শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

শিবগঞ্জের সনাতন ধর্মাবলম্বীরা পেল আধুনিকমানের বানাইল মহাশ্মশান

শিবগঞ্জের সনাতন ধর্মাবলম্বীরা পেল আধুনিকমানের বানাইল মহাশ্মশান

অবশেষে বহুল আলোচিত বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলা সদরের বানাইল মহাশ্মশানটি সংস্কার করা হয়েছে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের একমাত্র শ্মশানটি ইট দিয়ে সীমানা প্রাচীর নির্মাণের সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য এসএস পাইপ দিয়ে রেলিং দেওয়া হয়েছে। রাতে শোভা বর্ধনের জন্য আলোর ফোয়ারা লাগিয়ে দৃষ্টিনন্দন করে গড়ে তোলা হয়েছে। 

শিবগঞ্জ পৌরসভার আর্থিক সহায়তায় পৌর মেয়র তৌহিদুর রহমান মানিক নিজে উদ্যোগ নিয়ে নয়নাভিরাম করে নির্মাণ করেছেন মহাশ্মশানটি। এতে করে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা ভীষণ খুশি।  

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯১০সাল থেকে শিবগঞ্জ উপজেলার সদরের বানাইল মৌজার করতোয়া নদীর ধার ঘেঁষে এ মহাশ্মশানটিতে মৃতদেহের সৎকার চলে আসছে। এটি তৎকালীন জমিদার পত্মী নগেন্দ্র্র বালার নামে সিএস ৮৭ দাগের সম্পত্তি। ব্রিটিশ আমল থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত ওই সম্পত্তি হিন্দু জনসাধারণ ব্যবহার করে আসছে। 
শিবগঞ্জ পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী রাশেদ হাসিম জানান, মেয়র মহোদয়ের সার্বিক চেষ্টায় বার্ষিক উন্নয়ন তহবিলের (এডিবি) আওতায় প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা ব্যয়ে বানাইল মহাশ্মশানটি সংস্কার ও শোভাবর্ধনের কাজ করা হয়েছে। এসএস পাইপের প্রধান ফটক (গেট) লাগানোর পর রঙ করা হবে। বৃষ্টি বাদলের কারণে রঙ করতে দেরি হচ্ছে। পুরো কাজ শেষ হলে  দেখার মতো একটি স্পট হবে বানাইল মহাশ্মশানটি।

পৌর এলাকার বানাইল মহল্লার ব্যাংকার সমর কুমার মোহন্ত (গোবিন্দ) শ্মশানের নির্মাণ কাজ প্রসঙ্গে বলেন, ‘মৃত মানুষেরা আর্শিবাদ করতে পারেন কিনা জানি না। তবে আমাদের পূর্বপুরুষের উত্তরাধিকারী হিসাবে মানিক ভাইকে শুভাশিষ জানাই। তার আরও অনেক কিছু করার ইচ্ছে আছে। এখন পরিবেশটা ধরে রাখা এবং রক্ষনাবেক্ষণ বড় চ্যালেঞ্জ আমাদের জন্য।

বানাইল বারোয়ারী কেন্দ্রীয় শিবমন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক লক্ষ্মী নারায়ণ দাস (সংগ্রাম) জানান, সনাতন ধর্মাবলীম্বদের দীর্ঘ দিনের দাবি ছিল মহাশ্মশানটি সংস্কারের। কিন্তু সামর্থ ছিল না। পৌর মেয়র নিজ উদ্যোগে সেই সংস্কার কাজ করে দিয়েছেন। তার প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। 

শিবগঞ্জ উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি রাম নারায়ণ কানু জানান, করতোয়া নদীর পাশে শতবর্ষী এ মহাশ্মশানটিতে দীর্ঘদিন ধরে হিন্দু সম্প্রদায়ের মৃতদেহ সৎকার হয়ে আসছে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে তা ছিল অবহেলিত। অর্ধেক এলাকার কোনো সীমানা প্রাচীর ছিল না।

যার কারণে বেদখল হতে যাচ্ছিল। আলোর কোনো ব্যবস্থা ছিল না। রাতে মৃত দেহ সৎকার করতে গেলে নানা সমস্যায় পড়তে হতো। এসব দেখে পৌর মেয়র তৌহিদুর রহমান মানিক নিজ উদ্যোগে দেড়শ মিটারের বেশি আধুনিক সীমানা প্রাচীর, দৃষ্টিনন্দন আলোর ফোয়ারা, এসএস পাইপের প্রধান ফটক ও সৌরবাতি লাগিয়ে আধুনিকমানের একটি মহাশ্মশান নির্মাণ করেছেন। এজন্য সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পক্ষ থেকে মেয়র মহোদয়কে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

শিবগঞ্জ পৌরসভার মেয়র তৌহিদুর রহমান মানিক বলেন, পৌর এলাকার মধ্যে হিন্দু ধমাবলম্বীদের শত বছরের প্রাচীন একমাত্র বানাইল মহাশ্মশানটি অবহেলিত থাকায় এডিবির অর্থায়নে তা সংস্কার করে আধুনিকায়ন করা হয়েছে। তিনি  বলেন, শোভা বর্ধনের জন্য আলোকিত করার পর মহাশ্মশানটি এখন দিনের বেলার চেয়ে রাতে দেখতেই সুন্দর হয়েছে।

দৈনিক বগুড়া