
সংগৃহীত
ইউরেনাস গ্রহকে প্রদক্ষিণ করা নতুন একটি চাঁদ আবিষ্কার করেছে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ। এস/২০২৫ ইউ১ নামের চাঁদটির ব্যাস মাত্র ১০ কিলোমিটার বা ৬ মাইল। আকারে ছোট হলেও নেয়ার-ইনফ্রারেড ক্যামেরা ব্যবহার করে গত ২ ফেব্রুয়ারি চাঁদটির সন্ধান পায় জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ। এরপর ধারণ করা ছবি পর্যালোচনা করে চাঁদটির সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য জানা যায়। নতুন এই আবিষ্কারের ফলে ইউরেনাসের চাঁদের সংখ্যা বর্তমানে ২৯টি।
ইউরেনাস গ্রহ বিজ্ঞানীদের কাছে তার অস্বাভাবিক বৈশিষ্ট্যগুলোর জন্য পরিচিত। গ্রহটির কাত হওয়া অক্ষ ও সুন্দর বলয় ব্যবস্থা বেশ অসাধারণ। বিজ্ঞানীদের ধারণা, নতুন চাঁদটি ইউরেনাসের কেন্দ্র থেকে প্রায় ৫৬ হাজার কিলোমিটার দূরে প্রদক্ষিণ করছে। ছোট আকার ও ক্ষীণ উজ্জ্বলতার কারণে চাঁদটি এত দিন অদৃশ্য ছিল। বিজ্ঞানীরা চাঁদের উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য ছয় ঘণ্টা ধরে সিরিজ ছবি ধারণ করেন।
বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, আমাদের সৌরজগতে ইউরেনাস আলাদাভাবে দেখা যায়। অন্য যেকোনো গ্রহের তুলনায় এই গ্রহের অনেক ছোট ছোট চাঁদ রয়েছে। এই চাঁদগুলো জটিলভাবে ইউরেনাসের বলয় ব্যবস্থার সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া করে। নতুন আবিষ্কার করা চাঁদটির নামকরণ অস্থায়ীভাবে করা হয়েছে। শিগগিরই আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞান ইউনিয়ন আনুষ্ঠানিকভাবে চাঁদটির নামকরণ করবে। ইউরেনাসের অন্যান্য চাঁদের মতো, এটির নামকরণ সম্ভবত শেক্সপিয়ার বা আলেক্সান্ডার পোপের লেখা কোনো চরিত্রের নামে হতে পারে।
ইউরেনাসের পাঁচটি প্রধান চাঁদ রয়েছে। চাঁদগুলো তুলনামূলকভাবে বড় ও গোলাকার। এগুলো হলো মিরান্ডা, এরিয়েল, আম্ব্রিয়েল, টাইটানিয়া ও ওবেরন। মিরান্ডা চাঁদ অদ্ভুত ও বিশৃঙ্খল গঠনের জন্য পরিচিত। এর পৃষ্ঠে বিশাল গিরিখাত, উঁচু পর্বত এবং বিভিন্ন ধরনের ভূতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, অতীতে কোনো শক্তিশালী সংঘর্ষের ফলে এর পৃষ্ঠ ভেঙেচুরে গেছে। আরেক চাঁদ এরিয়েল ইউরেনাসের সবচেয়ে উজ্জ্বল চাঁদ। এর পৃষ্ঠে নতুন করে গঠিত গিরিখাত রয়েছে। এরিয়েলের ঠিক বিপরীত চাঁদ আম্ব্রিয়েল। এটি ইউরেনাসের অন্যতম অন্ধকার চাঁদ। এর পৃষ্ঠে অসংখ্য গর্ত বা ক্রেটার রয়েছে। টাইটানিয়া ইউরেনাসের সবচেয়ে বড় চাঁদ। এর পৃষ্ঠে বিশাল গিরিখাত ও ফাটল রয়েছে। ইউরেনাসের দ্বিতীয় বৃহত্তম চাঁদ ওবেরনের পৃষ্ঠও অসংখ্য গর্তে ভরা ও আম্ব্রিয়েলের মতোই বেশ পুরোনো।
সূত্র: প্রথম আলো