শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বগুড়ায় কাল শুরু হতে পারে করোনা পরীক্ষা

বগুড়ায় কাল শুরু হতে পারে করোনা পরীক্ষা

বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের তৃতীয় তলায় মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের গবেষণাগারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো পিসিআর (পলিমারেজ চেইন রিঅ্যাকশন) যন্ত্রটি বসানোর কাজ আজ রোববার শেষ হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে কাল সোমবার সকাল থেকে করোনা পরীক্ষা শুরু করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ রেজাউল আলম।

রেজাউল আলম বলেন, পিসিআর যন্ত্র স্থাপনের শেষ মুহূর্তে বিশেষজ্ঞ দল একটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র সরানো এবং পরীক্ষাগারে একটি পার্টিশন দেওয়ার পক্ষে মত দেয়। আজ গণপূর্ত অধিদপ্তর থেকে শেষ মুহূর্তের কাজ শেষ করেছে। পরীক্ষাগারের জন্য কেন্দ্রীয় ওষুধ সংরক্ষণাগার (সিএমএসডি) থেকে যাবতীয় উপকরণের সরবরাহ মিলেছে। সব মিলিয়ে করোনা শনাক্তকরণ পরীক্ষার জন্য ল্যাব প্রস্তুত। কাল সকাল থেকেই আনুষ্ঠানিকভাবে করোনা পরীক্ষা কার্যক্রম শুরু হবে। ল‍্যাবে প্রতিদিন ৯৬টি নমুনা পরীক্ষা করা যাবে। চার ঘণ্টা পর ফলাফল জানা যাবে।

বগুড়ায় পরীক্ষা শুরুর ফলে বগুড়া ছাড়া জয়পুরহাট, নওগাঁ, সিরাজগঞ্জসহ এই অঞ্চলের মানুষের দ্রুততম সময়ের মধ্যে করোনাভাইরাস শনাক্ত করার এবং কোভিড-১৯ রোগের চিকিৎসা সহজে পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হবে।

বগুড়ার সিভিল সার্জন গউসুল আজিম চৌধুরী বলেন, করোনায় আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসায় মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে আইসোলেশন কেন্দ্র চালু হয়েছে। তবে আগে করোনা পরীক্ষার জন্য ঢাকায় রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) এবং রাজশাহী মেডিকেল কলেজে নমুনা পাঠিয়ে ফলাফলের জন্য অপেক্ষায় থাকতে হতো। বগুড়ায় করোনার পরীক্ষা শুরু হলে এই বিড়ম্বনার অবসান হবে।

কলেজ সূত্র জানায়, রোগীর উপসর্গ দেখে যাঁদের পরীক্ষা করা প্রয়োজন হবে, চিকিৎসকদের পরামর্শে শুধু তাঁদের নমুনা সংগ্রহ করে মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের পরীক্ষাগারে পিসিআর যন্ত্রে পরীক্ষা করা হবে। পরীক্ষাসংক্রান্ত তথ্য দ্রুত সময়ে ঢাকার আইইডিসিআরে পাঠানো হবে। পরীক্ষায় বগুড়ার যেসব রোগীর পজিটিভ আসবে, তাঁদের মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হবে। মাইক্রোবায়োলজি বিভাগে জনবলসংকট থাকলেও সংযুক্ত শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সঙ্গে সমন্বয় করে পরীক্ষা কার্যক্রম চালানো হবে।

বাংলাদেশে নভেল করোনাভাইরাস নামে প্রাণঘাতী ভাইরাসটির অস্তিত্ব গত ৮ মার্চ প্রথম ধরা পড়ে। তারপর থেকেই ওই ভাইরাসে আক্রান্ত এবং মৃত্যুর ঘটনা বেড়েই চলেছে। শুরুতে শুধু ঢাকার একটি স্থানেই করোনাভাইরাস শনাক্তকরণের ব্যবস্থা রাখা হলেও পরবর্তী সময়ে তা দেশের অন্য বিভাগীয় শহরের মেডিকেল কলেজগুলোতেও চালু করা হয়। রাজশাহী বিভাগের ৮ জেলার জন্য মার্চের শেষ সপ্তাহে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগে করোনাভাইরাস শনাক্তকরণ যন্ত্র পিসিআর স্থাপন করা হয়। বর্তমানে সেখানেই বগুড়ার নমুনাগুলো পরীক্ষার জন্য পাঠানো হচ্ছে।

বগুড়ার সিভিল সার্জন গউসুল আজিম চৌধুরী বলেন, আজ সকাল পর্যন্ত জেলা থেকে করোনা পরীক্ষার জন্য ৩৩২ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে আজ সকাল পর্যন্ত ফলাফল পাওয়া গেছে ১৭৬ জনের।

দৈনিক বগুড়া