদি নামতেই তাকে আলিঙ্গন করেন এ দ্বীপরাষ্ট্রটির প্রধানমন্ত্রী মারাপে। তারপর দুই দেশের রাষ্ট্রনেতা করমর্দন করেন। আর এর পরেই ঘটে সেই নজরকাড়া দৃশ্য। আচমকাই মোদির পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করেন মারাপে। সঙ্গে সঙ্গে নিচু হয়ে মারাপেকে জড়িয়ে ধরেন মোদি। তার পিঠ চাপড়েও দেন তিনি।

সাধারণত দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রনেতার সাক্ষাৎপর্বে আলিঙ্গন এবং করমর্দনের মাধ্যমে সৌজন্য বিনিময়ের ছবিই এত দিন দেখে এসেছেন সকলে। সে ক্ষেত্রে এক দেশের প্রধানমন্ত্রীর পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করছেন অন্য দেশের প্রধানমন্ত্রী— এমন দৃশ্য সচরাচর দেখা যায় না। তা ছাড়া, গুরুজনদের পা ছুঁয়ে প্রণাম করা ভারতীয় সংস্কৃতির রীতি। সে দিক থেকে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি পাপুয়া নিউ গিনির প্রধানমন্ত্রীর এমন সম্মান প্রদর্শন নজর কেড়েছে।

মারাপের বয়স ৫২ বছর। মোদির বয়স ৭২ বছর। ফলে পাপুয়া নিউ গিনির প্রধানমন্ত্রীর থেকে বয়সে বড় মোদি। আর সেই কারণেই ভারতীয় সংস্কৃতিকে সম্মান জানিয়ে মোদির পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করলেন দ্বীপরাষ্ট্রটি প্রধানমন্ত্রী।

রোববার রাতের পর থেকেই জেমস মারাপকে নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। কে এই রাষ্ট্রনেতা, যিনি মোদির পা ছুঁয়ে প্রণাম করলেন! ২০১৯ সাল থেকে পাপুয়া নিউ গিনির প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব সামলাচ্ছেন মারাপে। তার রাজনৈতিক দলের নাম ‘পাঙ্গু পতি’।

১৯৯৩ সালে পাপুয়া নিউ গিনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কলা বিভাগে স্নাতক পাশ করেন। এরপর পরিবেশ বিজ্ঞান নিয়ে স্নাতকোত্তর পাশ করেন। পরে বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন নিয়ে স্নাতকোত্তর পাশ করেন তিনি।

দ্বীপরাষ্ট্রের অষ্টম প্রধানমন্ত্রী মারাপে। অতীতে সে দেশের সরকারে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদ সামলেছেন তিনি।২০১৯ সালে পিপল্‌স ন্যাশনাল কংগ্রেস পার্টি থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন মারাপে। তারপরেই পাঙ্গু পতি দলে যোগ দেন।

২০২০ সালে মারাপে সরকারকে ফেলার চেষ্টা হয়েছিল। তবে তা সফল হয়নি। মোদিকে প্রণামের পর মারাপে সম্পর্কে এই কথাগুলোই আলোচিত হচ্ছে। এযাবৎ কাল পর্যন্ত কোনো দেশের প্রধানমন্ত্রীকেই এমন সৌজন্য প্রদর্শন করেননি মারাপে। সে ক্ষেত্রে তিনি মোদির অনুরাগী কিনা, এ নিয়েও আলোচনা চলছে বিভিন্ন মহলে।

মোদির জন্য নিজেদের দেশের চিরায়ত প্রথাও ভেঙেছে পাপুয়া নিউ গিনি। সূর্যাস্তের পর সে দেশে কোনো রাষ্ট্রনেতা গেলে তাকে আনুষ্ঠানিক অভ্যর্থনা দেওয়া হয় না। তবে রোববার মোদির জন্য সেই প্রথা ভেঙেছে পাপুয়া নিউ গিনি। 

দৈনিক বগুড়া

সর্বশেষ: