মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১ আশ্বিন ১৪৩২

ইসলামী জীবন

কোরআনে নবীর পরিবারকে যে ইবাদত পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে

কোরআনে নবীর পরিবারকে যে ইবাদত পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে

সংগৃহীত

ইসলামে নামাজের গুরুত্ব অপরিসীম। নামাজের গুরুত্ব এতো বেশি যে, নামাজের মাধ্যমে মুসলিম এবং অমুসলিমের মধ্যে পাথর্ক্য তৈরি হয় বলে এক হাদিসে বর্ণিত। এবং যারা নামাজ আদায় করে না, তাদের ঘর-বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার মতো হুমকির কথা বর্ণিত হয়েছে হাদিসে। হুমকির পাশাপাশি নামাজ আদায়ের বিভিন্ন ফজিলতের কথাও বর্ণিত হয়েছে। 

হজরত আবু উসমান (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি সালমান ফারসী রা. এর সঙ্গে একটি গাছের নিচে ছিলাম। তিনি গাছের একটি শুকনো ডাল নিয়ে ঝাড়া দিলেন, এর কারণে গাছের পাতাগুলো ঝরে পড়লো। তারপর বললেন, হে আবু উসমান! আমি কেন এমন করলাম, জানতে চাইবেন না? আমি বললাম, কেন এমন করলেন?

তিনি বললেন, আমি একবার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে একটি গাছের নিচে ছিলাম, তখন তিনি সে গাছ থেকে একটি শুকনো ডাল নিলেন। তারপর তা ঝাড়া দিলেন, এতে পাতাগুলো পড়ে গেল। তখন বললেন, হে সালমান! কেন এমন করলাম জানতে চাইবে না? আমি বললাম, কেন এমন করলেন? উত্তরে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, একজন মুসলমান যখন ভালোভাবে অজু করে এবং নামাজ আদায় করে তখন তার গুনাহগুলো এভাবেই ঝরে যায় যেমন এ পাতাগুলো ঝরে পড়লো। (মুসনাদে আহমাদ)

আল্লাহ তায়া পবিত্র কোরআনে নবীকে তার পরিবারের লোকদের নামাজ আদায়ের এবং নামাজের ওপর অবিচল থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। বর্ণিত হয়েছে—

وَ اۡمُرۡ اَهۡلَكَ بِالصَّلٰوۃِ وَ اصۡطَبِرۡ عَلَیۡهَا ؕ لَا نَسۡـَٔلُكَ رِزۡقًا ؕ نَحۡنُ نَرۡزُقُكَ ؕ وَ الۡعَاقِبَۃُ لِلتَّقۡوٰی

আর আপনার পরিবারবর্গকে নামাজের আদেশ দিন ও তাতে অবিচল থাকুন, আমি আপনার কাছে কোন জীবনোপকরণ চাই না। আমিই আপনাকে জীবনোপকরণ দিয়ে থাকি। আর সংযমীদের জন্য শুভ পরিণাম। (সুরা ত্বহা, আয়াত : ১৩২)

আল্লাহ তায়ালা এই আয়াতে মহানবী (সা.)-কে বলেছেন,  আপনি আপনার পরিবারবর্গকে নামাজের আদেশ দিন এবং নিজেও এর ওপর অবিচল থাকুন।

অর্থাৎ আল্লাহ তায়ালা এই আদেশের মাধ্যমে বুঝিয়েছেন, আপনি আল্লাহর ইবাদাতের দিকে বেশি মশগুল হোন। আপনি যদি নামাজ কায়েম করেন তবে আপনার রিজিকের কোন ঘাটতি হবে না। কোত্থেকে রিযিক আসবে তা আপনি কল্পনাও করতে পারবেন। না।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন : যার যাবতীয় চিন্তা-ভাবনা দুনিয়ার প্রতি ধাবিত হয়, আল্লাহ তার যাবতীয় কর্মকান্ড বিক্ষিপ্ত করে দেন। আর তার কপালে দারিদ্র্যতা লিখে দেন। আর তার কাছে দুনিয়া শুধু অতটুকুই নিয়ে আসে, যতটুকু আল্লাহ তার জন্য লিখেছেন এবং যার যাবতীয় উদ্দেশ্য হবে আখেরাত, আল্লাহ্ তার যাবতীয় কাজ গুছিয়ে দেন, তার অন্তরে অমুখাপেক্ষীতা সৃষ্টি করে দেন। আর দুনিয়া তার কাছে বাধ্য হয়ে এসে পড়ে। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৪১০৫)

আল্লাহ তায়ালার এই আদেশ মহানবী (সা.)-এর সাথে তার পুরো উম্মতের জন্য। অর্থাৎ, মুসলিমদের জন্য জরুরি যে, তারা নিজেদের নামাজের প্রতি যত্নবান হবে এবং পরিবারের লোকেদেরকেও নামাজ আদায়ে গুরুত্ব দেবে।

সূত্র: ঢাকা পোষ্ট

সর্বশেষ:

শিরোনাম: