শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১

জবির দ্বিতীয় সমাবর্তনের অপেক্ষায় ১৮ হাজার শিক্ষার্থী

জবির দ্বিতীয় সমাবর্তনের অপেক্ষায় ১৮ হাজার শিক্ষার্থী

সংগৃহীত

জগন্নাথ কলেজ থেকে ২০০৫ সালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রা শুরু। বিশ্ববিদ্যালয়ে হিসেবে যাত্রার ১৮ বছরে এই শিক্ষাঙ্গনটিতে সমাবর্তন হয়েছে মাত্র একবার। ২০২০ সালের ১১ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর পেরিয়ে গেল প্রায় ৪ বছর। ৪ বছরে প্রায় ১৮ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী সমাবর্তনের জন্য অপেক্ষায় রয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দফতর জানাচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের আংশিক শিক্ষার্থী প্রথম সমাবর্তনে অংশ নেন। সর্বশেষ তথ্য মতে বেশিরভাগ বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা স্নাতক শেষ করেছেন। সেই হিসেবে ২০১৩ -১৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক, স্নাতকোত্তর, এমফিল ও পিএইচডিধারী প্রায় ১৮ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী সমাবর্তনের উপযুক্ত হয়েছেন। 

এরআগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১৫ বছর পর ২০২০ সালে প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। পুরাণ ঢাকার ধূপখোলা মাঠে রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদের উপস্থিতিতে ১৯ হাজার শিক্ষার্থী কালো গাউনে সমাবর্তন উদযাপন করেন।

জানা যায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী এবং তৎকালীন শাখা ছাত্রলীগের নেতৃত্বে নেতাকর্মীদের আন্দোলনের তোপের মুখে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রথম সমাবর্তনের আয়োজন করে। যা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা লগ্নের ১৫ বছর পরে ২০২০ সালের ১১ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয়।

প্রথম সমাবর্তনের তিন বছর পরে শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে ২০২৩ সালের শুরুর দিকে সমাবর্তনের দিনক্ষণ চূড়ান্ত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে মার্চে প্রায় ১৪ হাজার শিক্ষার্থীকে নিয়ে দ্বিতীয় সমাবর্তনের আয়োজন করা হবে বলে জানানো হয়। কিন্তু সাবেক রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলরের মেয়াদ ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে শেষ হওয়ায় সমাবর্তনের অনুষ্ঠান পিছিয়ে দেয় বিশ্ববিদ্যালয়। একইসঙ্গে প্রশাসন জানায় নতুন রাষ্ট্রপতি আসলে শীঘ্রই দ্বিতীয় সমাবর্তনের আয়োজন করা হবে। তবে এখন পর্যন্ত দ্বিতীয় সমাবর্তন নিয়ে কোনো প্রস্তুতি নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয়। ফলে দ্বিতীয় সমাবর্তন নিয়ে অনিশ্চয়তায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮ হাজার শিক্ষার্থী। 

এদিকে সমাবর্তন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা বলছেন ভিন্ন কথা। তারা বলছেন, 'প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উচিত যথা সময়ে সমাবর্তনের আয়োজন করা। তাহলে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবনের সুন্দর সমাপ্তি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে প্রাণ চঞ্চলতা ফিরে আসে। অন্যদিকে সমাবর্তনের স্থান ধূপখোলা মাঠে নাকি কেরানীগঞ্জে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসে হবে তা নিয়েও এখনো সংশয়ে রয়ে গেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা শুনেছিলাম গত বছরের মার্চে সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু, নতুন বছরের মার্চ চলে আসার মতো হলো। অথচ এখনো সমাবর্তন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো উদ্যোগ দেখলাম না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কখনোই সমাবর্তন নিয়ে আন্তরিকতা দেখায়নি। এর আগের সমাবর্তন ছাত্রলীগ এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ফলস্বরূপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। আমরা স্নাতক, স্নাতকোত্তর শেষ করেছি দুই বছরের বেশি সময় হতে চলল অথচ বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের বহুল প্রতীক্ষিত সমাবর্তনে এখনো অংশগ্রহণ করতে পারলাম না এটা হতাশাজনক। 

তিনি আরো বলেন, সবার স্বপ্ন থাকে বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শেষ করার পরে সমাবর্তন পাওয়ার। আমাদের মতো অনেক প্রাক্তন বর্তমান শিক্ষার্থীরা সমাবর্তন কবে অনুষ্ঠিত হবে তা জানার জন্য মুখিয়ে আছেন। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন উপাচার্য এসেছেন, আশা করছি তিনি খুব দ্রুত বিষয়টির ওপর গুরুত্বারোপ করে দ্বিতীয় সমাবর্তন আয়োজনের বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেন, আমরা অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের মিটিং করে চ্যান্সেলরের অনুমতি সাপেক্ষে এই বছরের অক্টোবরে সমাবর্তন আয়োজনের কথা ভাবছি। যেহেতু আমাদের সমাবর্তনের কোথায় হবে সেটা নিয়েও প্রশ্ন আছে, আমি সে বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলব। 

সূত্র: ডেইলি বাংলাদেশ

সর্বশেষ: