
নাওয়াস ইবনে সামআন (রা.) থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসালাম বলেন, কোরআন ও কোরআনের ধারক বাহকরা কিয়ামতের দিন এমনভাবে হাজির হবে যে, সূরা আল বাকারা ও আলে ইমরান তাদের আগে আগে থাকবে। নাওয়াস (রা.) বলেন, রাসূল (সা.) এ দু’টি সূরার আগমনের তিনটি উদাহরণ দিয়েছেন, আমি সেগুলো এখনও ভুলিনি। তিনি বলেন, (১) এ দু’টি সূরা ছায়ার -মতো আসবে, আর এতদুভয়ের মাঝে থাকবে আলো। (২) অথবা এ দু’টি কালো মেঘ খন্ডের ন্যায়। (৩) অথবা ডানা বিস্তারকারী পাখীর ন্যায় আসবে এবং তাদের সাথীর পক্ষ হয়ে বিতর্ক করবে (তিরমিযি-১১৬)।
নিম্নে ধারাবাহিকভাবে সূরা আলে ইমরানের আয়াত নাজিলের প্রেক্ষাপট ও অর্থ উল্লেখ করা হলো-
قَدْ كَانَ لَكُمْ آيَةٌ فِي فِئَتَيْنِ الْتَقَتَا فِئَةٌ تُقَاتِلُ فِي سَبِيلِ اللّهِ وَأُخْرَى كَافِرَةٌ يَرَوْنَهُم مِّثْلَيْهِمْ رَأْيَ الْعَيْنِ وَاللّهُ يُؤَيِّدُ بِنَصْرِهِ مَن يَشَاء إِنَّ فِي ذَلِكَ لَعِبْرَةً لَّأُوْلِي الأَبْصَارِ
অর্থ : নিশ্চয়ই দু’টি দলের মোকাবিলার মধ্যে তোমাদের জন্য নিদর্শন ছিল। একটি দল আল্লাহর রাহে যুদ্ধ করে। আর অপর দল ছিল কাফেরদের এরা স্বচক্ষে তাদেরকে দ্বিগুন দেখছিল। আর আল্লাহ যাকে নিজের সাহায্যের মাধ্যমে শক্তি দান করেন। এরই মধ্যে শিক্ষনীয় রয়েছে দৃষ্টি সম্পন্নদের জন্য। (আয়াত-১৩)।
زُيِّنَ لِلنَّاسِ حُبُّ الشَّهَوَاتِ مِنَ النِّسَاء وَالْبَنِينَ وَالْقَنَاطِيرِ الْمُقَنطَرَةِ مِنَ الذَّهَبِ وَالْفِضَّةِ وَالْخَيْلِ الْمُسَوَّمَةِ وَالأَنْعَامِ وَالْحَرْثِ ذَلِكَ مَتَاعُ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَاللَّهُ عِندَهُ حُسْنُ الْمَآبِ.
অর্থ : নারী জাতির প্রতি ভালোবাসা, সন্তান-সন্তুতি, কাঁড়ি কাঁড়ি সোনা রূপা, পছন্দসই ঘোড়া, গৃহপালিত জন্তু ও জমিনের ফসল মানব সন্তানের জন্য লোভনীয় করে রাখা হয়েছে। (আসলে) এসব হচ্ছে পার্থিব জীবনের কিছু ভোগের সামগ্রী (মাত্র)। উৎকৃষ্ট আশ্রয় একমাত্র আল্লাহ তায়ালার নিকট রয়েছে। (আয়াত-১৪)
শানে নুযুল : বর্ণিত আছে যে, যখন নাজরান প্রতিনিধি দল মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে বিতর্ক করার লক্ষ্যে মদিনার দিকে রওয়ানা দিলেন, তখন আবুল হারেছা ও তার বড় ভাই কুরজ খচ্চরের পিঠে ছিল। খচ্চর হোঁচট খেলে তার বড় ভাই বলে উঠল ‘মুহাম্মাদ ধ্বংস হোক’ (নাউযুবিল্লাহ)। আবুল হারেছা বলল, তোমরা ধ্বংস হও। কুরজ এতে বিব্রত হয়ে এর কারণ জিজ্ঞাসা করলে আবুল হারেছা বলল, ইনি সে নবী, যার আগমন বার্তা পূর্ববর্তী কিতাবসমূহে দেয়া হয়েছে। কুরজ জিজ্ঞাসা করল, তাহলে তুমি তার ওপর ঈমান আনছ না কেন? সে উত্তরে বলল, রোমান সম্রাট আমাকে অনেক সুযোগ সুবিধা দিয়ে রেখেছে, সে আমাকে অনেক সম্মান ও মর্যাদা দিয়ে থাকে। আমি যদি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওপর ঈমান আনয়ন করি তবে আমার সব সুযোগ-সুবিধা ছিনিয়ে নিবে, ফলে আমি বিপদগ্রস্ত হয়ে পড়ব। উল্লিখিত আয়াত আবুল হারেছার সেই ভ্রান্ত বিশ্বাসের প্রতিবাদে অবতীর্ণ হয় এবং দুনিয়ার এ সমস্ত বস্তু পরকালীন সম্পদের তুলনায় তুচ্ছ বলে ঘোষণা করা হয়।
قُلْ أَؤُنَبِّئُكُم بِخَيْرٍ مِّن ذَلِكُمْ لِلَّذِينَ اتَّقَوْا عِندَ رَبِّهِمْ جَنَّاتٌ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا وَأَزْوَاجٌ مُّطَهَّرَةٌ وَرِضْوَانٌ مِّنَ اللّهِ وَاللّهُ بَصِيرٌ بِالْعِبَادِ
অর্থ : বলুন, আমি কি তোমাদেরকে এসবের চাইতেও উত্তম বিষয়ের সন্ধান বলবো? যারা পরহেযগার, আল্লাহর নিকট তাদের জন্যে রয়েছে বেহেশত, যার তলদেশে প্রস্রবণ প্রবাহিত-তারা সেখানে থাকবে অনন্তকাল। আর রয়েছে পরিচ্ছন্ন সঙ্গিনীরা এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি। আর আল্লাহ তাঁর বান্দাদের প্রতি সুদৃষ্টি রাখেন। (আয়াত-১৫)।
الَّذِينَ يَقُولُونَ رَبَّنَا إِنَّنَا آمَنَّا فَاغْفِرْ لَنَا ذُنُوبَنَا وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ
অর্থ : যারা বলে, হে আমাদের পালনকর্তা, আমরা ঈমান এনেছি, কাজেই আমাদের গোনাহ ক্ষমা করে দাও আর আমাদেরকে দোযখের আজাব থেকে রক্ষা কর। (আয়াত-১৬)
الصَّابِرِينَ وَالصَّادِقِينَ وَالْقَانِتِينَ وَالْمُنفِقِينَ وَالْمُسْتَغْفِرِينَ بِالأَسْحَارِ
অর্থ : তারা ধৈর্য্যধারণকারী, সত্যবাদী, নির্দেশ সম্পাদনকারী, সৎপথে ব্যয়কারী এবং শেষরাতে ক্ষমা প্রার্থনাকারী। (আয়াত-১৭)
شَهِدَ اللهُ أَنَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ وَالْمَلاَئِكَةُ وَأُوْلُواْ الْعِلْمِ قَآئِمَاً بِالْقِسْط
অর্থ : আল্লাহ সাক্ষ্য দিয়েছেন যে, তাকে ছাড়া আর কোনো উপাস্য নেই। সেই সঙ্গে ফেরেশতারা ও আহলে ইলমরাও সাক্ষ্য দিয়েছেন, তিনি ন্যায় নীতিতে প্রতিষ্ঠিত। তিনি ছাড়া আর কোনো ইলাহ নেই। তিনি পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়। (আয়াত : ১৮)।
শানে নুযুল : ইমাম বগভী (রহ.) বলেন, সিরিয়া থেকে দু’জন বিশিষ্ট ইহুদি পন্ডিত একবার মদিনায় আগমন করেন। মদিনার আবাসিক এলাকা দেখে তারা মন্তব্য করেন যে, শেষ যামানার নবী যে রকম লোকালয়ে অবস্থান করবেন বলে তাওরাতে ভবিষ্যদ্বানী রয়েছে এটা ঠিক সে রকম বলেই মনে হচ্ছে। এরপর তারা জানতে পারেন যে, এখানে একজন মহান ব্যক্তি আছেন যাকে সবাই নবী বলে আখ্যায়িত করে। তারা হজরত নবী করিম (সা.) এর দরবারে উপস্থিত হলেন। তার প্রতি দৃষ্টি পড়তেই তাওরাত বর্ণিত আখেরী নবীর গুণাবলী তাদের সামনে ভেসে ওঠে। তারা বললেন, আপনি কি মুহাম্মাদ? তিনি বলেন হ্যাঁ, তারা বলল, আপনি কি আহমাদ? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তারা আরো বললেন. আমরা আপনাকে একটি প্রশ্ন করবো। যদি আপনি সঠিক উত্তর দেন তবে আমরা আপনার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করবো। হজরত নবী করিম (সা.) বললেন, প্রশ্ন করুন। তারা বললেন, আসমানী কিতাবসমূহের মধ্যে আল্লাহ তায়ালা সম্পর্কিত সর্ববৃহৎ সাক্ষ্য কোনটি? এ প্রশ্নের উত্তরেই আলোচ্য আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। হজরত নবী করিম (সা.) আয়াতটি তিলাওয়াত করে তাদের শুনিয়ে দিলে তারা তৎক্ষনাৎ মুসলমান হয়ে যান। (মাআরিফুল কোরআন : ১৬৮)।
إِنَّ الدِّينَ عِندَ اللّهِ الإِسْلاَمُ وَمَا اخْتَلَفَ الَّذِينَ أُوْتُواْ الْكِتَابَ إِلاَّ مِن بَعْدِ مَا جَاءهُمُ الْعِلْمُ بَغْيًا بَيْنَهُمْ وَمَن يَكْفُرْ بِآيَاتِ اللّهِ فَإِنَّ اللّهِ سَرِيعُ الْحِسَابِ
অর্থ : নিঃসন্দেহে আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য দ্বীন একমাত্র ইসলাম। এবং যাদের প্রতি কিতাব দেয়া হয়েছে তাদের নিকট প্রকৃত জ্ঞান আসার পরও ওরা মতবিরোধে লিপ্ত হয়েছে, শুধুমাত্র পরস্পর বিদ্বেষবশত:, যারা আল্লাহর নিদর্শনসমূহের প্রতি কুফরী করে তাদের জানা উচিত যে, নিশ্চিতরূপে আল্লাহ হিসাব গ্রহণে অত্যন্ত দ্রুত। (আয়াত-১৯)।
فَإنْ حَآجُّوكَ فَقُلْ أَسْلَمْتُ وَجْهِيَ لِلّهِ وَمَنِ اتَّبَعَنِ وَقُل لِّلَّذِينَ أُوْتُواْ الْكِتَابَ وَالأُمِّيِّينَ أَأَسْلَمْتُمْ فَإِنْ أَسْلَمُواْ فَقَدِ اهْتَدَواْ وَّإِن تَوَلَّوْاْ فَإِنَّمَا عَلَيْكَ الْبَلاَغُ وَاللّهُ بَصِيرٌ بِالْعِبَادِ
অর্থ : যদি তারা তোমার সঙ্গে বিতর্কে অবতীর্ণ হয় তবে বলে দাও, ‘আমি এবং আমার অনুসরণকারীরা আল্লাহর প্রতি আত্নসমর্পণ করেছি।’ আর আহলে কিতাবদের এবং নিরক্ষরদের বলে দাও যে, তোমরাও কি আত্নসমর্পণ করেছ? তখন যদি তারা আত্নসমর্পণ করে, তবে সরল পথ প্রাপ্ত হলো, আর যদি মুখ ঘুরিয়ে নেয়, তাহলে তোমার দায়িত্ব হলো শুধু পৌঁছে দেয়া। আর আল্লাহর দৃষ্টিতে রয়েছে সব বান্দা। (আয়াত-২০)
إِنَّ الَّذِينَ يَكْفُرُونَ بِآيَاتِ اللّهِ وَيَقْتُلُونَ النَّبِيِّينَ بِغَيْرِ حَقٍّ وَيَقْتُلُونَ الِّذِينَ يَأْمُرُونَ بِالْقِسْطِ مِنَ النَّاسِ فَبَشِّرْهُم بِعَذَابٍ أَلِيمٍ
অর্থ : যারা আল্লাহর নিদর্শনাবলীকে অস্বীকার করে এবং পয়গম্বরগণকে হত্যা করে অন্যায়ভাবে, আর সেসব লোককে হত্যা করে যারা ন্যায়পরায়ণতার নির্দেশ দেয় তাদেরকে বেদনাদায়ক শাস্তির সংবাদ দিন। (আয়াত-২১)
أُولَـئِكَ الَّذِينَ حَبِطَتْ أَعْمَالُهُمْ فِي الدُّنْيَا وَالآخِرَةِ وَمَا لَهُم مِّن نَّاصِرِينَ
অর্থ : এরাই হলো সে লোক যাদের সমগ্র আমল দুনিয়া ও আখেরাত উভয়লোকেই বিনষ্ট হয়ে গেছে। পক্ষান্তরে তাদের কোনো সাহায্যকারীও নেই। (আয়াত-২২)।
أَلَمْ تَرَ إِلَى الَّذِينَ أُوْتُواْ نَصِيبًا مِّنَ الْكِتَابِ يُدْعَوْنَ إِلَى كِتَابِ اللهِ لِيَحْكُمَ بَيْنَهُم ثُمَّ يَتَوَلَّى فَرِيقٌ مِّنْهُمْ وَهُم مُّعْرِضُونَ
অর্থ : হে রাসূল! আপনি কি তাদের দেখেননি, যারা কিতাবের কিছু অংশ পেয়েছে আল্লাহর কিতাবের প্রতি তাদের আহ্বান করা হয় যাতে (সে কিতাবের মাধ্যমে) তাদের মধ্যে মিমাংসা করা যায়। অতঃপর তাদের মধ্যে একদল তা অমান্য করে মুখ ফিরিয়ে নেয়। (আয়াত : ২৩)।
শানে নুযুল : হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। একবার নবী করিম (সা.) বাইতুল মাকদাসে এক ইহুদি সম্প্রদায়ের কাছে তাশরীফ নিয়ে গেলেন এবং তাদেরকে আল্লাহ পাকের দ্বীনের দিকে আহ্বান করলেন। তাদের মাঝে নুআঈম বিন আমর ও হারেছ বিন যায়েদ নামক দু’ব্যক্তি প্রশ্ন করল, আপনার ধর্ম কি? জবাবে নবী করিম (সা.) এরশাদ করলেন, হজরত ইব্রাহিম (আ.) এর ধর্মই আমার ধর্ম। তারা বলল, তিনি তো ইহুদি ছিলেন। ইরশাদ করলেন, তাওরাত খুলে দেখ। তাওরাতই আমাদের মাঝে মিমাংসা করবে। তারা তাতে সম্মত হলো না। সেই প্রেক্ষিতে আল্লাহপাক আলোচ্য আয়াত নাজিল করেন।
ذَلِكَ بِأَنَّهُمْ قَالُواْ لَن تَمَسَّنَا النَّارُ إِلاَّ أَيَّامًا مَّعْدُودَاتٍ وَغَرَّهُمْ فِي دِينِهِم مَّا كَانُواْ يَفْتَرُونَ
অর্থ : তা এজন্য যে, তারা বলে থাকে যে, দোযখের আগুন আমাদের স্পর্শ করবে না; তবে সামান্য হাতে গোনা কয়েকদিনের জন্য স্পর্শ করতে পারে। নিজেদের উদ্ভাবিত ভিত্তিহীন কথায় তারা ধোকা খেয়েছে। (আয়াত-২৪)।
فَكَيْفَ إِذَا جَمَعْنَاهُمْ لِيَوْمٍ لاَّ رَيْبَ فِيهِ وَوُفِّيَتْ كُلُّ نَفْسٍ مَّا كَسَبَتْ وَهُمْ لاَ يُظْلَمُونَ
অর্থ : কিন্তু তখন কি অবস্থা দাঁড়াবে যখন আমি তাদেরকে একদিন সমবেত করবো যে দিনের আগমনে কোনো সন্দেহ নেই আর নিজেদের কৃতকর্ম তাদের প্রত্যেকেই পাবে তাদের প্রাপ্য প্রদান মোটেই অন্যায় করা হবে না। (আয়াত-২৫)।
قُلِ اللَّهُمَّ مَالِكَ الْمُلْكِ تُؤْتِي الْمُلْكَ مَن تَشَاء وَتَنزِعُ الْمُلْكَ مِمَّن تَشَاء وَتُعِزُّ مَن تَشَاء وَتُذِلُّ مَن تَشَاء بِيَدِكَ الْخَيْرُ إِنَّكَ عَلَىَ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
অর্থ : বলুন ইয়া আল্লাহ! তুমিই সার্বভৌম শক্তির অধিকারী। তুমি যাকে ইচ্ছা রাজ্য দান কর এবং যার কাছ থেকে ইচ্ছা রাজ্য ছিনিয়ে নাও এবং যাকে ইচ্ছা সম্মান দান কর আর যাকে ইচ্ছা অপমানে পতিত কর। তোমারই হাতে রয়েছে যাবতীয় কল্যাণ। নিশ্চয়ই তুমি সর্ব বিষয়ে ক্ষমতাশীল। (আয়াত : ২৬)।
বর্ণিত আছে যে, খন্দকের যুদ্ধে পরিখা খননের সময় পাথর ভাঙ্গার কালে একটি আগুনের স্ফুলিঙ্গ উত্থিত হলো। এ অগ্নি স্ফুলিঙ্গ আলোকচ্ছটা বেশ দূর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ল। হজরত নবী করিম (সা.) বললেন, এ আলোকচ্ছটায় আমাকে হিরা ও পারস্য সাম্রাজ্যের রাজ প্রাসাদ দেখানো হয়েছে। এরপর ২য় বার আঘাত করতেই আরেকটি অগ্নিস্ফুলিঙ্গ বিচ্ছুরিত হলো। তিনি বললেন, এ আলোকচ্ছটায় আমাকে রোম সাম্রাজ্যের লাল বর্ণের রাজ প্রাসাদ ও দালান কোঠা দেখানো হয়েছে। অতঃপর তৃতীয়বার আঘাত করতেই আবার আলোকচ্ছটা ছড়িয়ে পড়ল। তিনি বললেন, এতে আমাকে সানআ ইয়ামনের সুউচ্চ রাজ প্রাসাদ দেখানো হয়েছে। তিনি আরো বললেন, আমি তোমাদের সুসংবাদ দিচ্ছি জিবরাইল (আ.) আমাকে বলেছেন যে, আমার উম্মত অদূর ভবিষ্যতে এসব দেশ জয় করবে। এ সংবাদ মদিনার মুনাফেকরা ঠাট্টা বিদ্রুপের একটা সুযোগ পেয়ে বসল। তারা বলতে লাগল দেখ, প্রাণ বাঁচানোই যাদের পক্ষে দায়, যারা শত্রুর ভয়ে আহার নিদ্রা ত্যাগ করে দিবারাত্র পরিখা খননে ব্যস্ত তারাই কিনা পারস্য, রোম ও ইয়ামান জয় করার দিবা স্বপ্ন দেখছে। আল্লাহ তায়ালা এসব নির্বোধ জালেমদের উত্তরেই আলোচ্য আয়াতটি নাজিল করেছেন। (মাআরিফুল কোরআন-১৭০)। চলবে...
দৈনিক বগুড়া