
সংগৃহীত
চারপাশের সবাই হয়তো বিয়ে করে ফেলেছে। বন্ধুদের বিয়েতে দাওয়াত খেয়ে ফিরছেন, আর পরিবার থেকেও চাপ আসছে— ‘তুমি কবে বিয়ে করবে?’ কিন্তু কখনো নিজেকে জিজ্ঞেস করেছেন— ‘আমি কি আসলেই বিয়ের জন্য প্রস্তুত?’
বিয়ে মানে শুধু একটা অনুষ্ঠানে সাজগোজ করা না। এটা জীবনের নতুন একটা অধ্যায়, যেখানে একজন মানুষকে সঙ্গী হিসেবে পাশে নেওয়া হয়, সুখ-দুঃখ ভাগ করে নেওয়া হয়, আর একসঙ্গে পথচলা শুরু হয়।
তাহলে আপনি কতটা প্রস্তুত, সেটা বুঝতে নিচের ৬টি দিক দেখে নিজেকে একটু যাচাই করে নিন।
১. আবেগ কতটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন?
বিয়ের পর জীবনে শুধু খুশির মুহূর্ত আসবে না। রাগ, ঝামেলা, হতাশা— এগুলোও থাকবে। তাই প্রশ্ন হলো :
-আপনি কি অল্পতেই রেগে যান?
-মতের অমিল হলে ঠাণ্ডা মাথায় সমাধান করতে পারেন?
মনে রাখবেন, বিয়ে টিকিয়ে রাখতে হলে ধৈর্য, সহনশীলতা আর বোঝাপড়া দরকার। সম্পর্ক মানে শুধু ভালো থাকা না, খারাপ সময়েও পাশে থাকা।
২. আর্থিকভাবে প্রস্তুত তো?
‘বিয়ের পর দেখা যাবে’— এমন ভাবা অনেক সময় সমস্যার কারণ হয়।
আগে ভাবুন- আপনি নিজের খরচ চালাতে সক্ষম?
-সংসার চালানোর মতো আয় আছে?
-কিছু কি সঞ্চয় করছেন?
বিয়ের পর দায়িত্ব বাড়ে, খরচও বাড়ে। তাই এখন থেকেই নিজের আয়-ব্যয়ের হিসাব গুছিয়ে নিতে হবে।
৩. আপনি কতটা পরিণত?
জীবনের মতোই দাম্পত্য জীবনেও ভুল বোঝাবুঝি, ঝগড়া হতেই পারে। তখন আপনি কি পারবেন :
-অন্যের ভুল মাফ করতে?
-নিজের কিছু স্বভাব বদলাতে?
যদি সবসময় মনে হয়— ‘আমি কেন বদলাব?’ বা ‘এই দায়িত্ব আমার না’— তাহলে হয়তো এখনই সময় না। মানসিকভাবে আরও একটু প্রস্তুত হওয়া দরকার।
৪. নিজেকে কতটা চেনেন?
নিজের ভালো দিক তো সবাই জানে। কিন্তু নিজের কিছু অভ্যাস হয়তো সঙ্গীর জন্য বিরক্তির কারণ হতে পারে।
-আপনি কেমন একজন পার্টনার হবেন?
-আপনার কোন স্বভাবটা অন্যের জন্য কঠিন হতে পারে?
এসব চিন্তা করে, দরকার হলে নিজেকে একটু বদলাতে পারলেই সম্পর্কটা সুন্দর হয়।
৫. সহযোগিতা করতে পারবেন?
বিয়ে মানে শুধু দুজন মানুষ না— দুটি পরিবারও যুক্ত হয়। তাই শুধু সঙ্গীর সাথেই না, তার পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গেও সম্পর্ক গড়তে হয়।
-আপনি কি নতুন সম্পর্ক গড়তে আগ্রহী?
-দায়িত্ব ভাগ করে নিতে রাজি?
যদি মনে হয়, সবকিছু একা করতে হবে না, বরং একসঙ্গে করব— তবেই আপনি সঠিক পথে আছেন।
৬. আপনার আর সঙ্গীর ভবিষ্যৎ ভাবনা কি একরকম?
সব বিষয়ে একমত হওয়া জরুরি না। কিন্তু কিছু গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বোঝাপড়া থাকা দরকার।
যেমন :
-ক্যারিয়ার, ধর্মীয় বিশ্বাস, সন্তান নেওয়ার চিন্তা— এসব নিয়ে আপনারা কতটা একমত?
-লাইফস্টাইল বা খাওয়া-দাওয়ার অভ্যাসেও কতটা মিল আছে?
এই বিষয়গুলো আগে থেকেই পরিষ্কার করে কথা বলুন। যাতে পরে গিয়ে চমকে যেতে না হয়।
তাহলে আপনি কি বিয়ের জন্য প্রস্তুত?
চট করে দেখে নিন-
-আপনি আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন?
-আর্থিকভাবে গুছিয়ে উঠেছেন?
-নিজের ভুল বুঝলে মানেন?
-নিজেকে ভালো করে চেনেন ও বদলাতে রাজি?
-দায়িত্ব ভাগ করে নিতে চান?
-হবু সঙ্গীর সঙ্গে বোঝাপড়া ভালো?
এই প্রশ্নগুলোর বেশিরভাগের উত্তর যদি ‘হ্যাঁ’ হয়— তাহলে আপনি অনেকটাই প্রস্তুত!
আর যদি কিছু বিষয় নিয়ে এখনো দ্বিধা থাকে, সেটা একদম স্বাভাবিক। সময় নিয়ে নিজেকে প্রস্তুত করুন। কারণ বিয়ে হোক ভালোবাসা আর সম্মানের জায়গা থেকে— সমাজ বা পরিবারের চাপে নয়।
স্মার্ট সিদ্ধান্ত নিন, ভালোবাসায় ভরপুর ভবিষ্যৎ গড়ুন। বিয়ে হোক চাওয়ার জন্য, চাপের জন্য নয়।
সূত্র: কালবেলা