শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সিডলেস বারোমাসি লেবু চাষে সামাউলের সাফল্য!

সিডলেস বারোমাসি লেবু চাষে সামাউলের সাফল্য!

টুঙ্গিপাড়ায় সিডলেস বারমাসী লেবু চাষে সফল হয়েছেন কৃষক সামাউল ইসলাম। বাগান থেকে সারাবছর লেবু বিক্রি করতে পারেন তিনি। তার বাগানের উৎপাদিত লেবু স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সরবরাহ হচ্ছে।

জানা যায়, কৃষক সামাউল ইসলাম গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার কদমপুর গ্রামের বাসিন্দা। সিডলেস লেবুর বাগান করে এলাকায় বেশ সাড়া ফেলেছেন তিনি। প্রতিদিন তিনি তার বাগান থেকে ১০ হাজার লেবু বিক্রি করছেন। বিভিন্ন স্থানের পাইকাররা প্রতিদিন তার বাগান থেকে লেবু কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। নিজের সাফল্যের পাশাপাশি তিনি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছেন। বর্তমানে তার বাগানে ২৫ জন শ্রমিক কাজ করছেন। লেবু বাগান করে বছরে প্রায় ৭৫ লাখ টাকা আয় করছেন তিনি। তার সফলতা দেখে অনেকেই লেবু চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।

কৃষক সামাউল ইসলাম বলেন, আমি কৃষি গবেষনা ইনস্টিটিউটের গোপালগঞ্জ কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের সহযোগীতায় ৩ বছর আগে ১৫ বিঘা জমি লিজ নিয়ে সিডলেস বারোমাসি লেবুর চাষ শুরু করি। বর্তমানে আমার বাগানে ১২ হাজার লেবু গাছ রয়েছে। লেবুর সারাবছরই চাহিদা থাকে। তবে ফাল্গুন, চৈত্র ও বৈশাখ মাসে এ লেবুর চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকে।

তিনি আরো বলেন, এই তিন মাস প্রতিটি লেবু ৫ থেকে ৭ টাকা দরে বিক্রি করি। তখন প্রায় ৪৫-৬০ লাখ টাকার লেবু বিক্রি হয়। আর বাকি ৯ মাস প্রতিটি লেবু ১-৩ টাকা দরে বিক্রি করি। তখন প্রায় ৪০ লাখ টাকার লেবু বিক্রি করতে পারি। পাইকাররা বাগানে এসে নগদ টাকা দিয়ে লেবু কিনে নিয়ে যায়। তারপর তারা গোপালগঞ্জ , ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করেন।

কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের গোপালগঞ্জ কৃষি গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড.এমএম কামরুজ্জামান বলেন, আমরা সামাউলের বাগানটি পরিদর্শন করেছি। তিনি তার বাগানে লেবুর পাশাপাশি মিশ্র ফলের বাগান করেছেন। তার বাগানে বিভিন্ন প্রজাতির কুল, মাল্টা, ড্রাগনসহ বিভিন্ন জাতের ফল রয়েছে। ৩ বছর আগে আমাদের পরামর্শ অনুযায়ী সিডলেস বারোমাসি লেবুর চাষ শুরু করেন। বর্তমান তিনি একজন সফল কৃষক। লেবু চাষে লাভান হতে পেরেছেন।

মুকসুদপুর উপজেলার বায় বল্লভদি গ্রামের লেবুর পাইকার মোঃ কামাল হোসেন বলেন, সামাউলের বাগানটি অনেক বড়। আমি প্রতিদিন তার বাগান থেকে প্রায় ৩ হাজার লেবু সংগ্রহ করি। আমি আশেপাশের বিভিন্ন হাটবাজারে বিক্রি করে। এই ৩ হাজার লেবু বিক্রি করে আমার প্রায় ২ হাজার টাকা আয় হয়।

গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. অরবিন্দ কুমার রায় বলেন, গোপালগঞ্জ জেলার মাটি লেবুসহ বিভিন্ন ফল চাষের জন্য উপযোগী। লেবু চাষ অন্তত্য লাভজনক। কৃষক সামাউল সিডলেস বারোমাসি লেবু চাষ করে সফল হয়েছেন। পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন জাতের ফলের চাষও করছেন। আমরা সামাউলকে সহযোগীতা ও নতুন নতুন আরো চাষিদের প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দিচ্ছি।

দৈনিক বগুড়া