শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

কোটি টাকার সম্পদের মালিক পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী, হতে চান এমপি

কোটি টাকার সম্পদের মালিক পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী, হতে চান এমপি

বগুড়া-১ (সারিয়াকান্দি-সোনাতলা) আসনে এবার নানা কারণে সমালোচিত স্বতন্ত্র প্রার্থী মোছা. শাহাজাদী আলম লিপি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দেওয়া হলফনামায় নিজেকে কোটি টাকার সম্পদের মালিক বলে উল্লেখ করেছেন এই প্রার্থী।

শাহজাদী আলম লিপির স্বামী হামিদুল আলম মিলন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশে অতিরিক্ত ডিআইজি হিসেবে কর্মরত। হলফনামায় মিলনের সম্পদের পরিমাণ এখন ৩ কোটি ৫৬ লাখ ২৪ হাজার ৭১৯ টাকা উল্লেখ করা হয়েছে। এইচএসসি পাস লিপি হলফনামায় পেশা হিসেবে ব্যবসা উল্লেখ করেছেন। নদী ভাঙনকবলিত সারিয়াকান্দির হাটশেরপুর এলাকার বাসিন্দা লিপির ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম মেসার্স মেধা এন্টারপ্রাইজ। এবার আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন চেয়ে বঞ্চিত হয়েছেন। কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে জানা যায়, শুধুমাত্র নিজের প্রভাব বিস্তারের জন্য সাংসদ হওয়ার প্রচেষ্টা থাকায় আওয়ামীলীগ থেকে তাকে মনোনয়ন দেয়া হয়নি।

এবার দেখুন মুদ্রার উল্টো পিঠ। একজন মানুষের যদি জনসেবা করার একান্তই ইচ্ছা থেকে থাকে তাহলে সে নিঃস্বার্থভাবে সেবা করবে। কিন্তু শাহজাদী আলম লিপির ইচ্ছাটা মনে হয় একটু বেশিই। হলফনামায় সম্পদের পরিমাণ ৩ কোটি ৫৬ লাখ ২৪ হাজার ৭১৯ টাকা উল্লেখ করা হলেও তিনি গত ৩ মাসে প্রায় ৫ কোটি টাকার সমপরিমান সম্পদ দান করেছেন। এগুলো কোন মনগড়া তথ্য নয়। এলাকার সকলেই এটা অবগত যে তিনি শেষ ৩ মাসে ২৫ টি সিএনজি এবং ৫০ টি মোটরসাইকেল বিভিন্ন জনকে দিয়েছেন। এই টাকার উৎস জানতে চাইলে বিষয়টি এড়িয়ে যান শাহজাদী আলম লিপি।

শাহজাদী আলম লিপির ঘনিস্ট একজন সমর্থক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, নির্বাচনী প্রচারণায় ইতোমধ্যেই শাহজাদী আলম লিপি ৪০ কোটি টাকা ব্যয় করেছেন। একজন মানুষের মোট সম্পদের পরিমাণ ৩ কোটি হলে সে কিভাবে ৪০ কোটি টাকা খরচ করতে পারে তা সহজেই অনুমেয়।

অনুসন্ধানে আরও উঠে এসেছে, এসব সম্পদের পাহার গড়ে উঠেছে অবৈধ টাকার মাধ্যমে। জমি দখল, মাদক ব্যবসা ও মানব পাচার সহ নানান অবৈধ ব্যবসা থেকেই আজ তিনি কোটিপতি।
তিনি যখন হামিদুল আলমকে বিয়ে করেন তখন হামিদুল আলম এর পিতা ইবনে আজিজ মন্টুর কৃষি ও অকৃষি জমির পরিমাণ ছিল ৪০ বিঘা। সেই জমি সন্তানদের মাঝে সমানভাবে বণ্টন করে দেন তিনি। এগুলো ছাড়া শাহজাদী আলম লিপি অথবা তার স্বামী হামিদুল আলম এর আর কোন সম্পদ ছিলনা। মাত্র এই কয়েক বছরে কি তাহলে এই দম্পত্তি আলাদীনের চেরাগ পেলো? যেই চেরাগ দিয়ে ২৫ টি সিএনজি এবং ৫০ টি মোটরসাইকেল দান করছেন?

শুধু অবৈধ সম্পদ অর্জন নয়, নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের জন্যও রয়েছে তার সুখ্যাতি।  শাহজাদী আলম লিপির স্বামী হামিদুল আলম একজন সরকারী কর্মকর্তা। চাকুরি থেকে একমাসের ছুটি নিয়ে এলাকায় এসে তার স্ত্রীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। শুধু প্রচারণাই নয়, তিনি তার প্রশাসনিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিপর্যস্ত করে রেখেছেন পুরো নির্বাচনী এলাকা। নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যবহার করছেন সরকারী গাড়ী। যেটা সম্পূর্ণরূপে অবৈধ ও বে-আইনি।

রাজনীতির জন্ম দেশ ও দশের কল্যাণের জন্য। সেই রাজনীতিকে আশ্রয় করে কেউ যদি সম্পদের অঢেল পাহাড় গড়তে চায় তাহলে তা দেশ ও জাতির জন্য হবে ভয়ানক। তাই এসকল অপরাজনৈতিক ব্যক্তি হতে দূরে থাকুন।