শনিবার, ০২ আগস্ট ২০২৫, ১৭ শ্রাবণ ১৪৩২

অপরাজেয় রপ্তানি করছে টেকসই পণ্য

অপরাজেয় রপ্তানি করছে টেকসই পণ্য

সংগৃহীত

২০১৩ সালের ঢাকার সাভারের রানা প্লাজা ধসের পরে ‘নারীপক্ষ’ নামে একটি এনজিওর জন্য ৫০টি পাটের ব্যাগ তৈরির মাধ্যমে শুরু হয় ‘অপরাজেয়’–এর পথচলা। শুরু করার মাত্র চার মাসের মধ্যে দেশি ক্রয়াদেশের পাশাপাশি স্বল্প পরিমাণে শুরু হয় রপ্তানি। পরের বছর প্রতিষ্ঠানের আয় দিয়ে চালু করা হয় ‘সংকলন পাঠশালা’ নামের একটি অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়। সংকলন পাঠশালার ২৪৫ শিক্ষার্থীর বেশির ভাগই ছিল রানা প্লাজায় আহত ও অন্য পোশাকশ্রমিকদের সন্তান।

২০১৫ সালে এক অগ্নিদুর্ঘটনায় কারখানা পুড়ে ২৭ লাখ টাকার সম্পদের ক্ষতি হয়। তহবিল–সংকট ও অন্যান্য কারণে ২০১৬ সালে বিদ্যালয়টি বন্ধ হয়ে যায়। পরে ২০১৮ সালে ব্যক্তি বিনিয়োগে ‘অপরাজেয় লিমিটেড’ নামে শতভাগ রপ্তানিমুখী পাটপণ্য ও হস্তশিল্প উৎপাদন কারখানা চালু করেন কাজী মো. মনির হোসেন। বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠান পাটের তৈরি ব্যাগ, হোগলাপাতা ও শণের তৈরি বিভিন্ন পণ্য বিশ্বের ২৬টি দেশে রপ্তানি করছে। বর্তমানে দুটি উৎপাদন ইউনিটে স্থায়ী শ্রমিকের সংখ্যা ২৪০। এর বাইরেও হস্তপণ্য তৈরির জন্য বগুড়া, রংপুর, নোয়াখালীতে চুক্তিভিত্তিতে কাজ করছেন অসংখ্য নারী।

বর্তমানে ইউরোপের নামকরা বিভিন্ন ব্র্যান্ডের জন্য পণ্য তৈরি করছে অপরাজেয়। বৈশ্বিক ক্রেতাদের শর্ত, কর্মপরিবেশের নিরাপত্তা ও শ্রমিকের অধিকার নিশ্চিত করতে ইতিমধ্যে অপরাজেয় ‘সেডেক্স’সহ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সনদ পেয়েছে। একই সঙ্গে দেশের বাজারে মানসম্পন্ন পাটপণ্যের উৎপাদন ও বাজারজাতের ঘাটতির কথা বিবেচনায় নেন কাজী মো. মনির হোসেন ও তাঁর স্ত্রী মুনিয়া জামান। ২০২১ সালে ‘কালিন্দী’ নামে একটি দেশি ব্যাগের ব্র্যান্ড চালু করেন মুনিয়া জামান। কালিন্দীর সব পণ্য অপরাজেয় কারখানার অব্যবহৃত উপকরণ থেকে তৈরি হয়। কালিন্দী পপআপ স্টোর ও অনলাইন থেকে বর্তমানে মাসে দেড় হাজারের বেশি ব্যাগ বিক্রি হচ্ছে।

শুরুতে শুধু পাটের ব্যাগ তৈরি করলেও বর্তমানে কালিন্দী চামড়ার ব্যাগও বানাচ্ছে। টেকসই পণ্য উৎপাদনের পাশাপাশি দেশীয় ফ্যাশন ও নিত্যপণ্যের নানান উপকরণ তৈরি হচ্ছে। এমনই উদ্যোগ অপরাজেয় ও কালিন্দী। রপ্তানি শ্রেণিতে আইডিএলসি-প্রথম আলো এসএমই পুরস্কার ২০২৩ পেয়েছে অপরাজেয় লিমিটেড।

সূত্র: প্রথম আলো

সর্বশেষ:

শিরোনাম: