
সংগৃহীত
ইসলামের প্রথম মুয়াজ্জিন ছিলেন বিখ্যাত সাহাবি হজরত বিলাল (রা.)। তিনি রাসুল (সা.) এর প্রিয় সাহাবিদের একজন। ইসলামের জন্য অনেক কষ্ট সহ্য করেছেন তিনি। বিলাল (রা.) সম্পর্কে আটটি তথ্য তুলে ধরা হলো—
১. ক্রীতদাস বিলাল
ইসলামের বিখ্যাত সাহাবি বিলাল (রা.) প্রাথমিক জীবনে একজন কৃতদাস ছিলেন। তার জন্ম হয়েছিল আবিসিনিয়ায় (ইথিওপিয়া) নাগরিক। এখানেই বেড়ে উঠেন তিনি। সেখান থেকে মক্কায় উমাইয়া বিন খালাফের ক্রীতদাস হয়েছিলেন।
২. ইসলামের চরম শত্রুর অধীনে
বিলাল (রা.) এর মনিব উমাইয়া বিন খালাফ ইসলামের ঘোরতর শত্রুদের একজন। ইসলামকে সহ্য করতে পারতো না সে। ঘোরতর ইসলাম বিদ্বেষী মনিবের অধীনে কাজ করা বিলাল (রা.) ইসলামের প্রতি অনুরাগী হয়ে উঠেন। এবং এক সময় তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন।
উমাইয়া তাকে ইসলাম ত্যাগে বাধ্য করেছিল। এমনকি তাকে হত্যাও করতে চেয়েছিল। কিন্তু বিলাল (রা.) ভয় না পেয়ে আল্লাহর ওপর বিশ্বাস অটুট রাখেন।
৩. অমানবিক শাস্তি
আল্লাহর ওপর ঈমান ও ইসলাম গ্রহণের কারণে বিলাল (রা.) এর ওপর অমানবিক অত্যাচার চালাতো উমাইয়া বিন খালফ। মরুভূমির উত্তপ্ত বালুর ওপর বিলাল (রা.)-কে শুইয়ে রাখতো। তার ওপর গরম পাথর রাখতো, তার পুরো শরীর জ্বলে যেত। তার পিঠ পুড়ে যেতো। শরীরের ওপর ভারী পাথর চাপিয়ে দেওয়ার কারণে তিনি নড়াচড়া করতে পারতেন না।
৪. প্রতিরাতে চাবুক মারা হতো
আল্লাহর ওপর বিলাল (রা.) এর অটুট বিশ্বাস তার মালিককে আরও ক্ষুব্ধ করে তোলে। উমাইয়া ও আবু জাহল পালা করে তাকে প্রতিরাতে চাবুক মারতো।
৫. স্বাধীন জীবন
হজরত আবু বকর (রা.) বিলাল (রা.)-কে তার মনিব উমাইয়ার কাছ থেকে কিনে নেন এবং তাকে মুক্ত করে দেন। এরপর থেকে তিনি স্বাধীনভাবে জীবনযাপন শুরু করেন।
৬. ইসলামের প্রথম মুয়াজ্জিন
ইসলামের জন্য ত্যাগ স্বীকারকারী সাহাবি বিলাল (রা.)-কে আল্লাহ তায়ালা বিশেষ পুরস্কারে ভূষিত করেছিলেন। তিনি ইসলামের প্রথম মুয়াজ্জিন হওয়ার সৌভাগ্য লাভ করেন। মহানবী (সা.) ও সাহাবিরা মিলে যখন নামাজের জন্য আজান পদ্ধতি চালু করলেন, তখন মহানবী (সা.) তাকে মুয়াজ্জিনের দায়িত্ব দিলেন।
৭. মদিনা ত্যাগ
প্রিয় নবী (সা.)-এর ইন্তেকালের পর বিলাল (রা.) নবীজির শোক মেনে নিতে পারেননি। তিনি মদিনা ত্যাগ করে সিরিয়ায় চলে যান। সেখানেই বসবাস শুরু করেন। পরে এক রাতে স্বপ্নে দেখেন, রাসুল (সা.) তাকে আবাবও মদিনায় যাওয়ার জন্য আহ্বান জানান। তিনি তখন আবার কিছুদিনের জন্য মদিনায় ফিরে আসেন।
৮. মদিনায় আবারও আজান দিলেন
মদিনায় ফিরে আসার পর নবী (সা.)-এর দৌহিত্র হাসান ও হুসাইন (রা.) তাকে আবারও আজান দেওয়ার অনুরোধ করেন। বহু বছর পরে তিনি আবারও মদিনায় আজান দেন। দীর্ঘ দিন পর মদিনায় আবারও বিলালের (রা.) চিরচেনা সুর শুনে মদিনার ঘরে ঘরে আনন্দের হিল্লোল ছড়িয়ে পরে। কিছুদিন অবস্থানের চিরতরে মদিনা ত্যাগ করেন তিনি।
মদিনা থেকে ফিরে আসার পর ২০ হিজরিতে সিরিয়ার দামেশকে তিনি ইন্তেকাল করেন বিলাল (রা.)। তার কবর দামেশকের বাবুস সাগীর কবরস্থানে অবস্থিত।
সূত্র: ঢাকা পোষ্ট