রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

বগুড়ায় বাদামে স্বপ্ন বুনছে চরের কৃষক

বগুড়ায় বাদামে স্বপ্ন বুনছে চরের কৃষক

বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার যমুনা নদীতে পানি শুকিয়ে জেগে ওঠা চরে শুরু হয়েছে চাষবাস। বিভিন্ন সবজির পর এবার চীনাবাদাম চাষ করে লাভবান হতে যাচ্ছেন চাষিরা। অনাবাদি বালুচরে চীনাবাদাম চাষ করে লাভের স্বপ্ন বুনছেন চাষিরা।

ধু-ধু চরে বাদামের চারায় সবুজ হয়ে আছে চরগুলো। বিঘাপ্রতি ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা লগ্নি করে কাঁচা বাদাম বিক্রি হবে ২১ হাজার টাকায়। যমুনা নদীর জেগে ওঠা পতিত চরে বাদাম চাষ করে ভালো ফলন পাওয়ায় চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে।

জানা যায়, বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলাটি যমুনা ও বাঙালি নদী দিয়ে ঘেরা। প্রতিবছর জুলাই থেকে আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত বন্যা দেখা দেয়। বন্যায় বসতভিটা, আবাদি জমি ভেঙে নদীগর্ভে চলে যায়। এরপর বন্যার পানি নেমে গেলে নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে জেগে ওঠা চরে স্থানীয় চাষিরা বিভিন্ন ফসল চাষ করে থাকে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা প্রতিকূল পরিবেশের সঙ্গে টিকে থাকতে জেগে ওঠা ধু-ধু বালু চরে ডিসেম্বর মাসের শেষে বাদাম চাষ করে। সারিয়াকান্দি উপজেলার ৮ ইউনিয়নের ফসলি জমির বেশির ভাগই এখন যমুনা নদীগর্ভে। 

চরগুলোর মধ্যে রয়েছে কর্নিবাড়ী, ইন্দুরমারা চর, কাজলা, বোহাইল, ধারাবর্ষা, চন্দনবাইশা ইউনিয়নের টেকামাগুড়া। প্রতিবছর বন্যায় জমিগুলোতে বালু পড়ে বিশাল এলাকা অনাবাদি হয়ে যায়। এসব অনাবাদি বালু জমিগুলোতে এ বছর কৃষকরা আগাম চীনাবাদামের আবাদ করেছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বেড়ে ওঠা চীনাবাদামের গাছগুলো ভালো ফলনের জানান দিচ্ছে। সেই বাদাম কোথাও পরিপক্ব হয়েছে আবার কোথাও উত্তোলন চলছে। বাদামের ভালো চাষ হওয়ায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা বাদামে স্বপ্ন বুনছে।

বগুড়ার সারিয়াকান্দি কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, সারিয়াকান্দি উপজেলার ১২ ইউনিয়নের মধ্যে ৪টি ইউনিয়নের সম্পূর্ণ এবং বাকিগুলোর আংশিক ফসলি জমিগুলো যমুনা নদীগর্ভে। প্রতিবছর বন্যায় এসব জমিতে বালু পড়ে বিশাল এলাকা অনাবাদি হয়ে যায়। কৃষকের জন্য আদর্শ জমিগুলো বন্যায় বালু পড়ে অনাবাদি থাকায় আয়ের উৎস হয়ে উঠতে পারেনি। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে চরের অনাবাদি জমিতে চাষিরা নদীর পানি সেচ দিয়ে চাষবাস শুরু করেছেন।

অনাবাদি জমিগুলোতে এ বছর কৃষক আগাম চীনাবাদামের আবাদ করেছেন। গত বছর ৯৬৫ হেক্টর জমিতে চীনাবাদাম চাষ হয়েছিল। উৎপাদন হয়েছিল ১ হাজার ৪৯৮ টন। এ বছরও চীনাবাদামের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৯৬৫ হেক্টর। চাষ হয়েছে ৮৮০ হেক্টর। এ পর্যন্ত ২৬০ হেক্টর জমির চীনাবাদাম কর্তন করে ফলন ঘরে তোলা হয়েছে।

দৈনিক বগুড়া

সর্বশেষ: