শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আইপিএল থেকে ভারতের প্রাপ্তি ১০ ভবিষ্যৎ তারকা

আইপিএল থেকে ভারতের প্রাপ্তি ১০ ভবিষ্যৎ তারকা

ভারতের বর্তমান ক্রিকেট দলটি বলতে গেলে আইপিএলেরই প্রোডাক্ট। বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা থেকে শুরু করে বর্তমান ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রায় অধিকাংশ ক্রিকেটারই উঠে এসেছেন এই আইপিএল থেকে।

প্রতিটি আইপিএলই বেশ কিছু তারকা ক্রিকেটার উপহার দেয় ভারতকে। এবারও আরব আমিরাতের আইপিএল থেকে বেশ কয়েকজন ভবিষ্যৎ তারকাকে খুঁজে বের করেছে ভারতীয় ক্রিকেট।

মূলতঃ আইপিএল হল প্রতিভা খোঁজার উপযুক্ত মঞ্চ। সেই মঞ্চে প্রতিবারই জ্বলে ওঠেন কোনো না কোনো তরুণ তুর্কি। এদের অনেকেই নিজেদের প্রথম সারির তারকা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এই মৌসুমে কারা সেই তারকা, যারা ভবিষ্যতে নিজেদের প্রথম সারির তারকা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেন? চলুন দেখা যাক সেই তালিকা।

১। ঈশান কিষান (মুম্বই ইন্ডিয়ান্স)
২০১৮ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দলের অধিনায়ক। এবারের আইপিএলে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছেন পকেট ডাইনামাইট হিসেবে। ১৪ ম্যাচে তার রানসংখ্যা ৫১৬। গড় ৫৭.৩৩, স্ট্রাইক রেট ১৪৫.৭৬। ফাইনালেও অপরাজিত ৩৩ রান করে মুম্বাইকে শিরোপা উপহার দিয়েছেন তিনি।

২। দেবদূত পাড্ডিকাল (রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু)
এবারের আইপিএলের সেরা খোঁজ এই বাঁ-হাতি ওপেনার। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর হয়ে ছিলেন সর্বোচ্চ স্কোরার। তার সংগ্রহ ১৫ ম্যাচে ৪৭৩ রান। স্ট্রাইক রেট ১২৪.৮। তিনি সেই দলের হয়ে খেলেছেন, যে দলে বিরাট কোহলি, এ বি ডিভিলিয়ার্সরা আছেন। আগামী দিনে নজর থাকবে দেবদূতের দিকে।

৩। শুভমান গিল (কলকাতা নাইট রাইডার্স)
এবারের আইপিএলে নিজের প্রতিভার প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। বড় ইনিংস আসেনি সেভাবে। তবু শুভমান এই তালিকায় জায়গা পেয়েছেন নিজের ধারাবাহিকতা আর প্রতিভার বিচ্ছুরণের জন্য। এবারের আইপিএলে ১৪ ম্যাচে তার সংগ্রহ ৪৪০ রান। স্ট্রাইক রেট ১১৭.৯৬ করে।

৪। ঋতুরাজ গায়কোয়াড় (চেন্নাই সুপার কিংস)
চেন্নাই সুপার কিংসের এই আইপিএলে একটাই প্রাপ্তি। সেটা হলেন ঋতুরাজ গায়কোয়াড়। ধোনিদের দুঃস্বপ্নের বছরের উজ্বল তারকা। টুর্নামেন্টের শুরুতে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হন। তবু শেষ তিন ম্যাচে তিনি প্রায় একার হাতে জিতিয়েছেন দলকে। মাত্র ৬ ম্যাচে তার রান ২০৪।

৫। রাহুল চাহার (মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স)
টুর্নামেন্টের শুরুতে অনেকেই ভেবেছিলেন মুম্বাইয়ের স্পিন বিভাগ একমাত্র দুর্বলতার জায়গা; কিন্তু রাহুল চাহার তাদের ভুল প্রমাণ করলেন। ফাইনালে টেকনিক্যাল কারণে তাকে একাদশে রাখা হয়নি। তার আগে ১৫ ম্যাচে টুর্নামেন্টে ১৫টি উইকেট পেয়েছেন এই তরুণ অফ স্পিনার। ওভার পিছু রানের গড় মাত্র ৮.১৬।

৬। আবদুল সামাদ (সানরাইজার্স হায়দরাবাদ)
পরিসংখ্যান সবসময় সত্যি কথা বলে না। আইপিএলে কাশ্মিরের তরুণ অল-রাউন্ডার আবদুল সামাদের পরিসংখ্যান একেবারেই নজরকাড়া নয়; কিন্তু ব্যাট হোক, কিংবা বল। যখনই সুযোগ পেয়েছেন সামাদ দেখিয়ে দিয়েছেন, তার মধ্যে সবরকম রসদ আছে। অনায়াসে বাউন্ডারি পার করার ক্ষমতা তিনি রাখেন। আবার বোলিংয়েও ক্যাপ্টেনের জন্য উপযোগী ভূমিকা নিতে পারেন।

৭। ওয়াশিংটন সুন্দর (রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু)
বেশ পরিচিত নাম। তবে এবারের আইপিএলে নতুন করে নিজেকে আবিষ্কার করেছেন ওয়াশিংটন সুন্দর। নিয়মিত বোলিং করেছেন পাওয়ার-প্লে বা চাপের সময়। অথচ ইকোনমি রেট ৬-এরও কম। মাত্র ৫.৯৬। সে সঙ্গে ৬টি উইকেটও পেয়েছেন। সঙ্গে প্রয়োজনে ব্যাট হাতেও লম্বা ছক্কা হাঁকাতে পারেন তিনি।

৮। রবি বিষ্ণোই (কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব)
গত বছর অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে প্রথম নজরে আসেন। আশা ছিল আইপিএলে নিজেকে মেলে ধরবেন। করলেনও সেটাই। ১৪ ম্যাচে ১৪ উইকেট। ইকনোমি রেট মাত্র ৭.৩৭। পাঞ্জাবের অধিনায়কের অন্যতম ভরসা ছিলেন বিষ্ণোই।

৯। টি নটরাজন (সানরাইজার্স হায়দরাবাদ)
ভুবনেশ্বর কুমারের চোটের পর সানরাইজার্স হায়দরাবাদ কর্মকর্তারা তখন দিশেহারা। সে অর্থে নামী কোনও ভারতীয় তারকা দলে ছিলেন না। তখনই এগিয়ে আসেন টি নটরাজন। আইপিএলে ভারতের অন্যতম সেরা প্রাপ্তি এ বাঁ-হাতি বোলার। পাওয়ার-প্লে, ডেথ ওভার সবসময় বল করতে পারেন। নিখুঁত ইয়র্কার দেওয়ার ক্ষমতা আছে। টুর্নামেন্টে উইকেট পেয়েছেন ১৬টি।

১০। শিবাম মাভি (কলকাতা নাইট রাইডার্স)
চোটের জন্য পুরো দুই বছর কেকেআরে থাকা সত্বেও সেভাবে দেখা যায়নি খেলতে। এ বছর কিন্তু নিজেকে মেলে ধরলেন মাভি। যখনই সুযোগ পেলেন, চিনিয়ে দিলেন নিজের জাত। পাওয়ার প্লে হোক, কিংবা ডেথ ওভার। কেকেআরের অন্যতম ভরসা ছিলেন মাভি। ৮ ম্যাচে তিনি সংগ্রহ করেছেন ৯ উইকেট। ওভার পিছু রান ৮.১৫।

এছাড়াও কমলেশ নাগারকোটি, প্রিয়ম গর্গ, আর্শদীপ সিং, প্রসিদ্ধ কৃষ্ণা, সুদিপ ত্যাগি, রায়ান পরাগদের মতো তুলনায় অপরিচিত নাম এবারের আইপিএলে নজর কেড়েছেন। সাঞ্জু স্যামসন, সূর্যকুমার যাদব, মোহাম্মদ সিরাজ, সন্দিপ শর্মারাও দুর্দান্ত পারফর্ম করেছেন নিজেদের দলের হয়ে।

দৈনিক বগুড়া