
সংগৃহীত
ড্যানিয়েল পিয়ার্সের বয়স মাত্র কয়েক দিন। কিন্তু অবাক করা বিষয় হলো, তাকে বলা হচ্ছে বিশ্বের ‘সবচেয়ে প্রবীণ নবজাতক’। বয়স ৩১ বছর, অথচ সদ্য পৃথিবীর আলো দেখেছে!
ঘটনাটি ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও অঙ্গরাজ্যে। রাজ্যের বাসিন্দা লিন্ডসে পিয়ার্স ও তার স্বামী সম্প্রতি একটি ভ্রূণ দত্তক নিয়েছিলেন। তবে, এটি সাধারণ কোনো ভ্রূণ নয়। প্রায় ৩১ বছর ধরে এটি হিমায়িত অবস্থায় সংরক্ষিত ছিল।
ঘটনার শুরু ১৯৯৪ সালে। লিডিয়া আর্চার্ড নামের এক মার্কিন নারী ও তার তৎকালীন স্বামীর শুক্রাণু এবং ডিম্বাণু থেকে তৈরি করা হয় ৪টি ভ্রূণ। পরে আইভিএফ (ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন) পদ্ধতিতে একটি ভ্রূণ থেকে জন্ম হয় তাদের কন্যাসন্তানের। মেয়েটির বয়স এখন ৩১ বছর। বাকি ৩টি ভ্রূণ সেই সময় থেকেই হিমায়িত অবস্থায় রাখা হয়।
জানা গেছে, লিডিয়ার সঙ্গে তার স্বামীর বিবাহবিচ্ছেদের পর আইনি প্রক্রিয়ায় ভ্রূণগুলোর অধিকার পান তিনি। সেই ভ্রূণগুলো সংরক্ষিত ছিল ওহাইওর একটি ফার্টিলিটি ক্লিনিকে। সংরক্ষণ তাপমাত্রা ছিল মাইনাস ১৯৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। প্রতি বছর এই ভ্রূণ সংরক্ষণের খরচ পড়ত প্রায় হাজার ডলার।
যুক্তরাষ্ট্রে আইন অনুযায়ী, ভ্রূণও দত্তক নেওয়া যায়। তাই সন্তান জন্মদানের বয়স পেরিয়ে যাওয়া লিডিয়া সিদ্ধান্ত নেন, নিঃসন্তান কোনো দম্পতির হাতে এই ভ্রূণগুলো তুলে দেবেন।
এরই প্রেক্ষিতে যোগাযোগ হয় লিন্ডসে পিয়ার্স ও তার স্বামীর সঙ্গে। তারা ভ্রূণটি দত্তক নেন এবং লিন্ডসের গর্ভে প্রতিস্থাপন করে। কিছুদিন পরই জন্ম নেয় থাডিউস ড্যানিয়েল পিয়ার্স।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এত দীর্ঘ সময় ধরে হিমায়িত অবস্থায় থাকার পর সফলভাবে একটি ভ্রূণের জন্মগ্রহণ চিকিৎসাবিজ্ঞানে এক যুগান্তকারী ঘটনা। মা লিন্ডসে ও শিশু ড্যানিয়েল দুজনেই এখন সম্পূর্ণ সুস্থ।
ড্যানিয়েলের জন্মে আবেগে আপ্লুত লিডিয়া বলেন, ড্যানিয়েল দেখতে অনেকটাই আমার মেয়ের মতো, যার জন্ম হয়েছিল ১৯৯৪ সালে। সেই মেয়ের বয়স এখন ৩১, আর ঠিক ৩১ বছর পর তারই ‘ভ্রাতৃজ’ জন্মাল একেবারে সদ্যোজাত শিশুর মতো!
তবে প্রশ্ন উঠছে, ‘ভ্রূণের আসল বয়স কোনটি ধরা হবে? ভ্রূণ তৈরির সময়, নাকি জন্মের সময়?’
সূত্র: কালবেলা