
সংগৃহীত
বগুড়ার দই। নামের ভিতরেই যেন লুকিয়ে আছে শত বছরের ঐতিহ্য। বগুড়াকে অনেকেই বলেন দইয়ের রাজধানি। মূলত বগুড়ার শেরপুর ঐতিহ্যবাহী দইয়ের জন্য বিক্ষ্যাত। বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠানে ভোজনবিলাসীদের পরিতৃপ্ত খাবারের পর অপূর্ণ থেকে যায় স্বাদে ও গুনে ভরা শেরপুরের দই। সামাজিক প্রীতি ভোজের শেষ পাতে দই না হলে যেন চলেই না।
জানা যায়, শেরপুরের ঘোষ পরিবারের ঘেটু ঘোষ প্রথম টক দই বানানো শুরু করেন। ২৫০ বছর আগে দইয়ের ঐতিহ্য দেশের গন্ডি পেরিয়ে স্থান দখল করেছে বিশ্বে জুড়ে। আর এই বিশ্বখ্যাতি অর্জনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করেছে বগুড়ার শেরপুরের দইয়ের কারিগরেরা। সেই সাথে দইয়ের ঐতিহ্য রক্ষার পাশাপাশি একচেটিয়া ব্যবসাও পরিচালনা করছেন এখানকার ব্যবসায়িরা।
মূলত দু’ধরনের দই তৈরী হয় বগুড়ার শেরপুরে। টক দই আর মিষ্টি দই। কোন প্রকার চিনি ছারা যে দই তাকে বলা হয় টক দই। প্রথম দিকে উপজেলার বিভিন্ন দই কারখানাতে টক দই তৈরী হলেও স্বাদের বৈচিত্র্য ও ভিন্নতার কারনে টক দইয়ের পাশাপাশি মিষ্টি দই এখন পুরো বাজার নিয়ন্ত্রন করে।
বর্তমানে ঐতিহ্যবাহী শেরপুরে প্রায় দু’শতাধিক দইয়ের কারখানা বিদ্যমান। এসব দই কারখানায় কাজ করেন প্রায় দু’ হাজার পাঁচশতাধিক কর্মচারী। দই বিক্রয় কেন্দ্রের কর্মচারীসহ প্রায় পাঁচ হাজার জনশক্তি প্রত্যক্ষ ভাবে দই তৈরী ও বিক্রির কাজে সম্পৃক্ত।
পুরো শেরপুর উপজেলায় প্রতি দিন প্রায় সাড়ে তিন থেকে চারশ মণ দই উৎপাদনের সাথে খিরসা, মিষ্টি সহ মাসে ২০ কোটি টাকার অর্থনৈতিক লেনদেন হয়। সরাসরি দই বিক্রয় কেন্দ্রের পাশাপাশি উপজেলার অনেক তরুণ উদ্দ্যোক্তা অনলাইনেও দই বিক্রি করে থাকেন।
শেরপুরের দই ব্যবসায়ী আমিনুল ইসলাম বলেন, শেরপুরের দই দেশ খ্যাত। আমরা চেষ্টা করছি আমাদের ঐতিহ্য রক্ষা করে ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য। দুধের দাম উঠানামা করার জন্য এবং অন্যন্য সামগ্রীর দাম অতিরিক্ত হওয়াতে বর্তমানে দইয়ের দামও বেড়েছে। তবে আসল স্বাদের দই খেতে হলে শেরপুরের কোনো বিকল্প নেই।
দই কিনতে আসা শরিফুল ইসলাম জানান, বগুড়ার শেরপুরে সবচেয়ে ভালো দই পাওয়া যায়। অতুলনীয় দইয়ের স্বাদ প্রায় সময়ই আমাদের বগুড়ার শেরপুরে টেনে আনে। দইয়ের সাথে বর্তমানে আমি ও আমার পরিবারের একটা ভালোলাগা ভালোবাসার সৃষ্টি হয়ে গেছে। সব মিলিয়ে শেরপুরের দই অতুলনীয়ই।