শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

বগুড়ার চরাঞ্চলে বাদামের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

বগুড়ার চরাঞ্চলে বাদামের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

সংগৃহীত

বগুড়া সারিয়াকান্দি উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া যমুনা নদীর চরে এখন সবুজের সমারোহ । শুরু হয়েছে কৃষি বিপ্লব। আগে চরের মানুষ যেখানে দুমুঠো খাবার খেতে পেতনা। তারা এখন তাদেরও আদরের ছেলে মেয়েদের স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় পাঠায় লেখাপড়া শেখার জন্য। বদলে গেছে চরের অবকাঠামো গত চেহারা।

সারিয়াকান্দি চালুয়াবাড়ী ইউনিয়নের হাটবাড়ি চরে গিয়ে দেখা গেছে সেখানকার জনবসতি দাড়ানোর সময় নেই। সব সময় তারা ব্যস্ত সময় পার করছে।

সুইজারল্যান্ড ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে এমফরসি প্রকল্পের আওতায় দেশের অন্যান্য জেলা উপজেলার ন্যায় সারিয়াকান্দি ও ফুলছড়ি উপজেলায় শুরু হয়েছে কৃষি বিপ্লব। চীনা বাদাম একটি স্বল্পমেয়াদি অর্থকরী ফসল। এটি একটি উৎকৃষ্ট ভোজ্য তেলবীজ। চীনা বাদামের বীজে শতকরা ৪৮ থেকে ৫০ ভাগ তেল এবং শতকরা ২২ থেকে ২৯ ভাগ আমিষ রয়েছে।

বাদাম মুলত বছরে দুই বার চাষ করা যায়। বাসন্তী বাদাম মূলত দুই দানা থাকে। এছাড়া ঝিংগা বাদামে তিন থেকে চারটি করে দানা থাকে। ত্রিদানা বাদামেও তিন-চারটি করে দানা থাকে। কৃষকরা তরমুজ, শিম, বেগুন, মরিচ, গোল আলু, ভুট্টা, সরিষা, তিলের পাশাপাশি চাষ করছেন চীনা বাদাম। জামালপুরের সরিষাবাড়ী, মাদারগঞ্জ, ইসলামপুর, দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার যমুনার দুই পাশে জেগে ওঠা চরে বাদাম চাষ হয়।

দেশের অন্যান্য জেলায় উৎপাদিত বাদামের তুলনায় সারিয়াকান্দির বাদাম আকারে বেশ বড় ও সুস্বাদু হয়। ফলে চাহিদাও ব্যাপক। দেশের চাহিদার প্রায় ৩০ ভাগ বাদাম পাওয়া যায় উত্তর অঞ্চলে। এসব বাদাম রাজধানীসহ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে।

হাটবাড়ি গ্রামের কৃষক সজিব ও মামুন জানান, আমরা পড়াশুনার পাশাপাশি মাঠে বাবাকে সাহায্য করি। আমাদের চরে এবার বাদামের মূল মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাদামের ফলন বেশি হবে বলে আশা করছেন কৃষকরা।

এ উপজেলার বাদাম চাষি শাকিল জানান, এবার বৃষ্টিপাত ও শীত কম হওয়ায় বাদাম গাছে রোগ-বালাই নেই বললেই চলে। ফলে ফলন বেশি হবে। তিনি আরও বলেন আর ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যেই বাদাম তোলা শুরু হবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার তুলনামূলক বাদামের ফলন বেশি হবে।

পল্লী উন্নয়ন একাডেমীর যুগ্মপরিচালক ও প্রকল্প পরিচালক (এমফোরসি) ড. মোঃ আব্দুল মজিদ প্রামানিক বলেন, এমফোরসি-২য় পর্যায় শীর্ষক প্রকল্পের মাধ্যমে চরাঞ্চলে অনাবাদী জমি আবাদের আওতায় আনতে আমরা এক যোগে কাজ করে যাচ্ছি।

বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মতলুবর রহমান জানান, চলতি বছর বেশ জমিতে বাদাম চাষ হচ্ছে। হেক্টর প্রতি চীনা বাদামের গড় ফলন মাত্র ১.৫০ মেট্রিক টন। উন্নত প্রযুক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে চীনা বাদামের ফলন বৃদ্ধির যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।

তিনি আরও জানান মূলত ঝিংগা বাদাম, ত্রিদানা বাদাম ও বারি বাদাম চাষ করা হয়। তবে বাসন্তী বাদামের চাষ হয় বেশি।

সর্বশেষ: