মেঘনা নদীর ৮০ কেজি ওজনের একটি বাঘাইড় মাছ এসেছে মাছের মেলায়। দাম চাওয়া হচ্ছে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। মৌলভীবাজারের ১ নম্বর খলিলপুর ইউনিয়নের শেরপুরে বসেছে এই মেলা। ১৪ জানুয়ারি পৌষ সংক্রান্তিকে কেন্দ্র করে এবার ৩ একর এলাকাজুড়ে বসেছে মাছের ৩০০টি দোকান।
আয়োজকরা জানিয়েছেন, ১৩ জানুয়ারি রাত থেকে ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত বসে পাইকারি দামে মাছ বিক্রির এই হাট। এখানে সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, সিলেট ও মৌলভীবাজারের বিভিন্ন এলাকার মানুষ ও ব্যবসায়ীরা খুচরা বাজারে বিক্রির জন্য মাছ নিয়ে যান।
মেলা এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, আড়ৎদাররা মাছ নিয়ে এসেছেন। মজুত করে রাখা হয়েছে ছোট-বড় নানা জাতের মাছ। আছে বাঘাইড়, বোয়াল, আইড়, চিতল, কাতলা, রুইসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ।
এছাড়া নানা ধরনের গৃহস্থালি ও বিভিন্ন ধরনের আসবাব, সৌখিন জিনিসপত্র, শিশুদের খেলনা নিয়ে বসেছে অসংখ্য দোকান। অন্যদিকে কাঠের তৈরি খাট, আলমারি, আলনাসহ নানান আসবাবপত্র নিয়েও বসেছেন কয়েকজন দোকানি। ব্যবসায়ীরা বলছেন, শনিবার দিনে মেলায় ভিড় বাড়বে।
পৌষ সংক্রান্তি কেন্দ্র করে মাছের মেলার প্রচলন শুরু করেন জমিদার মথুর বাবু। শুরুতে মেলাটি সদর উপজেলার মনুমুখ এলাকায় হলেও পরবর্তী সময়ে উপজেলার শেরপুরে স্থানান্তর হয়।
মৌলভীবাজারের হাকালুকি, কাওয়াদিঘি, হাইল হাওর এবং মনু, ধলই, কুশিয়ারা নদীসহ বৃহত্তর সিলেটের বিভিন্ন হাওরের মাছের উপর নির্ভর করে প্রতিবছরই বসে এ মেলা। মৎসজীবীরা এ মেলায় মাছ বিক্রির জন্য ৫ থেকে ৬ মাস আগে থেকেই বড় বড় মাছ সংগ্রহ করে থাকেন। সেসব মাছ বিশেষ ব্যবস্থায় পানিতেই বাঁচিয়ে তাজা রাখা হয়।
ব্যবসায়ী শামিম মিয়া বলেন, বাজার জমেছে। আশা রাখি মাছের মেলায় ভালো বেচাকেনা হবে। ১০ লাখ টাকার মাছ মজুত করেছি। এখন পর্যন্ত ৩ লাখ টাকার বিক্রি করেছি।
মাছ ব্যবসায়ী নাজমুল মিয়া বলেন, গত ২ বছর মাছের মেলা বন্ধ ছিল। এবার জমে উঠেছে। নানা প্রজাতির দেশীয় মাছ এসেছে। শাহজালাল মৎস্য আড়তের মালিক ইব্রাহিম মিয়া বলেন, আমার আরতে মেঘনা নদী থেকে ধরা ৮০ কেজি ওজনের বাঘাইড় এসেছে। ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা দাম হয়েছে।
মৌলভীবাজার জেলা মৎস্য অফিসার মিজানুর রহমান বলেন, গত বর্ষায় সিলেট বিভাগে বন্যা হওয়ায় সবকটি হাওর জলাশয়ে মাছের বিচরণ বৃদ্ধির কারণে প্রচুর দেশীয় প্রজাতির মাছের উৎপাদন হয়েছে। গত অর্থবছরে মৌলভীবাজারে মাছের উৎপাদন ছিল ৪ হাজার ৫৫২ টন। এবার এর উৎপাদন আরও বেড়েছে। আগামী জুনে এর হিসাব আসবে।
দৈনিক বগুড়া