রোববার, ১২ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

মিরসরাইয়ে ঢ্যাঁড়শের বাজারমূল্য আড়াই কোটি টাকা

মিরসরাইয়ে ঢ্যাঁড়শের বাজারমূল্য আড়াই কোটি টাকা

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে এবার ঢ্যাঁড়শের বাম্পার ফলন হয়েছে। উচ্চফলনশীল ও দেশীয় জাতের এসব ঢ্যাঁড়শ স্থানীয় বাজার ছাড়াও সীতাকুণ্ড, চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি হচ্ছে। মৌসুমের শুরুতে ঢ্যাঁড়শের দাম পেয়ে খুশি চাষিরা। আউশ ধানের পরিবর্তে ঢ্যাঁড়শ চাষ করে লাভবান হওয়ায় বেড়েছে ঢ্যাঁড়শ আবাদ। এতে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন কৃষকেরা। যে কারণে চাষিদের মধ্যে আগ্রহ বাড়ছে ঢ্যাঁড়শ চাষে।

জানা গেছে, চাষিদের কাছে এখন অর্থকরী ফসল ঢ্যাঁড়শ। মৌসুমি সবজি হলেও এর উৎপাদন হয় বছরজুড়ে। অন্য সবজির তুলনায় ঢ্যাঁড়শে কীট-পতঙ্গের আক্রমণ কম। শ্রমিক ও সারের খরচও অপেক্ষাকৃত কম। বাড়ির নারীরাও সহজে ঢ্যাঁড়শ তুলতে পারেন। এতে শ্রমমূল্য সাশ্রয় হয়। ফলে চাষিদের ঢ্যাঁড়শ বিক্রি নিয়ে চিন্তা করতে হয় না। প্রতি মণ (৪০ কেজি) ঢ্যাঁড়শ বিক্রি হচ্ছে ১০০০-১২০০ টাকায়। এ হিসেবে প্রতি কেজি ২৫ টাকা থেকে ৩০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। এক মেট্রিক টন ঢ্যাঁড়শের বাজারমূল্য ৩০ হাজার টাকা। সে হিসেবে ৮৭৫ মেট্রিক টন ঢ্যাঁড়শের বাজারমূল্য প্রায় ২ কোটি ৬২ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার মিরসরাইয়ে প্রায় ৩৫ হেক্টর জমিতে ঢ্যাঁড়শের আবাদ হয়েছে। সবচেয়ে বেশি আবাদ হয়েছে মিরসরাই সদর, মঘাদিয়া, সাহেরখালী ও খৈয়াছরা ইউনিয়নে। ঢ্যাঁড়শের মধ্যখান দিয়ে কেটে দেওয়ার পর সার-ঔষধ দিলে আবার ফসল উৎপাদন হয়ে থাকে।

মো. কলিম হোসেন নামে এক চাষি বলেন, ‘আমি প্রায় ২৫ শতক জায়গার ওপর ঢ্যাঁড়শ চাষ করেছি। উপজেলার গ্রামীণ বাজারগুলো ছাড়াও সীতাকুণ্ড, বড়দারোগারহাট ও চট্টগ্রাম শহরে বিক্রি করে থাকি। প্রতি মণ ঢ্যাঁড়শ ১০০০-১২০০ টাকায় বিক্রি করা হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘উপজেলা কৃষি অফিস থেকে আমাদের কোনো সহযোগিতা করা হয়নি। আমরা নিজ উদ্যোগে চাষ করছি। কৃষি অফিস থেকে যদি কোনোরকম সহযোগিতা পাই, তাহলে আরও বেশি চাষ করতে পারবো।’

আব্দুল মান্নান নামে আরেক ঢ্যাঁড়শ চাষি বলেন, ‘আমি আমি প্রায় ৩২ শতক জমিতে ঢ্যাঁড়শ চাষ করেছি। এ পর্যন্ত প্রায় ৩ লক্ষাধিক টাকার ঢ্যাঁড়শ বিক্রি করেছি। কৃষি অফিস থেকে কোনো সহযোগিতা পাওয়া তো দূরের কথা, একটি বারের জন্য খবরও নেয়নি।’

দক্ষিণ মঘাদিয়া ঘোনা এলাকার চাষি নুরুল হুদা বলেন, ‘এ বছর ৬০ শতক জমিতে ঢ্যাঁড়শ চাষ করেছি। প্রতি বছর এ সবজি চাষ করে থাকি। এভাবে প্রায় ২০ বছর ধরে চাষাবাদ করে যাচ্ছি। এবারও মোটামুটি ভালো দাম পাচ্ছি। ঢ্যাঁড়শ বিক্রির টাকায় বাড়ির পাশে কিছু জমি কিনেছি। একটি ছেলেকে বিদেশ পাঠিয়েছি।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় বলেন, ‘উপজেলায় প্রায় ৩৫ হেক্টর জমিতে ঢ্যাঁড়শের আবাদ হয়েছে। এবার ঢ্যাঁড়শের বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রতি হেক্টর জমিতে ২৫ মেট্রিক টন ঢ্যাঁড়শ উৎপাদন হয়ে থাকে। ঢ্যাঁড়শ চাষে সরকারিভাবে কাউকে প্রণোদনা দেওয়া হয় না।’

দৈনিক বগুড়া