
সংগৃহীত
এনআইসিইউ হাসপাতালের একটি বিশেষ নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র, যেখানে জন্মের পর থেকে ২৮ দিন পর্যন্ত অসুস্থ নবজাতককে বিশেষ চিকিৎসার জন্য রাখা হয়। সাধারণত, হাসপাতালে শিশুদের ও বড়দের আইসিইউ আলাদা থাকে। নবজাতকদের জন্য সম্পূর্ণ পৃথকভাবে এটি পরিচালিত হয়।
যেসব নবজাতককে রাখতে হয়
-
জন্মের সময় ওজন খুবই কম (আড়াই কেজির কম)।
-
সময়ের আগেই জন্ম (৩৭ সপ্তাহের আগে)।
-
জন্মের পর নবজাতকের শ্বাসকষ্ট।
-
জন্মের পরপর কান্না না করা বা ঠিকমতো শ্বাস না নেওয়া।
-
গুরুতর জন্ডিসে আক্রান্ত অথবা অন্য জীবাণু সংক্রমণ।
-
বিভিন্ন রকমের জন্মগত ত্রুটি বা জটিলতা।
-
কোনো কারণে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন পড়লে।
আইসিইউতে চিকিৎসা পদ্ধতি
নবজাতককে আইসিইউতে রাখা হলে মা-বাবা স্বাভাবিকভাবেই ভড়কে যান। ভাবেন, ভেতরে কি-না-কি হচ্ছে আবার। যেসব নবজাতক সময়ের আগে জন্মগ্রহণ করে (প্রিম্যাচিউর), ওজন কম হয় ও শ্বাসকষ্ট বা অন্য জটিলতা থাকে, তাদের আইসিইউর ওয়ার্মার বা ইনকিউবেটরে রাখা হয়। এতে নবজাতকের শরীরে স্বাভাবিক তাপমাত্রা বজায় থাকে। শ্বাসপ্রশ্বাসে অক্সিজেনের মাত্রা ঠিক আছে কি না, তা সব সময় পর্যবেক্ষণ করা হয়। প্রয়োজনমতো দেওয়া হয় অক্সিজেন।
রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ানোর জন্য আইসিইউতে নেওয়া নবজাতকদের বিভিন্ন ওষুধ দেওয়া হয়। যেসব নবজাতকের জন্ডিস গুরুতর, তাদের জন্য ফটোথেরাপির ব্যবস্থা করা হয়। শিশুর জন্মগত ত্রুটি থাকলে অস্ত্রোপচার করার প্রয়োজন পড়ে। রক্তে জীবাণু সংক্রমণ বা শিশু নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হলে দেওয়া হয় অ্যান্টিবায়োটিক।
কত দিন রাখতে হয়
যদি নবজাতকের অসুস্থতা জটিল না হয়, তাহলে আইসিইউতে নেওয়ার তিন থেকে চার দিনের মধ্যেই ছুটি দেওয়া হয়ে থাকে। তবে কোনো কোনো নবজাতকের ক্ষেত্রে আরও বেশি সময়ের প্রয়োজন হতে পারে। এটা নির্ভর করে জন্মের সময় ওজন ও শারীরিক জটিলতার ওপর।
আইসিইউতে নেওয়ার পর সাধারণত প্রথম দু-এক দিন নবজাতকের হজমশক্তি পর্যবেক্ষণ করতে হয়। এরপর ধীরে ধীরে অল্প অল্প করে মায়ের দুধ শুরু করা হয়। পাশাপাশি স্যালাইন চলতে থাকে। পরিস্থিতির উন্নতি হলে অবস্থা বুঝে সরাসরি বুকের দুধ টেনে খেতে দেওয়া হয়।
জন্মের সময় শিশুর কোনো সমস্যা হলে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দিলে ভবিষ্যতে শিশুর পূর্ণ সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। আর যদি সময়মতো ও সঠিক চিকিৎসা না দেওয়া হয়, তাহলে জটিলতা হতে পারে।
সূত্র: প্রথম আলো