
সংগৃহীত
ভাবুনতো আপনার মোবাইলের গ্যালারিতে পড়ে থাকা একটা সাধারণ ছবি— হয়তো বন্ধুদের সঙ্গে তোলা, অথবা ছুটির দিনে প্রকৃতির মাঝে ক্লিক করা একটা মুহূর্ত। হঠাৎ করে সেটা জীবন্ত হয়ে উঠল! ছবিটা হাঁটছে, চারপাশে হালকা মুভমেন্ট হচ্ছে, ক্যামেরা জুম ইন-আউট করছে… আর আপনি বসে বসে দেখছেন এক ঝলক ভিডিও।
ভিডিও বানানো যাদের কাছে এখনো কঠিন বা সময়সাপেক্ষ মনে হয়, তাদের জন্য ইউটিউব আনছে এক বিশাল চমক— ‘ইমেজ টু ভিডিও’ নামের নতুন একটি এআই (AI) ফিচার। যার মাধ্যমে আপনি একটি স্থিরচিত্র দিয়েই তৈরি করে ফেলতে পারবেন ৬ সেকেন্ডের আকর্ষণীয় ভিডিও। আর সবচেয়ে মজার বিষয় হলো এটি করতে আপনার ভিডিও এডিটিং শেখা বা ক্যামেরা হাতে ধরা, কোনোটাই লাগবে না।
কীভাবে কাজ করবে এই টুল?
গুগলের তৈরি শক্তিশালী ভিডিও জেনারেশন মডেল Veo 2 এর ওপর ভিত্তি করেই তৈরি হয়েছে এই টুল। এটি ইউজারদের একটি ছবি থেকে অল্প সময়েই তৈরি করে দিতে পারবে শর্ট ভিডিও।
বর্তমানে ফিচারটি শুধু নির্ধারিত কিছু প্রম্পট (নির্দেশনা) বেছে নেওয়ার মাধ্যমে কাজ করে। মানে আপনি এখনই নিজের মতো করে কিছু টাইপ করে এআইকে নির্দেশ দিতে পারবেন না। তবে প্রস্তুতকৃত অপশনগুলোর মধ্য থেকে যেটা বেছে নেবেন, এআই সেটি অনুযায়ী ভিডিও তৈরি করে দেবে।
ভিডিওর দৈর্ঘ্য এখন সর্বোচ্চ ৬ সেকেন্ড, তবে ভবিষ্যতে গুগল এই সময়সীমা আরও বাড়াতে পারে।
শুধু ইউটিউবে নয়, গুগল ফটোজেও থাকছে চমক
এই এআই প্রযুক্তি শুধু ইউটিউব শর্টসেই সীমাবদ্ধ থাকছে না। গুগল ফটোজ অ্যাপেও আসছে নতুন ফিচার— ‘রিমিক্স’।
এই টুলের মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা নিজের ছবিকে রূপান্তর করতে পারবেন কমিক স্টাইলে, স্কেচ স্টাইলে বা থ্রিডি অ্যানিমেশনে।
এছাড়া এখান থেকেও ছবি দিয়ে বানানো যাবে ছোট ভিডিও ক্লিপ (সর্বোচ্চ ৬ সেকেন্ড)। এই সব ফিচার পাওয়া যাবে গুগল ফটোজ-এর নতুন ‘ক্রিয়েট’ ট্যাবে।
এখনো পরীক্ষামূলক, তবে শিগগিরই আসছে
গুগলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই ফিচারগুলো এখনো পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে। মানে সব কিছু এখনো পুরোপুরি নিখুঁত নয়। তাই অনেক সময় ভিডিওর আউটপুট হয়তো প্রত্যাশামতো নাও হতে পারে।
তবে ইউজাররা চাইলে প্রতিটি ভিডিওতে ‘লাইক’ বা ‘ডিজলাইক’ দিয়ে তাদের মতামত জানাতে পারবেন। গুগল বলছে, এই ফিডব্যাকই ভবিষ্যতে টুলগুলো আরও উন্নত করতে সাহায্য করবে।
যেহেতু এসব ছবি ও ভিডিও তৈরি হচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে, তাই গুগল প্রত্যেকটি কনটেন্টে গোপনে যুক্ত করেছে একটি অদৃশ্য ওয়াটারমার্ক—‘সিনথআইডি’ (SynthID)। এটি দিয়ে শনাক্ত করা যাবে কোন কনটেন্টটি এআই দিয়ে বানানো হয়েছে।
বর্তমানে ‘ইমেজ টু ভিডিও’ এবং ‘রিমিক্স’ ফিচার দুটি শুধু যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডে ব্যবহার করা যাবে। তবে গুগল জানিয়েছে, পরবর্তীতে এই ফিচার ধাপে ধাপে অন্য দেশেও চালু করা হবে।
ছবি থেকে ভিডিও তৈরি করার যুগে প্রবেশ করছে কনটেন্ট দুনিয়া। ইউটিউবের এই এআই ফিচার শুধু সময় বাঁচাবে না বরং যারা ভিডিও বানাতে চাইলেও ঝামেলার ভয়ে শুরু করতে পারছেন না- তাদের জন্য খুলে দেবে নতুন দরজা।
সূত্র: কালবেলা