শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

জার্মানিতে বৈধ হচ্ছে আবর্জনা থেকে খাবার খোঁজা

জার্মানিতে বৈধ হচ্ছে আবর্জনা থেকে খাবার খোঁজা

গ্রিফসওয়াল্ডের পুলিশ অফিসাররা সালোমে কে নামে এক ব্যক্তিকে আটক করার পর তার ব্যাকপ্যাক থেকে একটি শুকনো লেটুস এবং কয়েকটি বাদামী কলা খুঁজে পান। এগুলো হয়তো একদিন জাদুঘরে প্রদর্শিত হতে পারে। সেখানে বলা হবে, এই খাবারের কারণে, জার্মানরা ২০২২ সালে আদালতে হাজির হয়েছিল। কারণ ডাম্পস্টার ডাইভিং অর্থাৎ আবর্জনার পাত্র থেকে খাদ্যযোগ্য খাবার খুঁজে বের করা জার্মানিতে অবৈধ।

নিওলিবারেল ফ্রি ডেমোক্র্যাটসের (এফডিপি) আইনমন্ত্রী মার্কো বুশম্যান এবং সেম ইওসডেমির (সবুজ) কৃষিমন্ত্রী অবশ্য এ বিষয়টি নিয়ে আইনি পথে এগোচ্ছেন। তারা চান, সুপার মার্কেটের আবর্জনার পাত্রে ভোজ্য খাবারের সন্ধান করার জন্য আর কখনও যাতে কারও শাস্তি না হয়। শর্ত থাকবে, কোনো অনুপ্রবেশ বা সম্পত্তির ক্ষতি যেন না হয়। ইওসডেমির বলেন, 'যে আবর্জনা থেকে খাবারের খোঁজ করে, তার শাস্তি হওয়া ঠিক নয়।'

ফেডারেল মন্ত্রীরা হামবুর্গ রাজ্যের প্রস্তাবটিকে সমর্থন করছেন। এটি তথাকথিত 'ফৌজদারি ও প্রশাসনিক জরিমানা কার্যক্রমের' নির্দেশিকার একটি সংশোধনী।

জার্মানির কিছু অংশে শিক্ষার্থীদেরও খাবারের জন্য আবর্জনা ফেলার বড়সড় পাত্রগুলোর আশপাশে ঘুরতে দেখা গেছে। তারা এই উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়েছে। তবে ফেডারেল অ্যাসোসিয়েশন অফ দ্য জার্মান ফুড ট্রেডের গণমাধ্যমের মুখপাত্র ক্রিস্টিয়ান ব্যোটচার এ বিষয়ে ততটা উৎসাহী নন।

তিনি বলেন, 'আইনি দৃষ্টিকোণ থেকে এমন পদক্ষেপের কোনও প্রয়োজন নেই। পাবলিক প্রসিকিউটররা যদি দেখেন আবর্জনা ক্যানগুলো তালা দিয়ে সুরক্ষিত নয় বা ঘিরে রাখা কোনো এলাকায় অবস্থিত নয়, তারা এই ধরনের বিচার প্রত্যাহার করতে পারেন। দুই মন্ত্রীর দেওয়া প্রস্তাবনা তাই অপ্রয়োজনীয়।'

পরিসংখ্যান বলছে, জার্মানিতে মারাত্মক খাদ্য অপচয় করা হয়। যার পরিমাণ বছরে প্রায় ১১০ লাখ টন। তবে খাদ্য শিল্প এই ক্ষতির সাত শতাংশের জন্য দায়ী। তার কথায়, মন্ত্রীদের এই উদ্যোগটি খাবারের অপচয় কমাতে কোনো কাজে আসবে না।

জাতিসংঘের খাদ্য বর্জ্য সূচক (২০২১) অনুসারে, পরিবারের ভিত্তিতে খাবার অপচয়ের ক্ষেত্রে জার্মানি ইউরোপের শীর্ষস্থানীয়। এছাড়া শুধুমাত্র চীন, ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং জাপান প্রচুর খাবার ফেলে দেয়।

জাতিসংঘ রিপোর্ট করেছে যে বিশ্বব্যাপী নয় হাজার ৩১০ লাখ টন খাবার আসলে আবর্জনা পাত্রে গিয়ে মেশে। এদিকে ৮০ কোটির বেশি মানুষ অপুষ্টিতে ভোগেন এবং ক্ষুধার্ত। জার্মান সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে মোট খাদ্য অপচয় অর্ধেক করার লক্ষ্য নিয়েছে। তবে এর ফলে সারা দেশে ৯৬০টি খাদ্য ব্যাংকে আরও বেশি খাবার জমা পড়ার সম্ভাবনা আংশিক।

ক্রিস্টিয়ান ব্যোটচার বলেন, আবর্জনার পাত্র থেকে বের করা খাবার স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক। ঝুঁকি যথাসম্ভব কম রাখতে আমরা আবর্জনার ক্যানটি তালা দিয়ে রাখি বা সেগুলো বন্ধ করে দিই।'

দৈনিক বগুড়া