শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মজুরি বাড়ানোর দাবিতে কয়েদিদের মামলা

মজুরি বাড়ানোর দাবিতে কয়েদিদের মামলা

কারাগারের কাজে মজুরি বাড়ানোর দাবিতে জার্মানির কেন্দ্রীয় সাংবিধানিক আদালতে মামলা করেছেন দুই কয়েদি। তাদের অভিযোগ, কারা কর্তৃপক্ষ কাজের বিনিময়ে যে মজুরি দেয়, তা দিয়ে পরিবারের খরচ জোগানো সম্ভব হয় না, বরং মামলার খরচ বহন করতে গিয়ে ঋণগ্রস্ত হতে হয়। এই পরিস্থিতি কারামুক্তির পর সমাজে পুনর্বাসন কঠিন করে তুলবে বলে দাবি করেছেন বাভারিয়া ও নর্থ রাইন-ওয়েস্টফালিয়া রাজ্যের ওই দুই কয়েদি।

মামলাটির শুনানি শুরু হয়েছে গত বুধবার (২৭ এপ্রিল)। জার্মানির ফেডারেল কনস্টিটিউশনাল কোর্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট ডোরিস ক্যোনিগ মনে করেন, জার্মান কারাগারগুলোতে যে মজুরি দেওয়া হয়, তা সংবিধানে কয়েদিদের পুনর্বাসনের বিষয়ে বর্ণিত ধারার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ কি না যাচাই করে দেখা দরকার।

তবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা বলছেন, কয়েদিদের মজুরি নির্ধারণ করা হয় কর্মদক্ষতার ভিত্তিতে। তাদের অনেকেই সামান্য লেখাপড়া ও দক্ষতা নিয়ে কাজ করেন। বিদেশিদের অনেকে জার্মান ভাষা জানেন না বলে তাদের ‘উৎপাদনক্ষমতা’ আরও কম। এর বাইরে অনেক কয়েদি শারীরিকভাবে দুর্বল বা মানসিকভাবে বিসাদগ্রস্ত। কেউ আবার নেশাগ্রস্ত বলে কোনো কাজ ঠিকভাবে করতেও পারেন না। সব মিলিয়ে কারাগারে যে মজুরি দেওয়া হয় তা যৌক্তিক বলে দাবি রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের।

কয়েদিদের পারিশ্রমিক
ক্যোনিগ জানান, জার্মানিতে কয়েদিদের কাজভেদে ঘণ্টায় ১ দশমিক ৩৭ ইউরো থেকে ২ দশমিক ৩০ ইউরো (১২৪ টাকা থেকে প্রায় ২০৮ টাকা) মজুরি দেওয়া হয়। এর ফলে প্রত্যেক কয়েদি দৈনিক গড়ে ১১ ইউরো থেকে সর্বোচ্চ ১৮ দশমিক ৪০ ইউরো (৯৯৭ টাকা থেকে প্রায় ১৬৬৭ টাকা) আয় করতে পারেন।

অবশ্য কয়েদিদের পেছনে খরচও কম নয়। তাদের থাকা-খাওয়া তো বটেই, বেকার বলে বিমার টাকাও দিতে হয় জার্মান সরকারকে। কয়েদিরা কাজের বিনিময়ে যা আয় করেন, তার সাত ভাগের তিন ভাগ কফি, সিগারেট, খেলাধুলার সামগ্রী প্রভৃতি কেনার জন্য খরচ করতে পারেন।

বাভারিয়া অঞ্চলের বাদি মনে করেন, কয়েদিদের কম পারিশ্রমিকে কাজ করিয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে কারা কর্তৃপক্ষ। বাভারিয়ার বিচার মন্ত্রণালয় অবশ্য তা অস্বীকার করেছে। নর্থ রাইন-ওয়েস্টফালিয়ার বিচার মন্ত্রণালয়ও বলেছে, বাদিদের ধারণা ভুল। মন্ত্রণালয় মনে করে, কয়েদিদের কাজ লাভজনক মনে করার মতো নয়। বরং সমাজে পুনর্বাসিত হতে সহায়তা করার উদ্দেশ্যেই তাদের দিয়ে কাজ করানো হয়।

সূত্র: ডয়েচে ভেলে

দৈনিক বগুড়া