শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১

সারিয়াকান্দিতে শীতের পিঠা খাওয়ার উৎসবে মেতেছে গ্রামের কৃষক পরিবার

সারিয়াকান্দিতে শীতের পিঠা খাওয়ার উৎসবে মেতেছে গ্রামের কৃষক পরিবার

ঘরে নতুন ধান এসেছে। ধান দিয়ে চাল করার পর আটা তৈরি করছি। আটা দিয়ে তৈরি করা হবে হরেক রকমের পীঠা। আমি পীঠা বানিয়ে মেয়ে-জামাই সহ নাতী-নাতনীদের পরম আদরে খাওয়াবো এবং নিজেরাও খাবো। কথাগুলো বলছিলেন, বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের দেবডাঙ্গা গ্রামের ষাটার্ধো টুলী বেগম। টুলী বেগম একই গ্রামের আবদুর রাজ্জাকের স্ত্রী। তার মেয়ে জামাই চাকুরীর সুবাদে থাকেন রাজশাহী মহানগরীতে। সংগে থাকে দুই নাতি-নাতনী।

এবার অগ্রাহায়ন মাসের শুরুতেই বাড়ীতে বিভিন্ন রকমের পীঠা তৈরির ব্যস্ততা চলছে তাঁর বাড়ীতে। তিনি গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী ঢেঁকিতে করে চাল থেকে আটা তৈরি করছেন। তিনি জানান, আগের দিন চাল পানিতে ভিজিয়ে রাখা হয়েছিলো, তারপর আজকে সেটি দিয়ে আটা তৈরি করছি। সন্ধার দিকে টাটকা আটা দিয়ে তৈরি করা হবে হরেক রকমের পিঠা। পিঠার মধ্যে দুধপিঠা, তেলপিঠা, কুলিপিঠা, পাটিশাপটা, ভাপাপিঠা, চিতইপিঠা, মুঠা, পাকনপিঠা, নকশিপিঠা, তিন চালের গুড়া, শীতের ঝালবড়া ইত্যাদি।

এজন্য ওই বাড়ীতে সকল নারীদের ব্যস্ততা বেড়েছে। নাতী-নাতনীদের জন্য ওইসব পিঠাপুলি তৈরী করা ছাড়াও নিজেদের খাওয়ার জন্য শীতের ওই সহ পিঠাপুলি তৈরিতে হাত লাগিয়েছেন সবাই। শীতের পিঠাপুলি তৈরিতে সহযোগিতা করছেন বাড়ীর অন্যান্য নারীরা হলেন, ফিরোজা বেগম ও লিমা আক্তার। তারা বলেন, আমরা মেহমানদারী করার জন্য ওই সব পিঠাপুলি কেবল রাজশাহীতেই পাঠাবোনা। আমাদের ছেলে-মেয়ে, নাতী-নাতনীদেরকেও শীতের সকালে পরম আদরে খাওয়াবো নিজ হাতে তৈরি করা ওইসব পিঠা।

বাড়ীর সবাইকে নিয়ে শীতের সকালে মিষ্টি রোদে এক সংগে বসে এ পিঠা খাওয়ার মজাই আলাদা। ফুলবাড়ী ইউনিয়নের মাঝবাড়ী গ্রামের মজিবর রহমান বলেন, এবারতো আমন ফসলের আবাদ ভালো হয়েছে। যে যেখানেই ধানের আবাদ করেছিলেন, সেখানেই আশানুরূপ ফলন পেয়েছেন। তাই কেবল আমাদের গ্রামে নয় প্রতিটি গ্রামেই শীতের পিঠাপুলি খাওয়ার সবাই উৎসবে মেতে উঠেছেন কৃষক পরিবার। উপজেলা কৃষি অফিসার মো: আবদুল হালিম বলেন, সারিয়াকান্দি উপজেলায় এবার আমনের ফলন হয়েছে আশানুরূপ। যে কারণে গ্রামের প্রতিটি গৃর্হস্ত পরিবার আমন ধানের বিভিন্ন ধরনের পিঠাপুলি খাওয়ার উৎসব-আমেজে মেতে উঠেছেন। 

দৈনিক বগুড়া

সর্বশেষ: