শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ভাষা আন্দোলনে বগুড়া হয়ে ওঠে মিছিলের শহর

ভাষা আন্দোলনে বগুড়া হয়ে ওঠে মিছিলের শহর

 

বগুড়া শহরে আটচল্লিশের আন্দোলনের ধারাবাহিকতা নিয়ে ১৯৫২-এর ফেব্রুয়ারির আন্দোলন ব্যাপকতা ও তীব্রতা অর্জন করে। এ উপলক্ষে ১২ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় এডওয়ার্ড পার্কে এক বিশাল জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। ছাত্রনেতাদের সবাই এ সভায় উপস্থিত ছিলেন। ১৭ ফেব্রুয়ারির এক বৈঠকে গঠিত হয় সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম কমিটি। এর সভাপতি রাজনীতিবিদ মজিরউদ্দিন আহমেদ, সহসভাপতি কৃষক নেতা আবদুল আজীজ কবিরাজ, আহ্বায়ক ছাত্রনেতা গোলাম মহিউদ্দিন এবং সদস্যদের মধ্যে বিশিষ্টজন শেখ হারুনুর রশীদ, জমিউদ্দিন মন্ডল, ছাত্রনেতা আবদুস শহীদ, শ্রমিক নেতা সুবোধ লাহিড়ি, মোখলেছুর রহমান প্রমুখ।

এডওয়ার্ড পার্কের জনসভার পরই বগুড়ার সর্বত্র আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। বলাবাহুল্য, এতে বিশেষ ভূমিকা ছিল সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম কমিটির সদস্যদের। ‘বগুড়া হয়ে ওঠে মিছিলের শহর। একুশের কয়েক দিন আগে থেকে সংগ্রাম কমিটির ডাকে জেলা স্কুল ময়দানে বিশাল ছাত্র জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন আবদুল আজীজ কবিরাজ। আহ্বান জানানো হয় প্রতিটি থানায় সংগ্রাম কমিটি গঠনের।
একুশে ফেব্রুয়ারি পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী বগুড়ায় হরতাল পালিত হয়। সেই সঙ্গে সভা, মিছিল ও স্লোগান—‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’। অবস্থা ভিন্নদিকে মোড় নেয় ঢাকায় ছাত্র-জনতার ওপর পুলিশের গুলিবর্ষণের সংবাদে। সরকারবিরোধী বিক্ষোভ প্রবল হয়ে ওঠে। সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালিত হয়। হরতাল শেষে অনুষ্ঠিত জনসভায় গৃহীত প্রস্তাবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘অনির্দিষ্টকালের জন্য বগুড়ায় সব শিক্ষায়তন বন্ধ ঘোষণা।’

এখানেই শেষ নয়। পরদিন ২৪ ফেব্রুয়ারিও হরতাল চলে; যানবাহন, দোকানপাট, অফিস-আদালত বন্ধ থাকে। ভাষা-বিক্ষোভ ও আন্দোলন জেলার বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। বিদ্যালয়গুলোকে কেন্দ্র করে শেরপুর, সান্তাহার, রাজারামপুর পার হয়ে আন্দোলন গ্রামাঞ্চলে বিস্তার লাভ করে।

দৈনিক বগুড়া