শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

৭৫ লাখ টাকা খরচে ২ বছরেই বিক্রি ৩৫ লাখ টাকার মাল্টা!

৭৫ লাখ টাকা খরচে ২ বছরেই বিক্রি ৩৫ লাখ টাকার মাল্টা!

৭৫ লাখ টাকা খরচে ৮ একর জমিতে মাল্টা চাষ করে ২ বছরেই ৩৫ লাখ টাকার মাল্টা বিক্রি করে সফল হয়েছেন লক্ষ্মীপুর পৌরসভার পশ্চিম লক্ষ্মীপুর এলাকার মাল্টা চাষি প্রবাস ফেরত যুবক আজিম ভূঁইয়া। শুরুতে ১০ লাখ টাকার লোকসান হলেও এখন তিনি মাল্টার বাম্পার ফলন পেয়ে লাভবান হচ্ছেন। চলতি মৌসুমে তার বাগানে ২৫-৩০ টন মাল্টার ফলন হয়েছে। গত বছর ১০ লাখ টাকার মাল্টা বিক্রি করেন। এবছর যা ফলন হয়েছে ততে ২৫ লাখ টাকার মাল্টা বিক্রি করতে পারবেন বলে জানান তিনি। তার এই বিশাল বাগানটি দেখতে প্রতিদিন মানুষ ভিড় করছে।

জানা যায়, ৫ বছরের চেষ্টায় তিনি নিজেকে একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে পেরেছেন। লক্ষ্মীপুর পৌরসভার পশ্চিম লক্ষ্মীপুর এলাকার বসিন্দা তিনি। ২০১৩ সালে দক্ষিণ কোরিয়ায় চাকরি করতে যান। সেখান থেকে সাড়ে ৩ বছর পর দেশে ফিরে আসেন। প্রবাস থেকে ফিরে এসে দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের চরলক্ষ্মী গ্রামে সাড়ে ৮ একর জমি ১০ বছরের জন্য লীজ নিয়ে মাল্টার বাগানটি করেন। এবছর তার বাগানে ২৫-৩০ টন মাল্টার ফলন হয়েছে যার বাজার মূল্য প্রায় ২৫ লাখ টাকা। মাল্টা চাষে তাকে সফল হতে দেখে আরো অনেকেই মাল্টা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।

তার বাগানে মাল্টার পাশাপাশি বরই, আম, পেয়ারা, নারকেল, আপেল, বাউকুল, বারি-৪ ও হিমসাগর আমের গাছও রয়েছে। ছোট ভাই মোক্তার ভূঁইয়াসহ তিনি এখন বাগানটি দেখাশোনা করেন। এছাড়াও ১৫-২০ জন শ্রমিক তার বাগানে নিয়মিত কাজ করে।

উদ্যোক্তা আজিম ভূঁইয়া বলেন, বিদেশ থেকে ফিরে কোনো অভিজ্ঞতা ছাড়াই মাল্টার চাষ শুরু করি। এতে প্রায় ১০ লাখ টাকার মতো ক্ষতি হয়। সেই ক্ষতি খেকে অভিজ্ঞতা নিয়ে নিজের মতো করে আবার মাল্টা চাষ শুরু করি। এখন কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা নিয়মিত বাগান পরিদর্শন করেন এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করেন।

তিনি আরো বলেন, বাগানটি করতে প্রায় ৭৫ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এবছর মাল্টার ব্যাপক ফলন হয়েছে। এই টাকা উঠাতে প্রায় কয়েক বছর লাগবে। মাল্টার পাশাপাশি বরই, আম, পেয়ারা, নারকেল, আপেল, বাউকুল, বারি-৪ ও হিমসাগর আমের গাছও রয়েছে আমার বাগানে। বাগানে যারা আসেন, তারা নিজ হাতেই গাছ থেকে মাল্টা সংগ্রহ করেন। ফলে কোনো প্রকার ফরমালিন বা বিষাক্ত কোন কিছু ব্যবহার করা হয় না। গত বছর ১০৯ লাখ টাকার মাল্টা বিক্রি করেছিলাম। এই বছর আমার বাগানে যা মাল্টা রয়েছে তা প্রায় ২৫ লাখ টাকা বিক্রি করতে পারবো। ধীরে ধীরে মাল্টার ফলন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আশা করছি এবছরের তুলনায় আগামীতে মাল্টার আরো বেশি ফলন হবে।

লক্ষ্মীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. জাকির হোসেন বলেন, এই উপজেলায় কয়েকজন কৃষক মাল্টা চাষ করছেন। বর্তমানে জেলায় ২০ হেক্টর জমিতে মাল্টা চাষ হচ্ছে। আজিমের বাগানটি বেকার তরুণদের জন্য আদর্শ। তিনি আরো বলেন, আজিমসহ ৩ জনের নাম বঙ্গবন্ধু কৃষি পদকের জন্য প্রস্তাব করেছি। সকল কাগজপত্র ঢাকায় মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আশা করছি পরিশ্রমের মূল্যায়ন হিসেবে তারা কৃষি পদক পাবেন।

দৈনিক বগুড়া