শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বাড়ির ছাদেই তৈরি করছেন ছাদ বাগান-জাহিদ

বাড়ির ছাদেই তৈরি করছেন ছাদ বাগান-জাহিদ

নাগরিক সভ্যতার শহরগুলো থেকে হারিয়ে যাচ্ছে সবুজ। কিন্তু মানুষ তার শিকড়কে সহজে ভুলতে পারে না। শৌখিন মানুষ তাদের ঘরবাড়িতে সবুজকে ধরে রাখার জন্য নিজস্ব ভাবনা আর প্রচেষ্টায় বাড়ির ছাদেই তৈরি করছেন ছাদ বাগান। এমনই এক সবুজপ্রেমী খুলনার দক্ষিণ টুটপাড়া ছোট খালপাড় এলাকার মো. জাহিদ হোসেন শেখ।

বাড়ির ছাদে গড়েছেন শাক-সবজি, ফুল-ফলের বাগান। এতে বাহারি গাছের সঙ্গে আছে ওষুধি গাছ। আছে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন রকমের গাছ। শহুরে জীবনে সবুজের সজীবতার মধ্যে বেঁচে থাকতেই এই প্রয়াস। এক হাজার ৭০০ বর্গফুটের ছাদের চারপাশ দিয়ে তৈরি করেছেন মাটি ভর্তি হাউজ, রয়েছে বিভিন্ন রঙ-বেরঙের টব।

সেখানে রয়েছে বট, চার প্রজাতির ড্রাগন, মাল্টা, এডিনিয়াম, কয়েক প্রজাতির আম, কমলা, সিডলেস লেবু, মরিচ, বিভিন্ন ধরনের পেয়ারা, কাগজি লেবু, পেঁপে, সফেদা, আঙুর, বেল, আমড়া, থাই কাঁঠাল, খেজুর, বাতাবি লেবু, কদবেল, নাশপাতি, থাই জাম, দেশি জাম, করমচা, আপেল, বেগুন, মরিচ, শাক, শিম, পাতাবাহার, পান কপ্পুর, জুঁই, টগর, কামিনী, মধুমালতি, মাধবীলতা, বিভিন্ন ধরনের অর্কিড, ক্যাকটাস থাই সুপারিসহ ফলজ, বনজ, ভেষজ বা ওষধি, শোভাবর্ধনকারী এবং দেশিয় বিলুপ্তপ্রায় গাছ। 

ভালোবাসার ছোঁয়ায় গাছগুলোকে নিজের সন্তানের মতো গড়ে তুলেছেন। কোন গাছের কি প্রয়োজন তা ভালোভাবেই জানেন তিনি। সে অনুযায়ী যত্নও নেন। বাগানে বিকেল থেকেই শুরু হয় নানান পাখির আনাগোনা। সবুজঘেরা প্রকৃতিতে পাখিদের মিষ্টি নানান শব্দ যেনো মন ভরিয়ে দেয়।

জাহিদ হোসেন বলেন, আমি খুলনা সিটি কর্পোরশেনে চাকরি করি। অফিস শেষে যতটুকু সময় পাই সেই সময় এখানে ব্যয় করি। মধ্যরাত পর্যন্ত এখানে কাজ করি। ভাল লাগে। 

তিনি আরো বলেন, শুরু করেছিলাম ২০১৪ সালের দিকে। শৈশব থেকেই গাছের প্রতি বেশ আগ্রহ ছিল। সে থেকেই শখ। আর এখন পরিবারে বিষমুক্ত শাক-সবজি, ফলের যোগান দেয় এই বাগান। সবুজে ভরে রয়েছে বাড়ির চারপাশ। এ এক অন্যরকম পরিবেশ। আমার কাজে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা করে আমার সহধর্মিণী আনোয়ারা বেগম। বাড়ি নির্মাণ করতে গিয়ে আমরা গাছ কেটে ফেলছি কিন্তু বাড়ি নির্মাণ করে সেই বাড়িতেই পরিকল্পিতভাবে অক্সিজেনের ফ্যাক্টরি তৈরি করা যায়।

খুলনা মেট্রোপলিটন (লবণচরা) কৃষি কর্মকর্তা জেসমিন ফেরদৌস বলেন, নগরীর মানুষ এখন নতুন কোনো বাড়ি নির্মাণ করলে সেই বাড়ির ছাদে বা কার্নিসে গাছ লাগাচ্ছে। এটি ভাল দিক, যে সবাই সবুজকে ভালবাসছে। আমরা কৃষি অফিস থেকে সব ধরনের সহায়তা দিয়ে থাকি। ফলে দিনদিন এ ধরনের বাগানের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

খুলনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সূত্রানুযায়ী, খুলনা মহানগরীতে এ রকম প্রায় ৪৪৫টি ছাদবাগান রয়েছে।

দৈনিক বগুড়া