• শুক্রবার   ৩১ মার্চ ২০২৩ ||

  • চৈত্র ১৭ ১৪২৯

  • || ১০ রমজান ১৪৪৪

বগুড়ার সারিয়াকান্দির চরে বাতাসে দোল দিচ্ছে সবুজ ভূট্টার গাছ

দৈনিক বগুড়া

প্রকাশিত: ৫ জানুয়ারি ২০২৩  

বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে যমুনা নদীর চরাঞ্চলে ভূট্টা চাষের বিপ্লব ঘটছে। চার বছরের ব্যবধানে প্রায় ২৩ গুন বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি বছরে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার হেক্টর জমিতে ভূট্টার আবাদ করেছেন যমুনা নদীর অববাহিকার এ উপজেলার কৃষকেরা।মূলত পানি সহিষ্ণু এই ফসল চাষে খরচ খুব সীমিত ও বাজারে দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকরা দিন দিন আগ্রহী হয়ে উঠছেন ভূট্টায়।

সরেজমিনে দেখা যায়, চরের মাঠে মাঠে সবুজ ভূট্টা গাছে ভরে উঠেছে। বাতাসে দোল খাচ্ছে ভূট্টার কচি সবুজ পাতা। এরই মধ্যে অনেক জমিতে ভূট্টা গাছে মোচা বের হয়েছে। সে মোচায় ভেতর সোনালি ভূট্টা দানা উঁকি দিচ্ছে। এতে কৃষকদের মনে আশার আলো দানাবেধে ওঠতে শুরু করেছে।

সারিয়াকান্দি কৃষি অফিস সূত্র জানায়, গত ২০১৯ সালে এখানে চাষ হয়েছিল মাত্র দেড় হাজার হেক্টর জমিতে। ২০২২ সালে চাষ হয় সেখানে ৩ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে। তবে চলতি বছরের রবি মৌসুমে ভূট্টা চাষের পরিমাণ এক লাফে দ্বিগুন বেড়েছে। এবার আবাদ হয়েছে ৬ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে। মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা বলছেন, চলতি মৌসুমে চাষের এই পরিমাণ আরো বাড়তে পারে। কৃষকদের কাছে জানা যায়, সারিয়াকান্দির বাঙালি ও যমুনা নদীর বিভিন্ন চর রয়েছে।

এসব চরে বন্যার পর চাষিরা সব রকমের ফসলের চাষাবাদ করে থাকেন। তবে এখন তারা ভূট্টার প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছেন। যদিও কয়েক বছর আগেই চরের চাষিদের কাছে প্রিয় ছিল মরিচ চাষ। কিন্তু কৃষকরা যখন মরিচ ফসল বাজারে তোলেন তখন দাম থাকে না। পরে দাম বাড়লেও কৃষকরা দাম না পাওয়ায় মরিচ চাষের নিরুৎসাহী হয়েছেন। বরং সেই স্থান দখল করে নিয়েছে ভূট্টা। কারণ ভূট্টার বাজার দাম সব সময় ভালো থাকে।

কর্ণিবাড়ী ইউনিয়নের ছোনপাচা চরের আয়েন উদ্দিন বলেন, আমি ৮ বিঘা জমিতে ভূট্টার আবাদ করেছি। প্রতি বিঘায় সেচ, সার ও অন্যান্য খরচ বাবদ পড়েছে প্রায় ১৫ হাজার টাকা। সেখানে প্রতি মণ ভূট্টা বেচতে পারবো ১৪ শ থেকে ১৫ শ টাকা। একই চরের ফরিদ মন্ডল চাষ করেছেন ১০০ বিঘার বেশি জমিতে।

তার সাথে কথা হয় গত কাল, এসময় তিনি বলেন, প্রতি বিঘায় জমি থেকে ভূট্টার আশা করছেন ৫০ থেকে ৬০ মণ। সোনালী ভূট্টা বিক্রি করে মোটা অংকের নগদ টাকা ঘরে উঠবে আশা করেন ফরিদ মন্ডল। তিনি বলেন, চরে ভূট্টা চাষে বিপ্লব ঘটেছে। উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল হালিম বলেন, চরের চাষিরা ফসল চাষে আধুনিকতার ছোয়া লেগেছে। সেখানে যান্ত্রিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করায় যে কোন ফসল ভালো উৎপাদন করতে পাড়ছেন। ভূট্টা চাষ করে চরের চাষিরা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হবেন।

দৈনিক বগুড়া
দৈনিক বগুড়া