মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

৬০ বছরে সর্বোচ্চ ধসের মুখে চীনের অর্থনীতি

৬০ বছরে সর্বোচ্চ ধসের মুখে চীনের অর্থনীতি

বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে চীনের অর্থনীতিতে বিরাট ধস নামার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ অর্থনীতির দেশ চীনের অর্থনীতি এবার প্রায় ১০ শতাংশ সংকুচিত হবে। গত ৬০ বছরের মধ্যে যা সর্বোচ্চ। এছাড়া ১৯৭৬ সালের পর দেশটির অর্থনীতিতে সংকোচনের কোনো নজির নেই।

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর গত তিন মাসের আর্থিক অবস্থার বিশ্লেষণ করে চীনের অর্থনীতির পূর্বাভাসে বলা হচ্ছে, মহামারি এই ভাইরাসের কারণে কল-কারখানা বন্ধ ও লকডাউনের কারণে চীনের চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এছাড়া করোনার প্রকোপে চীনে চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে গেছে ৪ লাখ ৬০ হাজার প্রতিষ্ঠান। দেশটির করপোরেট নিবন্ধন তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, বন্ধ হয়ে যাওয়া কারখানাগুলোর অর্ধেকই গত তিন বছরের মধ্যে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল।

এদিকে বিশ্বকে আরেকটি দ্বিতীয় মহামন্দার জন্য প্রস্তুত থাকতে সতর্ক করেছে চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক পিপলস ব্যাংক অব চায়না। ব্যাংকটি বলছে, ঝুঁকির আশঙ্কা কম তবে বিশ্বকে অবশ্যই সবচেয়ে খারাপের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়াকেই এর বড় কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে। 

বিধিনিষেধ শিথিল করার পর ইউরোপীয় দেশগুলো এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে কি প্রভাব তৈরি হবে তা সম্মুখে আসলে সেই সূচক বিশ্লেষণ করার মাধ্যমে চীনের অর্থনীতিতে লকডাউনের প্রভাব কতটা তা নির্ণয় করা যাবে বলে জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদেরা।

ইউবিএস এর অর্থনৈতিক গবেষণা প্রধান তাও ওয়াং ধারণা করছেন, চীনের অর্থনীতি ১০ শতাংশ সংকুচিত হবে। ইউবিএস এর পূর্বাভাস, এটা হলে দেশটির সেবাখাতের ৫ থেকে ৬ কোটি মানুষ এবং শিল্প ও নির্মাণ খাতের আরও দুই কোটি মানুষ চাকরি হারাবে।

তবে ফিনান্সিয়াল টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাতকারে ওয়াং বলেন, যদি মহামারির প্রকোপ শিগগিরই কমে তাহালে অর্থনৈতিক কার্যক্রম স্বাভাবিক হওয়া এবং নীতিগত সহযোগিতার (ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পখাতে) মাধ্যমে এই সংখ্যাটা হয়তো দ্রুতই কমে আসতে পারে।

করোনার প্রাদুর্ভাব কিছু কমতে শুরু করার পর চীন করোনা মোকাবিলায় জয়ী হওয়ার ঘোষণা দিয়ে গত মার্চ থেকেই দেশটির ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির সরকার কল-কারখানা, রেস্তোরাঁ এবং দোকানপাট পুনরায় খুলে দেওয়া শুরু করে।

১৯৭৬ সালের পর কখনো সংকুচিত হয়নি চীনের অর্থনীতি। দেশটিতে অভ্যন্তরীণ সরবরাহ ব্যবস্থা সচল হলেও অভ্যন্তরীণ চাহিদা কমেছে ব্যাপক। করোনা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ার ফলে বহির্বাণিজ্যের ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাবও আপাতত এড়াতে পারবে না চীন।

দৈনিক বগুড়া

সর্বশেষ: