শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতিচর্চা নতুন প্রজন্মকে জঙ্গিবাদ থেকে দূরে রাখবে:তথ্যমন্ত্রী

সংস্কৃতিচর্চা নতুন প্রজন্মকে জঙ্গিবাদ থেকে দূরে রাখবে:তথ্যমন্ত্রী

সংস্কৃতিচর্চার বৃদ্ধি নতুন প্রজন্মকে জঙ্গি-সন্ত্রাসবাদ থেকে দূরে রাখবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। সোমবার রাতে রাজধানীতে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় সব্যসাচী নাট্যজন মমতাজউদদীন আহমদের ৮৭তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা জানান।

কিংবদন্তী নাট্যজন মমতাজউদদীন আহমদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে আশি-নব্বইয়ের দশকে অনেক মঞ্চ নাটক হতো। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের সময় অনেক পথ নাটক হতো। এখন সেভাবে মঞ্চ নাটক হচ্ছে না। আবার মঞ্চ নাটকের সেই সুদিন ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন।

কারণ সাংস্কৃতিক চর্চা যতই ব্যাপক হবে, ততই আমাদের নতুন প্রজন্মের মনন তৈরি, নিজস্ব সংস্কৃতি সংরক্ষণ এবং আকাশ সংস্কৃতির বিজাতীয় থাবা থেকে মুক্ত থাকা সহজ হবে। দেশের নাট্যজনদের এ বিষয়ে পরিকল্পনার অনুরোধ জানাই।

নাট্যজগতে নিজের বিচরণের স্মৃতিচারণ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রামের তীর্যক নাট্যদলের মঞ্চ ও যাত্রাদলের সদস্য ছিলাম।

এ সময় মন্ত্রী দেশের সব জেলায় মঞ্চ নাটকের কার্যক্রমকে উৎসাহিত করতে প্রতিযোগিতা এবং বিভিন্ন জেলায় ১০ দিনব্যাপী নাটক মঞ্চায়নের প্রস্তাবনা দেন। একই সঙ্গে বাংলাদেশ টেলিভিশনের ঢাকা ও চট্টগ্রাম কেন্দ্র থেকে মঞ্চ নাটক প্রচারের উদ্যোগ নেয়ার কথা জানান তিনি। 

ড. হাছান বলেন, এটি মনে করার কোনো কারণ নেই যে, আকাশ সংস্কৃতি বা ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার কারণে মঞ্চ নাটক হারিয়ে যাবে। তাহলে পৃথিবীর সমস্ত থিয়েটার বন্ধ হয়ে যেত, কিন্তু সেটি হয়নি। আমেরিকায় এত ওটিটি প্ল্যাটফর্ম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থাকার পরেও সেখানে ৬ হাজার সিনেমা হল রয়েছে।

তিনি আরো উল্লেখ করেন যে, ভারতে ৮ হাজারের কাছাকাছি সিনেমা হল আছে। ইউরোপেও প্রচুর সংখ্যক থিয়েটার হল রয়েছে, যেখানে প্রচুর লোক সমাগম হয় এবং তারা লাইন ধরে টিকেট কেটে মঞ্চের পরিবেশনা দেখে। আমরাও একসময়ে তেমনই ছিলাম। সেই জায়গাতেই আমাদের আবার ফেরা দরকার। কারণ, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড যত বৃদ্ধি পাবে, তত আমাদের জাতীয়তাবোধ, সংস্কৃতিবোধ এবং দেশাত্মবোধ আরো গভীরে প্রথিত হবে। অন্যথায় এগুলোকে রক্ষা করার ক্ষেত্রে আমরা উত্তরোত্তর  বৈরী পরিবেশের সম্মুখীন হতে থাকবো।

শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নাট্যকার লিয়াকত আলী লাকী’র সভাপতিত্বে ও প্রবীর দত্তের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা আতাউর রহমান, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ, বাংলাদেশ শিশু একাডেমি’র চেয়ারম্যান লাকী ইনাম, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, নাট্যগোষ্ঠী থিয়েটার সভাপতি ড. নিলুফার বানু, সাধারণ সম্পাদক অশোক রায় নন্দী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ বণিক ও রেজাউল একরাম রাজু।

অনুষ্ঠানে সংগীত ও আবৃত্তি পরিবেশন করেন মুনিরা ইউসুফ মেমী ও জিয়াউল হাসান কিসলু। সবশেষে মমতাজউদদীন আহমদের নাটক ‘ফলাফল নিম্নচাপ’ পরিবেশিত হয়। 

দৈনিক বগুড়া