বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২

যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে ৪০ লাখ গুণ দ্রুতগতির ইন্টারনেট উদ্ভাবন করল জাপান

যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে ৪০ লাখ গুণ দ্রুতগতির ইন্টারনেট উদ্ভাবন করল জাপান

সংগৃহীত

ইন্টারনেট গতির ক্ষেত্রে বিশ্বে নতুন রেকর্ড স্থাপন করেছে জাপান। দেশটির ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশনস টেকনোলজি (এনআইসিটি) দাবি করেছে, তারা প্রতি সেকেন্ডে ১ লাখ ২৫ হাজার গিগাবাইট ডেটা স্থানান্তরের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে।

এই পরীক্ষায় ডেটা ১ হাজার ১২০ মাইল বা প্রায় ১ হাজার ৮০০ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করেছে। এই গতি যুক্তরাষ্ট্রের গড় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট গতির তুলনায় প্রায় ৪০ লাখ গুণ বেশি বলেও জানিয়েছেন গবেষকেরা।

লাইভ সায়েন্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এই গতি এতটাই অসাধারণ যে, ইন্টারনেট আর্কাইভে থাকা সমস্ত তথ্য চার মিনিটেরও কম সময়ে ডাউনলোড করা সম্ভব। ২০২৪ সালে সর্বশেষ রেকর্ড ছিল প্রতি সেকেন্ডে ৫০ হাজার ২৫০ গিগাবাইট—সেই রেকর্ডের চেয়েও দ্বিগুণের বেশি গতি অর্জন করেছে এবার এনআইসিটি।

রেকর্ড গড়তে গবেষকেরা নতুন ধরনের অপটিক্যাল ফাইবার ব্যবহার করেছেন। এই ফাইবারের ব্যাস মাত্র ০.১২৭ মিলিমিটার হলেও এটি প্রচলিত একক ফাইবার ক্যাবলের সমান পুরু এবং তাই বিদ্যমান অবকাঠামোতেই এটি ব্যবহারযোগ্য।

এনআইসিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গত ৩ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোতে অনুষ্ঠিত ৪৮তম অপটিক্যাল ফাইবার কমিউনিকেশন কনফারেন্সে এই গবেষণার বিস্তারিত উপস্থাপন করা হয়।

নতুন ফাইবারটির ভেতরে ১৯টি আলাদা চ্যানেল রয়েছে, যেগুলো একইসঙ্গে আলোর সংকেত বহন করে। এতে করে ডেটা ট্রান্সফারের সময় বিভ্রান্তি বা তথ্য ক্ষতি অনেক কম হয়, ফলে দীর্ঘ দূরত্বেও নির্ভরযোগ্য ও কার্যকর তথ্য পরিবহন সম্ভব হয়েছে।

২০২৩ সালের মার্চ মাসে এই গবেষক দল একই প্রযুক্তিতে উচ্চ গতির ডেটা পরিবহনের পরীক্ষা চালায়, তবে তখন তারা তুলনামূলকভাবে কম দূরত্বে সফলতা পান। এবার বৃহত্তর পরিসরে সফলভাবে ডেটা প্রেরণ এবং সংকেত সংরক্ষণে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, একটানা ২১ বার ঘূর্ণনের পর ডেটা নির্ধারিত রিসিভারে পৌঁছায়—যা ১ হাজার ১২০ মাইলের পূর্ণ দূরত্ব অতিক্রম করে।

গবেষকেরা বলছেন, এ রেকর্ড উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন, দীর্ঘ পরিসরের এবং বিস্তৃত সক্ষমতাসম্পন্ন অপটিক্যাল যোগাযোগ প্রযুক্তি উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত। ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক ডেটা চাহিদা মেটাতে এমন প্রযুক্তির বাস্তব ব্যবহার এখন সময়ের দাবি।

পরবর্তী ধাপে তারা এই প্রযুক্তিকে টেলিকম খাতে কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের জন্য কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন।

সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক

সর্বশেষ: