শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বগুড়ায় ইউএনও’র তত্ত্বাবধানে সাড়ে তিন হাত মাটি পেল চন্দ্রভানু

বগুড়ায় ইউএনও’র তত্ত্বাবধানে সাড়ে তিন হাত মাটি পেল চন্দ্রভানু

মহামারি করোনায় নিজের নিরাপত্তার কথা না ভেবে দিনরাত জনগনের সেবায় নিজেকে ব্যস্ত রেখেছেন বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোঃ রাসেল মিয়া।

কর্মস্থলে মানসিক ও শারীরিক প্রতিবন্ধী, ভিক্ষুক, শিক্ষার্থীসহ অসংখ্য গরিব দুঃখী অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি। খবরের কাগজ বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনো অসহায় মানুষের খবর আসলে ছুটে গিয়েছেন তাদের বাড়ি বা ডেকে এনেছেন তার কার্যালয়ে। প্রশাসনিক উদ্যোগের পাশাপাশি অনেক সময় ব্যক্তিগত উদ্যোগ এবং নিজের অর্থে অনেকের পাশে থেকেছেন।

 

একদিকে করোনা মহামারি অন্য দিকে বন্যা। করোনা ও বন্যা একসঙ্গে মোকাবিলা করতে হচ্ছে। ফলে ভোগান্তি বেড়েছে অনেক বেশি। মৃত্যুর পর প্রতিটি মানুষের শেষ ঠিকানা সাড়ে তিন হাত মাটি। কিন্তু সেই সাড়ে তিন হাত মাটিও এখন উপজেলার বিভিন্ন চরাঞ্চল এলাকায় অবশিষ্ট নেই। বন্যার পানি মানুষের শেষ ঠিকানাটিও ডুবিয়ে দিয়েছে।

সেসব এলাকায় কেউ মারা গেলে সমাহিত করাও দুস্কর হয়ে গেছে। গত বৃহস্পতিবার মারা গেছেন সত্তর বছরের বৃদ্ধা মা চন্দ্রভানু। বন্যায় উচু নিচু সব জমি ডুবে গেছে। কবর দেওয়ার মতো সাড়ে তিন হাত শুকনো মাটিও নেই।

এদিকে বৃদ্ধা মায়ের মৃতদেহ পানিতে ভাসিয়ে দেয়ার চিন্তাও চলছিল। ইউএনও খবরটি পাওয়ার সাথে সাথেই ছুটে যান প্রত্যন্ত গ্রামে সেই নিহতের পরিবারের বাড়িতে। দেখতে পেলেন নিহতের বাড়ির পাশেই সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকার সবচেয়ে’ উঁচু জায়গা। কিন্তু সেখানে কবর দিতে প্রকল্পে বসবাসরতদের আপত্তি। পুরো আশ্রয়ণ প্রকল্প ঘুরে উপস্থিতদের বুঝাইলেন, অবশেষে সদয় হলেন উপস্থিতরা।

কবরের জায়গার ব্যবস্থা হলো। জানাজা ও দাফনের কাজ সম্পন্ন হলো। উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোঃ রাসেল মিয়ার তত্ত্বাবধায়ণে পরে সেখানেই শেষ ঠিকানা হলো চন্দ্রভানুর।

উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোঃ রাসেল মিয়া বলেন, মানবসেবার ব্রত নিয়েই চাকুরিতে এসেছি। আমি এ উপজেলাবাসীর জন্য যেটা করছি তাহা আমার দায়িত্ব ও কর্তব্য বোধ থেকেই করছি। যতদিন চাকরি করবো ততদিন মানুষের সেবা করার চেষ্টা করবো।

দৈনিক বগুড়া