শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

প্রবাসী শ্রমিক ফেরত নেওয়ার চাপ প্রশমনের চেষ্টা চলছে:প্রধানমন্ত্রী

প্রবাসী শ্রমিক ফেরত নেওয়ার চাপ প্রশমনের চেষ্টা চলছে:প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বর্তমান বৈশ্বিক করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্য থেকে আমাদের শ্রমিকদের ফিরিয়ে আনতে কূটনৈতিক চাপ রয়েছে। তবে এ চাপ প্রশমিত করতে আমরা নানা কূটনৈতিক উদ্যাগ গ্রহণ করেছি। কূটনৈতিক চেষ্টার অংশ হিসেবে আমি নিজেও মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানের কাছে পত্র পাঠিয়েছি। এ ছাড়া পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে।’ আজ বুধবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে সংসদ সদস্য বেনজীর আহমেদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা এসব কথা বলেন।

একই বিষয়ে অপর এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার বৈশ্বিক মহামারি করোনা পরিস্থিতির কারণে বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী বাংলাদেশি কর্মীরা যাতে কর্মহীন হয়ে না পড়ে, সে জন্য কূটনৈতিকভাবে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। ইতোমধ্যে যাঁরা কর্মহীন হয়ে পড়েছেন, তাঁরা যাতে পুনরায় কাজে যোগদান করতে পারেন, সে জন্য বিদেশে দূতাবাসগুলোর মাধ্যমে আমরা কূটনৈতিক চেষ্টা ও তৎপরতা অব্যাহত রেখেছি। এ সময়ের মধ্যে বিভিন্ন দেশে কর্মহীন হয়ে পড়া কর্মীদের মধ্যে আমরা প্রায় ১১ কোটি টাকার ওষুধ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিতরণ করেছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনার কারণে চাকরিচ্যুত হয়ে কিংবা অন্য কোনো কারণে বিদেশফেরত কর্মীদের সহজ শর্তে ঋণ প্রদানের জন্য আমরা ইতোমধ্যে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের অনুকূলে ৫০০ কোটি টাকার বরাদ্দ অনুমোদন করেছি। করোনার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে বিদেশ প্রত্যাগত কর্মীদের এবং প্রবাসে করোনায় মৃত কর্মীর পরিবারের উপযুক্ত সদস্যকে প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংকের মাধ্যমে স্বল্পসুদে ও সহজ শর্তে বিনিয়োগ ঋণ প্রদানের জন্য আমরা ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড থেকে ২০০ কোটি টাকার তহবিল গঠন করেছি।’

সংসদ নেতা বলেন, ‘ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের বিদ্যমান নীতিমালা অনুযায়ী শুধু বৈধ ও নিবন্ধিত অভিবাসী মৃত কর্মীর পরিবারকে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের তহবিল থেকে ক্ষতিপূরণ বাবদ তিন লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়। করোনা মহামারি পরিস্থিতি বিবেচনায় বর্তমানে করোনাভাইরাসে মৃত্যুবরণকারী নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত নির্বিশেষে সব প্রবাসী কর্মীর পরিবারকে পুনর্বাসনের জন্য আমরা তিন লাখ টাকা প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিমান চলাচলের অনুমতির বিষয়ে বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং কূটনৈতিক তৎপরতার অংশ হিসেবে আমি কতিপয় রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকারপ্রধানের কাছে এ বিষয়ে পত্র প্রেরণ করেছি। এ ছাড়া পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন এয়ারলাইনসের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সীমিত পরিসরে ঢাকা-কুয়ালালামপুর রুটে বিমান চলাচল শুরু হয়েছে।’

শেখ হাসিনা আরো বলেন, ‘আমাদের প্রতিবেশী অন্যান্য দেশে যেখানে লক্ষাধিক প্রবাসী শ্রমিক ফিরে এসেছেন, সেখানে আমাদের দেশে এখন পর্যন্ত মাত্র ২২ হাজার প্রবাসী শ্রমিক দেশে ফিরে এসেছেন। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের গৃহীত সময়োচিত কূটনৈতিক উদ্যোগের ফলে ফিরে আসা প্রবাসীর সংখ্যা এখনো কম রয়েছে। আমাদের সরকার ফিরে আসা প্রবাসী কর্মীদের টেকসই পুনর্বাসনের লক্ষ্যে সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ এবং প্রবাসীদের যথাযথ সহায়তা প্রদানের জন্য একটি ডাটাবেস নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এ ছাড়া যারা পুনরায় বিদেশে যেতে সক্ষম, তাদের জন্য উন্নত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা উন্নয়নের কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে।’

দৈনিক বগুড়া