শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

একত্রিত অবস্থানে বিএনপির বহিষ্কৃতরা, অশনি সংকেত বলছেন বিশেষজ্ঞরা

একত্রিত অবস্থানে বিএনপির বহিষ্কৃতরা, অশনি সংকেত বলছেন বিশেষজ্ঞরা

দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে এবং নির্দেশ অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়া ও প্রার্থীদের সহযোগিতা করার দায়ে বিএনপির তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত নেতারা একত্রিত অবস্থান নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

চলতি বছরের মার্চ মাসেই একের পর এক দুই শতাধিক নেতাকে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় বিএনপি। এমন প্রেক্ষাপটে বিএনপির একরোখা সিদ্ধান্তকে প্রতিহত করে নিজেদের অবস্থান জানান দিতে সারা দেশের বহিষ্কৃতরা একত্রিত হচ্ছেন। এমন খবর এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় বিএনপিকে শঙ্কায় ফেলেছে বলেও জানা গেছে।

বিএনপির নয়াপল্টন পার্টি অফিসের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। সূত্র বলছে, সদ্য বহিষ্কৃত নেতারা দেশের বিভিন্ন উপজেলার বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বহিষ্কারের জবাব দিতে বিএনপিকে স্থানীয়ভাবে প্রতিহত করতে একত্রিত হচ্ছেন। বহিষ্কৃতরা বলছেন, তৃণমূল নির্বাচনকে জাতীয় রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে বিএনপি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা তৃণমূল বিএনপিকে হীন করার সমতুল্য। এই অপমানের জবাব দিতেই তারা একত্রিত হচ্ছেন।

এই বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মৌলভীবাজার উপজেলা বিএনপির একজন নেতা বলেন, আমরা কেন্দ্রীয় বিএনপিকে বারবার অনুরোধ করেছি যেন, স্থানীয় নির্বাচনকে কেন্দ্রীয় পর্যায়ের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত না করা হয়। কেননা, তৃণমূলের জনগণের জনপ্রতিনিধিদের প্রতি প্রত্যাশা থাকে। আর সেই প্রত্যাশা যদি তাদের পূরণ না হয় তবে স্থানীয় পর্যায়ের দলের এবং জনপ্রতিনিধিদের অবস্থান নষ্ট হয়ে যায়। এতে বৃহত্তর অর্থে দল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতারা বিষয়টিকে কোনো গুরুত্ব না দিয়ে একের পর এক সারা দেশের তৃণমূল নেতাদের বহিষ্কার করেই যাচ্ছে। এটা আমাদের জন্য লজ্জার। যেহেতু তৃণমূলের কোনো আর্জি না শুনে আমাদের বহিষ্কার করা হয়েছে, তাই আমরা যারা বহিষ্কৃত হয়েছি তারা একত্রিত হয়ে কেন্দ্রীয় বিএনপিকে এর জবাব দেব।
বহিষ্কৃতরা কী ধরণের অবস্থান নেবে- এমন প্রশ্নের জবাবে এই নেতা বলেন, আমরা সবাই মিলে বেশ কয়েকটি বৈঠক করেছি, বেশকিছু সিদ্ধান্ত এসেছে। সেগুলো এখনই প্রকাশ করতে চাই না। তবে এটা বলতে চাই যে, বিএনপিকে প্রতিহত করতে দেশের প্রতিটি অঞ্চলে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।

তৃণমূল বিএনপির এমন হুঁশিয়ারির বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্যর কাছে জানতে চাইলে, নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে আমরাও একমত ছিলাম। উপজেলা পর্যায়ের নেতাদের একের পর এক বহিষ্কার করার প্রথম দিকেই আমরা বলেছিলাম যে সিদ্ধান্তটি ভুল হচ্ছে। এ বিষয়ে তারেক রহমানকে জানানো হলেও তিনি গুরুত্ব দেননি। কিন্তু পরিস্থিতি ক্রমেই দলের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। বিষয়টি কোনদিকে মোড় নেবে ঠিক বোঝা যাচ্ছে না। এ নিয়ে সিনিয়র নেতারা বেশ দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।

এ বিষয়ে একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, বিষয়টি সত্যিই চিন্তার। শুধু চিন্তার নয়, তা আসলে দুশ্চিন্তার। একটি দলের জন্য তৃণমূলের সাপোর্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যা বহিষ্কার সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ক্রমেই হারিয়ে ফেলছে বিএনপি। তৃণমূল ছাড়া রাজনীতিতে টিকে থাকা মুশকিল হবে বিএনপির জন্য।

দৈনিক বগুড়া